২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

তারা ডাকাতি করেছে

তারা ডাকাতি করে নিয়ে গেছে - ছবি : সংগৃহীত

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের একটি কলঙ্কিত অধ্যায় বলে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, জবরদখলদারী সরকার বাংলাদেশের জনগণের অধিকার হরণ করে নিয়ে গেছে। তারা সংবিধান লঙ্ঘন করেছে। জনগণের রায়কে তারা ডাকাতি করে নিয়ে গেছে। তিনি আরো বলেন, সারা দেশেই সবার চোখে-মুখে শোকের চিত্র ফুটে উঠেছে। এর কারণ জনগণ তাদের অধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি। গতকাল সোমবার দুপুরে সিলেটের হজরত শাহজালাল (রহ:) মাজার জিয়ারত শেষে এমন মন্তব্য করেন বিএনপি মহাসচিব। এ সময় উপজেলা নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, উপজেলা নির্বাচন বা স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলো সরকারের পরিবর্তন ঘটায় না। তাই এসব নির্বাচন খুব একটা মুখ্য ব্যাপার না। জাতীয় নির্বাচন বাতিল করার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা আমাদের ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে বারবার বলছি যে, গত জাতীয় নির্বাচন বাতিল করতে হবে এবং নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিয়ে জনগণের রায়ের মাধ্যমে একটি প্রতিনিধিত্বশীল সরকার গঠন করতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে নির্বাচন হতে হবে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য এবং সব দলের অংশগ্রহণে।

নির্বাচন কমিশনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমানে যে নির্বাচন কমিশন আছে সেই কমিশনের অধীনেই জাতীয় নির্বাচন বাংলাদেশসহ গোটা পৃথিবীই দেখেছে যে কতোটা অযোগ্য এ নির্বাচন কমিশন। তাদের কোনো যোগ্যতাই নেই নির্বাচনকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করার। এ নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন কী রকম হবেÑ এ ধরনের প্রশ্নেরই এখন আর কোনো প্রয়োজনই নেই।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের ঐক্যফ্রন্ট অটুট আছে। রাজনৈতিক দলগুলোর পরস্পরের কিছুটা অমিল থাকতেই পারে, এটিই স্বাভাবিক। কিন্তু আমাদের ঐক্যফ্রন্টের মধ্যে কোনো ঝামেলা নেই। এর আগে সোমবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে বাংলাদেশ বিমানের একটি নিয়মিত ফ্লাইটে করে তিনি কয়েকজন ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের সাথে নিয়ে সিলেট এসে পৌঁছেন। তার সাথে সিলেট এসেছেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী, মহাসচিব হাবিবুর রহমান বীর প্রতীক, গণফোরামের কার্যকরী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু, জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রবসহ শীর্ষ কয়েকজন নেতা।

বালাগঞ্জে নিহত সুহেলের বাড়িতে ফখরুল
ওসমানীনগর (সিলেট) : সংবাদদাতা জানান, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির মহাসচিব ও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘ষোলো কোটি মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে সুহেলকে প্রাণ দিতে হয়েছে। সুহেল আজ একা নয়। সুহেলের রেখে যাওয়া অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করার জন্য আজ দেশের কোটি কোটি মানুষ এক কাতারে এসেছে। সুহেল গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য জীবন দিয়েছেন। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। আ’লীগ কতটা দুর্বল ও দেউলিয়া তার প্রমাণ ৩০ তারিখ পুলিশ, র্যাব ব্যবহার করে তারা ক্ষমতায় থেকেছে। আমরা ধিক্কার জানাই তাদের এই স্বৈরাচারী পন্থাকে। শেখ মুজিব গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন করেছেন, আর আজ তার মেয়ে গণতন্ত্র হত্যা করেছে। তাই দেশে যত রাজনৈতিক দল আছে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনতে স্বৈরাচার পতন করতে হবে। তিনি আরো বলেন, আ’লীগ ক্ষমতার জন্য বেসামাল হয়েছে। তারা নৌকায় ভোট না দেয়ায় নোয়াখালীর সুবর্ণচরে মহিলাকে গণধর্ষণ করেছে। মানুষ আজ তাদের অত্যাচারে গুমরে কাঁদছে। নির্যাতিত প্রতিটি মানুষের চোখের পানির ফোঁটা স্বৈরাচারী আওয়ামী অবস্থান ভেঙে খান খান করে দেবে।

তিনি বিএনপির সাবেক নেতা নিখোঁজ ইলিয়াছ আলীর কথা উল্লেখ করে বলেন, আ’লীগ অবৈধভাবে ক্ষমতায় এসে তাদের স্বৈরাচারী মনোভাব পাকাপোক্ত করতে এ অঞ্চলের জনপ্রিয় নেতা ইলিয়াছ আলীকে গুম করেছে। ৩০ তারিখ তারা আবার ছাত্রদল নেতা সুহেলকে খুন করেছে। বালাগঞ্জের মানুষ প্রতিবাদ করতে জানে। দেশের সব মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য শহীদ সুহেলের ত্যাগকে কাজে লাগিয়ে সামনে আন্দোলনে নামার প্রস্তুতির অংশ হিসেবে আমরা আজ বালাগঞ্জে এসেছি।

তিনি গতকাল ১৪ জানুয়ারি সোমবার বেলা সাড়ে ৩টায় সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম গৌরীপুর ইউনিয়নের নলজুর গ্রামে বালাগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক (গেল ৩০ ডিসেম্বর ভোটকেন্দ্রে গুলিবিদ্ধ নিহত) সায়েম আহমদ সুহেলের বাড়িতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের কেন্দ্রীয় নেতা আ স ম আবদুর রব, বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, মোস্তফা মহসিন মন্টু, সুব্রত চৌধুরীসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেত্রীদের নিয়ে কবর জিয়ারত, সুহেলের মা-বাবার সাথে সাক্ষাৎ পরবর্তী এক শোকসভায় ওপরের কথা বলেন।

বালাগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি কামরুল হুদা জায়গিরদারের সভাপতিত্বে ও বিএনপি নেতা আবদুল আহাদ জামালের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠিত শোকসভায় বক্তব্য রাখেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের কেন্দ্রীয় নেতা জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু, নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, এম ইলিয়াছ আলীর ছোট ভাই জেলা বিএনপির সহসভাপতি এম আছকির আলী, নিহত সুহেলের চাচাতো ভাই সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা লুৎফুর রহমান। 

বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘সেলফি তুলে স্বৈরাচার হাসিনার সরকার হটানো যাবে না। শুধু সেলফি তুললে হাজার বছরেও অধিকার আদায় করতে পারবেন না। আওয়ামী লীগ ভোটকেন্দ্রে গুলি করে মানুষ মেরে ক্ষমতায় এসেছে। আপনারা যদি ধৈর্য ধরে জনগণকে সাথে নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেন, তাহলে মুক্তি পাবেন। আমি আজ সন্তানহারা মা-বাবার কাছে এসেছি। ইলিয়াছ আলীর মায়ের কাছেও গিয়েছিলাম। তিনি আমার জন্য দোয়া করেছেন। কী দোষ ছিল এসব মায়ের। আমার মা-বাবা আজ বেঁচে নেই। তারা বেঁচে থাকলে ধৈর্য ধরতে পারতেন না। এ সভা থেকে বাড়িতে গিয়ে নীরবে চিন্তা করুন। যখন নিজেদের তৈরি করতে পারবেন তখন আর খালেদা জিয়াকে জেলে থাকতে হবে না। এক মুহূর্তও স্বৈরাচার হাসিনা তখন ক্ষমতায় থাকতে পারবে না।

নিহতের বড় ভাই সাবেক চেয়ারম্যান লুৎফুর রহমান বলেন, ‘এলাকায় সমাজসেবায় তাদের পরিবারের অনেক অবদান রয়েছে। সমাজে আমাদের মোকাবেলা করতে না পেরে নির্বাচনী কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীরা গুলি করে আমার ছোট ভাই সায়েম আহমদ সুহেলকে হত্যা করেছে। আমরা এ হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।’


আরো সংবাদ



premium cement
বিতর্কিত ক্যাচের ছবির ক্যাপশনে মুশফিক লিখেছেন ‘মাশা আল্লাহ’ উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় ৭৩ জনকে বহিষ্কার করলো বিএনপি মিরসরাইয়ে অবৈধ সেগুনকাঠসহ কাভার্ডভ্যান জব্দ মানিকগঞ্জে আগুনে পুড়ে যাওয়া মলিরানীর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে বিশ্বরেকর্ড ইন্দোনেশিয়ার নারী ক্রিকেটার রোহমালিয়ার ‘এখন আমি কী নিয়ে বাঁচব’ যদি বন্ধু হও, সীমান্তে অহরহ গুলি কেন : ভারতকে ফারুক সাহারা মরুভূমির গরমের মতো অনুভূত হচ্ছে : সরকারকে দায়ী করে রিজভী মধুখালীর পঞ্চপল্লীতে ২ ভাইকে হত্যার প্রতিবাদে সমাবেশ শ্রীলঙ্কাভিত্তিক এয়ারলাইন্স ফিটসএয়ারের ঢাকা-কলম্বো সরাসরি ফ্লাইট চালু রোহিঙ্গা ইস্যুতে একসাথে কাজ করবে ঢাকা-ব্যাংকক : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

সকল