২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

অ ভি ম ত : মাছ চাষে অভূতপূর্ব অগ্রগতি

-

মাছচাষে গত চার যুগে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে অভূতপূর্ব সাফল্য এসেছে। এর বদৌলতে ওই অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষের জীবন-জীবিকার সংস্থান হয়েছে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে খুলনাসহ দক্ষিণাঞ্চল থেকে চিংড়ি ও সাদা মাছ রফতানি হয়েছে প্রায় ২৯ হাজার ৬ দশমিক ৮২১ টন। যার বাজারমূল্য প্রায় দুই হাজার ২৯০ কোটি টাকা। এর মধ্যে গলদা, বাগদা ও অন্যান্য চিংড়ি রফতানি হয়েছে ২৪ হাজার ৪১৩ টন, আয় হয়েছে দুই হাজার ১৭১ কোটি ১৭ লাখ টাকার বৈদেশিক মুদ্রা। হিমায়িত কার্প জাতীয় মিঠা পানির মাছ ও হিমায়িত পারশে, ক্যাট ফিশ, শুঁটকি ও অন্যান্য সাদা মাছ রফতানি হয়েছে আরো প্রায় ১১৮ কোটি টাকার।
এর আগে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে চিংড়ি ও সাদা মাছ রফতানি হয় ২৯ হাজার ২০০ টন। বাজারমূল্য ছিল প্রায় দুই হাজার ৪৮৮ কোটি টাকা। ২০১১-১২ অর্থবছর থেকে ২০১৬-১৭ অর্থবছর পর্যন্ত এ অঞ্চল থেকে বছরে গড়ে দুই হাজার ৫২৪ কোটি টাকার মাছ বিদেশে রফতানি হতো। এরপর আন্তর্জাতিক বাজারে গলদা চিংড়ির দরপতন ও বিদেশে ইলিশ সরবরাহ বন্ধ হওয়ায় রফতানির হার কিছুটা কমেছে। তবে মিঠা পানির মাছচাষ বাড়ায় এ প্রজাতির মাছ রফতানির নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলে হেক্টর প্রতি মাছ উৎপাদন দ্বিগুণ করার পদক্ষেপ নিয়েছে মৎস্য অধিদফতর। এ উদ্দেশ্যে মাঠপর্যায়ে চাষিদের প্রশিক্ষণসহ নানা পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। দেশের দক্ষিণাঞ্চলে বাণিজ্যিকভাবে চিংড়ি ও বিভিন্ন প্রজাতির মাছের চাষ বেড়ে যাওয়ায় তা দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণের পাশাপাশি বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে সহায়তা করছে। গত অর্থবছরে খুলনা জেলায় প্রায় ৬৪ হাজার ৫০০ টন সাদা মাছ উৎপাদন হয়েছে, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় প্রায় এক হাজার ১০০ টন বেশি। এতে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে খুলনায় উন্মুুক্ত খাল ও সংযুক্ত বিলগুলোতে হেক্টর প্রতি মাছের উৎপাদন ৭০০ কেজি। এ পরিমাণ দ্বিগুণেরও বেশি অর্থাৎ এক হাজার ৫০০ কেজিতে উন্নীত করার চেষ্টা চলছে। এটি সফল হলে মাছ রফতানি করে বেশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব। বাড়বে কর্মসংস্থানের সুযোগ।
মাছে-ভাতে বাঙালি ঐতিহ্য পুনরুদ্ধারে মাছের ক্ষেত্রে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন নিঃসন্দেহে একটি ইতিবাচক ঘটনা। রফতানি বাণিজ্যে প্রতি বছরই মাছের হিস্যা সন্তোষজনক হারে বাড়ছে। আর চলতি অর্থবছরে মৎস্য খাতের আয় দেশের মোট কৃষিজ আয়ের ২৫ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। মাছের উৎপাদন বাড়াতে বেসরকারি খাতকেও উৎসাহিত করা হচ্ছে। দেশে ১৪ লাখ নারীসহ প্রায় দুই কোটি মানুষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মৎস্য খাতের ওপর নির্ভর করে জীবিকা নির্বাহ করছে। এ খাতে প্রতি বছর ছয় লক্ষাধিক লোকের নতুন কর্মসংস্থান হচ্ছে। ইতঃপূর্বে জাতিসঙ্ঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার প্রতিবেদনে মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশের অগ্রগতির প্রশংসা করা হয়েছে। এখন দেশে পর্যাপ্ত হিমাগার নির্মাণের পাশাপাশি মাছচাষিদের সহজ শর্তে ঋণদানের কথা ভাবতে হবে। মাছ-গোশত আমাদের রফতানি আয়েরও বড় উৎস হতে পারে। রফতানি তালিকায় চিংড়ি এসেছে বহু আগেই, যাকে আমরা বলি সাদা সোনা। উৎপাদন বাড়লে গতি পেতে পারে ইলিশ রফতানিও। দেশীয় বাজার মূলত মিঠা পানির মাছনির্ভর। কিন্তু বিদেশে চাহিদা রয়েছে সামুদ্রিক মাছের। আমাদের সীমানায় এখন যোগ হয়েছে বিশাল সমুদ্রাঞ্চল, যেখানে প্রচুর প্রাকৃতিক সম্পদ আছে, বিশেষ করে মৎস্যসম্পদ। এ মৎস্যসম্পদ আহরণ করা গেলে তা দেশে পুষ্টির চাহিদা পূরণের পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনেও বড় অবদান রাখতে পারবে। হ
লেখক : সহসভাপতি, এফবিসিসিআই; এমডি
ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড লিমিটেড


আরো সংবাদ



premium cement
৪৬তম বিএসএস প্রিলি পরীক্ষা : শুরুতেই স্বপ্ন ভঙ্গ ৮১ শিক্ষার্থীর মরুর উষ্ণতায় ক্ষতির মুখে কৃষি ছেলেদের কারণে বিপাকে মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির দুই বিভাগে বৃষ্টি হতে পারে ফ্রান্স, ব্রাজিল ও প্যারাগুয়ে সফরে যাচ্ছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ড সফরকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে মাইলফলক বললেন প্রধানমন্ত্রী লালমনিরহাটে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশী যুবক নিহত এখনো শেষ হয়নি বিতর্কিত আউটের রেশ, ব্যতিক্রমী প্রতিবাদ মুশফিকের ‘ফ্রি ভিসার গল্প’ আর শূন্য হাতে ফেরা লাখো শ্রমিক নোয়াখালীতে প্রবাসীর স্ত্রীর ব্যক্তিগত ছবি দেখিয়ে চাঁদা আদায় দেশের উন্নয়নে পাকিস্তান প্রশংসা করে, অথচ বিরোধী দল দেখে না : কাদের

সকল