স্ট্রোকের চিকিৎসা
- ডা: এম শহীদুর রহমান
- ১৮ জুলাই ২০১৮, ০০:০০
হঠাৎ এক দিকের হাত-পা অবশ হয়ে গেলে, মুখ বাঁকা হলে অথবা কথা আটকে গেলে অথবা অজ্ঞান হয়ে গেলে আপনি অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন। চিকিৎসক তাকে পরীক্ষা করে দেখবেন তার সত্যিই স্ট্রোক হয়েছে কি না। অজ্ঞান হলে অবশ্যই হাসপাতালে ভর্তি করাবেন। আগেই বলা হয়েছে, স্ট্রোক রক্তক্ষরণ (হেমোরেজ) হয়ে এবং রক্ত জমাট বেঁধে (ইনফারকশন) দু’ভাবেই হতে পারে। হেমোরেজ ও ইনফারকশন দুটোর প্রাথমিক চিকিৎসা দুই ধরনের। কাজেই এটি বুঝতে হলে রোগীকে ব্রেনের সিটি স্ক্যান করা দরকার। রোগের কারণ ও উৎস বুঝতে আরও কিছু প্রাথমিক পরীক্ষা করা যেতে পারে। সেসব সাথে সাথে না করলেও চলবে। এগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো হার্টের জন্য ইসিজি ও ইকো কার্ডিওগ্রাফি, ক্যারোটিভ ডপলার, রক্তের চর্বি, ইলেকট্রোলাইট ইত্যাদি। তবে ব্লাড সুগার সাথে সাথেই দেখে নিতে হবে। সিটি স্ক্যানের মাধ্যমেই স্ট্রোক হেমোরেজ না ইনফারকশন বোঝা যাবে এবং সে অনুযায়ী চিকিৎসা করানোই ভালো। চিকিৎসা যত দ্রুত করা যায় ততই রোগীর জন্য মঙ্গল। মেডিক্যাল চিকিৎসা তাড়াতাড়ি শুরু করলে অনেক অনাকাক্সিত ব্রেন ড্যামেজ থেকে রোগীকে রক্ষা করা যায়।
ইনফারকশন হলে রক্ত জমাট বাঁধাবিরোধী ওষুধ যেমনÑ এসপিরিন বা এজাতীয় কিছু ওষুধ এবং ব্রেনে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করার জন্য কিছু ওষুধ দেয়া যেতে পারে। হেমোরেজ হলে তার উল্টো। রক্তক্ষরণ বন্ধের জন্য কিছু ওষুধ দেয়া হয়। ব্লাড প্রেসার যাতে বেশি কমানো না হয় সে দিকে খেয়াল রাখতে হয়। স্ট্রোক যেমনই হোক বা রোগী যে অবস্থায়ই থাকুক, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া রোগীকে কোনো ওষুধ খাওয়ানো ঠিক হবে না। তবে ওষুধের পাশাপাশি রোগীকে পর্যাপ্ত পুষ্টি ও পানীয় দিতে হবে। রোগী খেতে না পারলে অবশ্যই নল দিয়ে খাওয়াতে হবে। খুব সিরিয়াস বা অজ্ঞান রোগীদের শিরায় খাবার দিয়ে পুষ্টি প্রদান করা হয়। রক্তে লবণের সরবরাহ করতে হবে। হেমোরেজের রোগীদের অনেক ক্ষেত্রে ক্ষরিত রক্ত অপারেশনের মাধ্যমে বের করা যায় এবং রক্তক্ষরণ বন্ধও করা যায়। বড় ধরনের ইনফারকশন বা হেমোরেজ হলে মস্তিষ্ক ইডেমা (ফুলে গিয়ে) হয়ে আক্রান্ত স্নায়ুকোষগুলোও নষ্ট হতে পারে এবং রোগী খিঁচুনি হয়ে মারাও যেতে পারে। কাজেই যত দ্রুত সম্ভব ব্রেনের ইডেমা কমাতে হবে এবং খিঁচুনির ওষুধও দিতে হবে। মোট কথা, মেডিক্যাল চিকিৎসা কতটা দ্রুততার সাথে ও সার্থকতার সাথে সম্পন্ন করা হয়েছে, তার ওপর নির্ভর করে পরবর্তী সময়ে রোগীর নিউরোলজিক্যাল রিকভারি এবং পুনর্বাসন চিকিৎসা কতটা সুন্দর ও সফল হবে।
চিকিৎসা বিজ্ঞানের প্রভূত উন্নতির সাথে সাথে স্ট্রোকের মেডিক্যাল চিকিৎসারও যথেষ্ট উন্নতি হচ্ছে। স্ট্রোক ফিজিশিয়ানরা ইনফারকশন হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ওষুধের মাধ্যমে জমাট বাঁধা রক্ত গলিয়ে মস্তিষ্কের রক্ত চলাচল স্বাভাবিক করতে পারেন। এতে মস্তিষ্কের স্নায়ুকোষগুলো সমূহ ক্ষতি থেকে রক্ষা পায়। ইদানীং ইন্টারভেশনাল নিউরোলজিস্টরাও রক্ত চলাচল স্বাভাবিক করতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছেন। স্ট্রোক সার্জনরাও মস্তিষ্কের অস্বাভাবিক ও ক্ষরণপ্রবণ রক্তনালীগুলোকে অপারেশনের মাধ্যমে ঠিক করে দিতে পারেন। ভাসকুলার সার্জনরা সরু হয়ে যাওয়া ক্যারোটিড ধমনী অপারেশনের মাধ্যমে ঠিক করতে পারেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা