১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১, ০২ জিলকদ ১৪৪৫
`


নিউজিল্যান্ডে বর্ণবাদের বিরুদ্ধে হাজারো মানুষের পদযাত্রা

-

নিউজিল্যান্ডের দুই মসজিদে সন্ত্রাসী হামলায় ৫০ মুসল্লির নিহতের ঘটনায় বর্ণবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে দেশটির মানুষ। স্থানীয় সময় রোববার অকল্যান্ডের রাস্তায় বর্ণবাদবিরোধী পদযাত্রায় শামিল হন হাজারো মানুষ। এ সময় তারা মসজিদে সন্ত্রাসী হামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করেন। এ দিন স্ক্রাইস্টচার্চ মসজিদ সংলগ্ন নর্থ হাগলে পার্ক এলাকায়ও একই রকমের পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়।
২০১৯ সালের ১৫ মার্চ ঘোষণা অনুযায়ী, নিউজিল্যান্ডের দুই মসজিদে গুলি চালিয়ে ৫০ মুসল্লিকে হত্যা করে উগ্র মুসলিমবিদ্বেষী অস্ট্রেলীয় নাগরিক ব্রেন্টন ট্যারান্ট। হামলার আগে অনলাইনে ১৬ হাজার ৫০০ শব্দের একটি ইশতেহারে নৃশংস এ হামলার পেছনে নিজের বক্তব্য তুলে ধরে খুনি ব্রেন্টন ট্যারান্ট। সেখানে উঠে আসে মুসলিমবিদ্বেষ, অভিবাসী বিদ্বেষ ও ‘শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদের’ মতো বিষয়গুলো। মুসলমানদের উসমানীয় খিলাফতের বিরুদ্ধে তৎকালীন ইউরোপীয় খ্রিষ্টানদের বিজয়ের কথাও উল্লেখ করেছে সে। তবে বর্ণবাদী বিদ্বেষ নিউজিল্যান্ডের যে স্থানটিতে বন্দুকের গুলি হয়ে আছড়ে পড়েছিল, সেই ক্রাইস্টচার্চে সব সময়ই ধ্বনিত হয়ে আসছে বিশ্বমানবের ঐক্যতান। ভারতীয় উপমহাদেশ আর মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের মানুষ সেখানে অভিবাসী হয়েছে। স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায় তাদের জড়িয়ে নিয়েছে নিজেদের বুকে। বিশ্বমানুষের এই সম্মিলনের প্রতীক হয়েই সেখানে দাঁড়িয়ে আছে হামলার শিকার হওয়া নূর মসজিদ। ওই হামলার প্রতিবাদে রোববার যৌথভাবে পদযাত্রার আয়োজন করে লাভ অটিয়ারোয়া (মাওরি ভাষায় নিউজিল্যান্ডের আদি নাম) এবং হেট রেসিজম নামের দুইটি সংগঠন। অকল্যান্ডের অটিয়া স্কয়ার থেকে শুরু হয়ে শহর প্রদক্ষিণ করে ভিক্টোরিয়া পার্কে এসে জড়ো হন পদযাত্রায় অংশ নেয়া ব্যক্তিরা। পরে তারা দুই মিনিটের নীরবতা পালন করেন। নীরবতা পালনের আগে তার নিহত ৫০ জনের সবার নাম উচ্চারণ করেন।
পদযাত্রায় অংশ নিয়েছেন রিটা মারা নামের এক নারী। তিনি বলেন, এই পদযাত্রা হচ্ছে আসলে একটি সম্মিলন। তার ভাষায়, ‘বর্ণবাদকে সংজ্ঞায়িত করা কঠিন। আমাদের জন্মের আগে থেকেই এসব ঘটে আসছে; যা আজ মানুষে মানুষে পার্থক্য তৈরি করছে।’
জাতীয় স্মরণসভা শুক্রবার
এ দিকে এএফপি জানায়, ক্রাইস্টচার্চে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আগামী শুক্রবার তাদেরকে জাতীয় পর্যায়ে স্মরণ করবে নিউজিল্যান্ড। গতকাল রোববার এ ঘোষণা দিয়েছে প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আরডার্নের সরকার। নিহতদের স্মরণে ২৯ মার্চ স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে ক্রাইস্টচার্চে। প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা আরডার্ন এক বিবৃতিতে বলেছেন, সন্ত্রাসী হামলায় নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ক্যান্টাব্রিয়ানস (ক্রাইস্টচার্চের অধিবাসীরা), নিউজিল্যান্ডারস ও সারা বিশ্বের সব মানুষকে একত্রিত হওয়ার জন্য একটি সুযোগ জাতীয় স্মরণসভা।
তিনি বলেছেন, অপ্রত্যাশিত সন্ত্রাসী হামলার পর থেকে পুরো দেশে বেদনা ও ভালোবাসায় ভরে গেছে। এ অবস্থায় স্মরণসভা আয়োজন করা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে নিউজিল্যান্ডের অধিবাসীরা আরেকবার দেখাতে চায়, তারা সহানুভূতিশীল, সবাইকে নিয়ে এক সাথে থাকতে চায়, এখানকার সমাজ বৈচিত্র্যময়। আর আমরা সেই মূল্যবোধকে সুরক্ষিত রাখব। এই স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হবে ক্রাইস্টচার্চের সামনে হেগলি পার্কে।


আরো সংবাদ



premium cement