মানবতাবিরোধী অপরাধ: আ’লীগ নেতাসহ দুজনের রায় কাল
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ০৪ নভেম্বর ২০১৮, ১১:৫২
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় হবিগঞ্জের লাখাই থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ লিয়াকত আলীসহ দুইজনের বিরুদ্ধে আগামীকাল রায় ঘোষণা করবেন ট্রাইব্যুনাল।
আজ রোববার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল রায়ের জন্য এই দিন ধার্য করেন।
মামলার আরেক আসামি হলেন কিশোরগঞ্জের আমিনুল ইসলাম ওরফে রজব আলী। তারা দুজনই পলাতক রয়েছেন।
ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর রানা দাস গুপ্ত ও রেজিয়া সুলতানা চমন। আসামিপক্ষে ছিলেন গাজী এমএইচ তামিম।
পরে প্রসিকিউটর রেজিয়া সুলতানা চমন জানান, রাষ্ট্রপক্ষ থেকে এ দুই আসামির সর্বোচ্চ সাজা চেয়েছেন তারা।
দুই আসামির বিরুদ্ধে গণহত্যা, লুটপাটসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের সাতটি অভিযোগে বিচার কাজ শেষ হয়।
তদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী জানা যায়, ২০০৩ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত লিয়াকত আলী হবিগঞ্জের লাখাই থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সভাপতি থাকা অবস্থাতেই যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ২০১০ সালে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়।
এরপর ২০১৬ সালের ১৮ মে এই দুজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে ট্রাইব্যুনাল। সেই থেকে তারা পলাতক রয়েছেন।
এ দু’জনের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের সময় হবিগঞ্জের লাখাই থানা, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর থানা ও কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম থানা এলাকায় গণহত্যা, হত্যা, অপহরণ, আটক, নির্যাতন ও লুটপাটের সাতটি অপরাধের অভিযোগ আনা হয়।
আরো পড়ুন: মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত কুদ্দুসের ৬ মাসের জামিন
নিজস্ব প্রতিবেদক, ০২ আগস্ট ২০১৮
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ২০ বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি নোয়াখালীর সুধারামের আব্দুল কুদ্দুসকে ছয় মাসের জামিন দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
একই সঙ্গে, জামিনের মেয়াদ ছয় মাস পূর্ণ হলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) একটি বোর্ড বসিয়ে তার স্বাস্থ্যগত তথ্য দেয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে চার সদস্যের আপিল বিভাগের বেঞ্চ আব্দুল কুদ্দুসের ক্যান্সার রয়েছে সংক্রান্ত বিষয়ে মেডিকেল প্রতিবেদন বিবেচনায় নিয়ে এই আদেশ দেন।
আসামি আব্দুল কুদ্দুসের আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন এ বিষয়ে নয়া দিগন্তকে বলেন, পিজি হাসপাতালের রিপোর্টে বলা হয়েছে আবদুল কুদ্দুস ফুসফুস ক্যান্সারে আক্রান্ত। আমি বলেছি, ফুসফুস আক্রান্ত রোগী দীর্ঘদিন বাঁচতে নাও পারে। সে যাতে পরিবারের সাথে থেকে সেবাশুশ্রূষা পায় সেজন্য জামিন প্রয়োজন। আদালত মেডিকেল রিপোর্ট এবং আইনজীবী যুক্তি আমলে নিয়ে জামিন দেন।
তিনি বলেন, সর্বোচ্চ আদালত থেকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় দণ্ড নিয়ে এটাই প্রথম জামিনের আদেশ। এর আগে আর কোনো অপরাধীর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ থেকে জামিন পায়নি কোনো আসামি। তবে ট্রাইব্যুনাল থেকে বিচারপর্ব শুরুর আগে অসুস্থতার বিবেচনায় আব্দুল আলিম ও কায়সার কামালকে জামিন দিয়েছিল বলে আদালতে জানান খন্দকার মাহবুব হোসেন।
আদালতে আজ আসামি কুদ্দুসের জামিনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম ও মাসুদি রানা। অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের আব্দুল কুদ্দুসের ক্যান্সার বিষয়টি উল্লেখ থাকায় এই রিপোর্ট বিবেচনা করে সর্বোচ্চ আদালত তার এই জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দিয়েছেন।
গত ২৯ জুলাই মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ২০ বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত ক্যান্সারে আক্রান্ত নোয়াখালীর সুধারামের আব্দুল কুদ্দুসকে কারাগার থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে স্থানান্তরের নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ।
একইসাথে, আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে ওই হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট বিভাগের চিকিৎসকদের আব্দুল কুদ্দুসের অসুস্থতা নিয়ে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়। নির্দেশনা অনুযায়ী আজ প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। এর পর ক্যান্সার রয়েছে বিষয়টি আমলে নিয়ে জামিন আদেশ দিলেন আদালত।
আসামির জামিন আবেদনের বিষয়ে তাজুল ইসলাম বলেন, ওনার (আসামি) বয়স ৮৭ বছর। চার ধরনের ক্যান্সার, হুইল চেয়ার ও অন্যের সাহায্য ছাড়া চলতে-ফিরতে পারেন না। মানবিক কারণে জামিন চাওয়া হয়েছিল।
গত ১৩ মার্চ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং আব্দুল কুদ্দুসকে ২০ বছরের কারাদণ্ড দিয়ে রায় ঘোষণা করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
তাদের মধ্যে আমির আলী, মো: জয়নাল আবদিন ও আবুল কালাম ওরফে এ কে এম মনসুরের মৃত্যুদণ্ডের রায় হয়েছে এবং আসামি মো: আব্দুল কুদ্দুসের ২০ বছরের কারাদণ্ড হয়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা