বাংলাদেশে বিরোধী দল বিএনপি অভিযোগ করেছে, সরকারি দলের পক্ষে নির্বাচন প্রভাবিত করার কৌশল ঠিক করতে প্রশাসন ও পুলিশের কিছু ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা গত সপ্তাহে ঢাকায় গোপনে এক বৈঠক করেছেন।
এক সংবাদ সম্মেলনে, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী দাবি করেন, ওই ‘গোপন বৈঠক’ হয়েছে গত ২০ নভেম্বর রাতে ঢাকার অফিসার্স ক্লাবের চারতলার পেছনের দিকের একটি সম্মেলন কক্ষে।
পুলিশ ও প্রশাসনের কোনো কোনো কর্মকর্তা সেই বৈঠকে ছিলেন, তার একটি তালিকাও দেন জনাব রিজভী। ওই বৈঠকে কি সিদ্ধান্ত হয়েছে, তার একটি সার-সংক্ষেপও তুলে ধরেন তিনি।
একজন সচিবের বক্তব্য : যেসব কর্মকর্তার নাম রিজভী দিয়েছেন, তাদেরই একজন বেসামরিক বিমান চলাচল এবং পর্যটন সচিব মো: মহিবুল হক বিবিসিকে বলেন, তাদের ব্যাচ-মেটদের মেলামেশাকে রাজনৈতিক রঙ দেয়া হচ্ছে।
বিবিসির শাহনাজ পারভিনকে সচিব মহিবুল হক বলেন, ‘আমরা ব্যাচ-মেটরা মাঝেমধ্যে এক সাথে বসি, ভবিষ্যতেও বসবÑ এটাকে পলিটিসাইজ করার কিছু নেই।’
কী বলেছেন বিএনপি নেতা : বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ওই ‘গোপন বৈঠকে’ একজন ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, পুলিশ সূত্রের খবর অনুযায়ী ৩৩টি সিট নৌকার ‘কনফার্ম আছে’ এবং ৬০-৬৫টিতে কনটেস্ট হবে, বাকি আর কোনো সম্ভাবনা নেই। ‘কাজেই সাংঘাতিক কিছু করা ছাড়া এটি উৎরানো যাবে না।’
বিএনপি নেতা আরো দাবি করেন, ওই ‘গোপন বৈঠকে’ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়Ñ ‘নির্বাচন কমিশন থেকে বিএনপি-ফ্রন্টকে চরম অসহযোগিতা করা হবে, যতই চাপ দেয়া হোক প্রশাসনে হাত দেয়া যাবে না, ধরপাকড় বাড়ানো হবে, প্রার্থী গুম খুন করে এমন অবস্থা সৃষ্টি করা হবেÑ যাতে তারা নির্বাচন থেকে বেরিয়ে যেতে বাধ্য হয়।’
কোন সূত্রে তারা এই গোপন বৈঠকের কথা জেনেছেন, বিবিসির এই প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘সবসময় সোর্স তো বলা যায় না। বিভিন্ন সোর্স থেকে আমরা তা জানতে পেরেছি।’ তিনি বলেন, শুধু একটি বৈঠকই নয়, নির্বাচনকে সরকারের অনুকূলে প্রভাবিত করতে ‘দলবাজ’ কর্মকর্তারা বিভিন্ন জায়গায় দফায় দফায় বৈঠকে করছেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, নির্বাচন কমিশনের কাছে প্রশাসন এবং পুলিশের এ রকম কিছু কর্মকর্তার তালিকা তারা দিয়েছেন; কিন্তু কোনো পদক্ষেপ দেখতে পাচ্ছেন না।
বাংলাদেশে নির্বাচনের সময় বিরোধীদের পক্ষ থেকে প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়ে সবসময় প্রশ্ন ওঠে।
২০০৬ সালের নভেম্বর মাসে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ঢাকার কাছে উত্তরা এলাকায় বিএনপির একজন নেতার অফিসে ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তাদের এক বৈঠক নিয়ে সে সময় তুমুল হইচই হয়েছিল। খবরের সাথে পত্র-পত্রিকায় তখন ছবি ছাপা হয়েছিল, মুখ ঢেকে সরকারি কিছু কর্মকর্তা উত্তরা ওই বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসছেন।
আওয়ামী লীগ কী বলছে : অফিসার্স ক্লাবে কয়েকজন কর্মকর্তার ‘গোপন বৈঠকের’ অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ।
‘বিএনপি একটি মিথ্যাচারী দল। তাদের এসব মিথ্যাচারকে গুরুত্ব দেয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই।’
‘অতীতেও তারা নানা-সময় মিথ্যাচার করেছে। ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির প্রেসিডেন্ট অমিত শাহর সাথে খালেদা জিয়ার টেলিফোনে কথা হয়েছে বলে ফলাও করে প্রচার করেছিল। কিন্তু অমিত শাহ নিজেই সে ধপ্রণর কোনো টেলিফোন আলাপের কথা অস্বীকার করেন। মার্কিন একজন সিনেটরের সই নকল করে তারা বিবৃতি দিয়েছিল।’ ‘তাদের কাছে প্রমাণ থাকলে প্রমাণ দিক, আদালতে যাক, নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ করুক।’
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা