২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

নির্বাচন সহিংসতা মুক্ত হবে কি?

-

১৯৯০ সাল থেকে নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে আন্দোলন এখনো অব্যাহত রাখতে হয়েছে, যা একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য বিস্ময়কর। ১৯৯৬-এর নির্বাচনের আগে আমরা দেখেছি নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন দু’বছর যাবৎ করেছিল আওয়ামী লীগ। ১৯৯৬-এর ১৫ ফেব্রুয়ারি ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তবে এই নির্বাচন বয়কট করেছিল প্রায় সবক’টি রাজনৈতিক দল। দেশব্যাপী তখন সহিংসতায় কমপক্ষে ১৫ জন নিহত হয়েছিল। এরপর প্রতি জাতীয় নির্বাচন কিংবা ইউপি নির্বাচনসহ সব নির্বাচনে কমবেশি সহিংসতা ও প্রাণহানি ঘটেছে। ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় নির্বাচনেও সহিংসতা হয়েছিল। একটি তদন্ত কমিটি তিন হাজার ৬২৫টি ঘটনার সত্যতা পায়, যার মধ্যে ৩৫৫টি খুন এবং তিন হাজারের অধিক ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ ও লুটের ঘটনা ছিল। এসব ঘটেছিল পয়লা অক্টোবর ২০০১ থেকে ৩১ ডিসেম্বর ২০০২-এর মধ্যে। সে রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০০৩ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত আরো প্রায় ১৪ হাজার সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। তবে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে ২০১৪ সালের দশম জাতীয় নির্বাচনে। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থাকে বিলুপ্ত ঘোষণা করলে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। বাধ্য হয়ে তখন বিভিন্ন দল দশম জাতীয় নির্বাচনও বর্জন করে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগসহ ১৭টি দল নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল। এই নির্বাচনে ৩০০টি আসনের মধ্যে ১৫৪টি, অর্থাৎ বেশির ভাগ আসনে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রার্থীরা ‘বিজয়ী’ হওয়ায় নির্বাচনটি নিয়ে ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি হয়। এই নির্বাচনকে ঘিরে ব্যাপক সহিংসতা ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছিল যা অতীতে দেশের কোনো নির্বাচনে ঘটেনি। বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী ২০১৫ সালে রাজনৈতিক সহিংসতায় মারা গেছে ১৯৮ জন আর ২০১৬ সালে ৬৪ জন। মানবাধিকার সংগঠন ‘আসক’-এর হিসাব অনুযায়ী, ২০১৪ সালে ক্রসফায়ার, বন্দুকযুদ্ধ বা এনকাউন্টারে নিহত ১২৮ জন। রাজনৈতিক সহিংসতায় নিহত ১৪৭ জন। ৫ জানুয়ারি সংসদ নির্বাচনের দিন সহিংসতায় নিহত ১৯ জন যা অতীতের রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০১৩ সালের ২৫ নভেম্বর ওই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর রাজনৈতিক সহিংসতার কারণে নিহত হয় ১৮২ জন। আহত পাঁচ সহস্রাধিক মানুষ। মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’ এক বিবৃতিতে জানায়, ২০১৪ সালে ২৫ নভেম্বর থেকে ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত সহিংসতায় ১৪৯ জন নিহত এবং চার হাজার ৮৮৬ জন আহত হন।
পুনরায় জাতীয় নির্বাচনের সময় চলে এসেছে। এই বছরের শেষে একাদশ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। ক্ষমতাসীন সরকার পরপর দুইবার ক্ষমতায় থেকে দেশের উন্নয়নের জন্য কাজ করার সুযোগ পেয়েছে। দেশ এগিয়েছে। জনগণ আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবে বলে আশাবাদী সরকার। কিন্তু নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে তীব্র মতবিরোধের অবসান ঘটেনি। দেশের প্রধান বিরোধী দলের চেয়ারপারসন রাজনৈতিক মামলায় জেল খাটছেন। একাদশ জাতীয় নির্বাচন নিয়েও সহিংসতা ও প্রাণহানির আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞেরা। নির্বাচন নিয়ে অতীতের মতো সহিংসতা ও প্রাণহানির পুনরাবৃত্তি জাতির কেবল ক্ষতিই করবে। অংশগ্রহণমূলক ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা তো সরকারকেই করতে হবে। দেশের সচেতন নাগরিক হিসেবে আমরা নির্বাচনী সহিংসতার পুনরাবৃত্তি চাই না কিছুতেই। একাদশ জাতীয় নির্বাচন প্রাণহানি ও সহিংসতামুক্ত হবেÑ এই কামনা দেশের প্রতিটি মানুষের। হ


আরো সংবাদ



premium cement
৪৬তম বিএসএস প্রিলি পরীক্ষা : শুরুতেই স্বপ্নভঙ্গ ৮১ শিক্ষার্থীর মরুর উষ্ণতায় ক্ষতির মুখে কৃষি ছেলেদের কারণে বিপাকে মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির দুই বিভাগে বৃষ্টি হতে পারে ফ্রান্স, ব্রাজিল ও প্যারাগুয়ে সফরে যাচ্ছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ড সফরকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে মাইলফলক বললেন প্রধানমন্ত্রী লালমনিরহাটে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশী যুবক নিহত এখনো শেষ হয়নি বিতর্কিত আউটের রেশ, ব্যতিক্রমী প্রতিবাদ মুশফিকের ‘ফ্রি ভিসার গল্প’ আর শূন্য হাতে ফেরা লাখো শ্রমিক নোয়াখালীতে প্রবাসীর স্ত্রীর ব্যক্তিগত ছবি দেখিয়ে চাঁদা আদায় দেশের উন্নয়নে পাকিস্তান প্রশংসা করে, অথচ বিরোধী দল দেখে না : কাদের

সকল