১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ০১ জিলকদ ১৪৪৫
`


গণফোরামের সঙ্কট আরো ঘণীভূত

- ফাইল ছবি

গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেনের গঠিত আহ্বায়ক কমিটি মানছেন না দলের একটি পক্ষ। তারা মনে করছেন শীর্ষ নেতাদের সাথে আলোচনা ছাড়াই কমিটি স্থগিত করা হয়েছে। এ জন্য আগের পদই ব্যবহার করছেন তারা। তবে এ ঘটনাকে শৃঙ্খলাবিরোধী বলে মনে করছেন দলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ।

জানা যায়, গণফোরামে দীর্ঘ দিন থেকে নেতাদের মধ্যে অন্তঃকলহ চলছে। পদ-পদবি, কমিটির সভা না করাসহ নানা কারণে এ সঙ্কট তৈরি হয়েছে। এ কারণে সম্প্রতি সাধারণ সম্পাদক রেজা কিবরিয়ার প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করে দলের একটি পক্ষ।

এর কিছুদিন পর গত ৩ মার্চ দলের চারজনকে বহিষ্কার করে আরেকটি পক্ষ। এ নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে দলের ভাবমর্যাদা রক্ষায় গত ৪ মার্চ ড. কামাল হোসেন দলের কেন্দ্রীয় কমিটি ভেঙে দেন। এ সময় একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। তবে আহ্বায়ক-সদস্যসচিব পদ ব্যবহার না করে ড. কামাল হোসেনকে সভাপতি এবং ড. রেজা কিবরিয়াকে আবারো সাধারণ সম্পাদক রেখে কমিটি গঠন করা হয়।
কিন্তু এ আহ্বায়ক কমিটি গঠনের বিষয়টি মানতে রাজি নন দুই নির্বাহী সভাপতি ড. আবু সাইয়িদ ও অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফা মহসীন মন্টুসহ কিছু নেতা। গতকাল তারা গণফোরাম কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক আলোচনা সভার আয়োজন করেন। তবে সভায় ড. কামাল হোসেন ও ড. রেজা কিবরিয়া উপস্থিত ছিলেন না। ড. আবু সাইয়িদ এতে সভাপতিত্ব করেন এবং অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী ছিলেন প্রধান বক্তা। পরে তারা আগের পদপদবি ব্যবহার করেই গণমাধ্যমে বিবৃতি দেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী নয়া দিগন্তকে বলেন, যেভাবে কমিটি ভেঙে দেয়া হয়েছে সেটা ঠিক হয়নি। কমিটি ভাঙার আগে আমাদের সাথে আলোচনা করা হয়নি। তা ছাড়া কমিটি ভাঙা কোনো সমাধান নয়। সাধারণ সম্পাদক ড. রেজা কিবরিয়া কমিটি গঠনের পর থেকে গত ১০ মাসে কেন্দ্রীয় কমিটি, স্থায়ী পরিষদ, সম্পাদক পরিষদের একটি সভাও করেননি। আমরা চেয়েছি সভা যেন করা হয়। কিন্তু না করে কমিটি ভেঙে দেয়া হলো। এটা ড. কামাল হোসেন নিজে করেছেন নাকি তাকে দিয়ে সাধারণ সম্পাদক করিয়েছেন তা আমাদের কাছে বোধগম্য নয়। এ জন্য আমরা আগের পদবিই ব্যবহার করছি। তিনি বলেন, ড. কামাল হোসেন আমাদের অভিভাবক। তিনি যদি সবাইকে ধমক দিয়ে বলেন কাজ কর, তাহলে সবাই মতভেদ ভুলে কাজ করবেন। এ জন্য সবাইকে নিয়ে বসে আলোচনা করে সমস্যার সমাধান করা উচিত।

এ ব্যাপারে গণফোরামের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ নয়া দিগন্তকে বলেন, দলের সভাপতি ড. কামাল হোসেন আহ্বায়ক কমিটি গঠনের পর এভাবে আগের পদপদবি ব্যবহার করে সভা করা দলের শৃঙ্খলাবিরোধী। তাদের এ ধরনের কাজকর্মই প্রমাণ করে ড. কামাল হোসেনের কেন্দ্রীয় কমিটি ভেঙে দেয়া যথার্থ হয়েছে।

আলোচনা সভা : ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে গণফোরাম কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গতকাল এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন নির্বাহী সভাপতি ড. আবু সাইয়িদ। প্রধান অতিথি ছিলেন গণফোরামের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা মোস্তাফা মহসীন মন্টু। প্রধান বক্তা ছিলেন, নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী।

এ ছাড়া আরো উপস্থিত ছিলেন, প্রেসিডিয়াম সদস্য জগলুল আফ্রিক, সাংগঠনিক সম্পাদক লতিফুল বারি হামিম, স্থায়ী কমিটির সদস্য আসাদুজ্জামান বীর বিক্রম, প্রচার সম্পাদক খান সিদ্দিকুর রহমান, যুব সম্পাদক মো: নাসির হোসেন, যুবনেতা কাজী হাবিব, শ্রমিক নেতা রফিকুল ইসলাম পথিক, যুবনেতা রওশন ইয়াজদানি, যুবনেতা মাহমুদৌল্লাহ মধু, ছাত্রনেতা সানজিদ রহমান শুভ প্রমুখ।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল