০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`


রংপুরে অনাগ্রহের ভোটে এরশাদপুত্র সাদ বিজয়ী

ফল প্রত্যাখ্যান বিএনপি প্রার্থীর
-

হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া রংপুর-৩ আসনের উপনির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি কম হলেও এরশাদপুত্র রাহগির আলমাহি এরশাদ (সাদ এরশাদ) ৫৮ হাজার ৮৭৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তিনি জাতীয় পার্টি ও মহাজোটের প্রার্থী ছিলেন। এখানে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হয়েছেন বিএনপির রিটা রহমান। তিনি পেয়েছেন ১৭ হাজার ৬৪৭ ভোট। এই নির্বাচনে মাত্র ২২ দশমিক ৮৬ ভাগ ভোট পড়েছে। এ দিকে বিএনপি প্রার্থী ভোট টেম্পারিং করার অভিযোগ তুলেছেন। অন্য দিকে এরশাদ ও রংপুরবাসীকে বিজয় উৎসর্গ করেছেন সাদ।
রংপুর-৩ শূন্য আসনে উপনির্বাচন নিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও রংপুর আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা জি এম সাহাতাব উদ্দিন জানান, মহাজোট মনোনীত প্রার্থী রাহগির আলমাহি এরশাদ (সাদ এরশাদ) ৫৮ হাজার ৮৭৮ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির রিটা রহমান পেয়েছেন ১৬ হাজার ৯৪৭ ভোট। এ ছাড়াও স্বতন্ত্র প্রার্থী এরশাদের ভাতিজা হোসেন মকবুল শাহরিয়ার আসিফ মোটরগাড়ি প্রতীক নিয়ে ১৪ হাজার ৯৮৪ ভোট, এনপিপির শফিউল আলম আম প্রতীক নিয়ে ৬১১ ভোট, গণফ্রন্টের কাজী মো: শহীদুল্লাহ মাছ প্রতীক নিয়ে এক হাজার ৬৬২ ভোট এবং খেলাফত মজলিসের তৌহিদুর রহমান মণ্ডল দেয়াল ঘড়ি প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ৯২৪ ভোট। এই নির্বাচনে ২২ দশমিক ৮৬ শতাংশ ভোট পড়েছে। বাতিল হয়েছে ১৫টি ভোট। রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য বলেছেন, ১৭৫টি ভোটকেন্দ্রে সুষ্ঠুভাবে ভোট সম্পন্ন হয়েছে। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
সরেজমিন দেখা গেছে, রংপুর-৩ আসনটি সদর উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন এবং রংপুর সিটি করপোরেশনের ২৫টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত। এর মধ্যে নগরীর ২৫টি ওয়ার্ডে ভোটকেন্দ্রগুলোতে ভোটারের উপস্থিতি ছিল একেবারেই কম। তবে ইউনিয়নগুলোতে কিছুটা ভোট বেশি পড়ায় ভোটের সংখ্যা বেড়েছে।
বিএনপি প্রার্থীর ফল প্রত্যাখ্যান : বিএনপি প্রার্থী রিটা রহমান নির্বাচনী ফল প্রত্যাখ্যান করেছেন। গতকাল সন্ধ্যায় তার বাসভবনে মহানগর ও জেলা বিএনপির যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ফল প্রত্যাখ্যান করে তিনি বলেন, নির্বাচনে ফল টেম্পারিং করা হয়েছে। যেখানে বিকেল ৪টায় ১২ শতাংশ ভোট পড়েছিল, বাকি এক ঘণ্টায় এত ভোট কী করে পড়লো- সে প্রশ্ন রাখেন তিনি। তিনি আরো বলেন, টেম্পারিংয়ের মাধ্যমে ধানের শীষের ভোট লাঙলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সভাপতি সাইফুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক রইস আহমেদ এবং মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম।
এর আগে তিনি অভিযোগ করে বলেছেন, প্রশাসন এবং কালো টাকার প্রভাবে ভোটের রাতে আমাদের নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি পুলিশ তল্লাশি চালিয়েছে। আমরা বলেছিলাম ভোটাররা ভোট দিতে আসবেন না, সেটিই প্রমাণিত হয়েছে। সরকার ও প্রশাসন প্রকাশ্যে প্রভাবিত হয়ে মহাজোট প্রার্থীকে বিজয়ী করার জন্য কাজ করেছেন। টেম্পারিং বিষয়টি জানিয়ে আমি রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে দুপুরেই অভিযোগ দায়ের করেছি। কিন্তু তারা কোনো ব্যবস্থা নেননি।
এ দিকে এরশাদের ভাতিজা স্বতন্ত্রপ্রার্থী হোসেন মাকবুল শাহরিয়ার আসিফ রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, এ নির্বাচনকে হাস্যকর করে ফেলা হয়েছে। রংপুরের নবাগত অত্যন্ত এক দুর্বল প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে। আমি এ নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করলাম।
এ দিকে অভিযোগ অস্বীকার করে রিটার্নিং কর্মকর্তা জি এম সাহাতাব উদ্দিন বলেছেন, বিএনপি প্রার্থীসহ যারাই অভিযোগ করেছেন, সাথে সাথেই ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। আমাদের বিরুদ্ধে ভোট টেম্পারিং ও প্রভাব বিস্তারের যে অভিযোগ করা হয়েছে, তা মিথ্যা ও বানোয়াট।
প্রসঙ্গত, গত ১৪ জুলাই রংপুর সদর-৩ আসনের এমপি জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বিরোধীদলীয় নেতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুর পর ১৬ জুলাই আসনটি শূন্য ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।


আরো সংবাদ



premium cement