২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

বন্দুকযুদ্ধ বন্ধের স্বস্তি

অন্য দৃষ্টি
-

গত বছরের ২২ নভেম্বর কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর মোহাম্মদ সোহেল খুন হন। একদল সঙ্ঘবদ্ধ সন্ত্রাসী গুলি চালিয়ে নৃশংস কায়দায় তাকে হত্যা করে। দেখা গেল, খুনের দায়ে প্রধান সন্দেহভাজনরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দুই দফা অভিযানে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ প্রাণ হারায়।
ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্র্মীদের ভাষ্যমতে, মোহাম্মদ সোহেল জনপ্রিয় নেতা। স্থানীয় কাউন্সিলর নির্বাচনে তাকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মতো অবস্থান কারো ছিল না। যদিও বাংলাদেশে সর্বস্তরের নির্বাচন পুরোপুরি ছেলেখেলায় পরিণত হয়েছে। এ অবস্থায় ক্ষমতা ও প্রতিপত্তি অর্জনে আওয়ামী লীগের নেতারা একে অন্যকে ছাড়িয়ে যেতে মরিয়া। সেই প্রতিযোগিতায় সোহেল চমক দেখাচ্ছিলেন। এমন লোকদের শত্রুর অভাব হয় না। নিজেদের লোকেরাই তাদের প্রতি ঈর্ষাকাতর হয়।
সে জন্য সোহেল হত্যা একটি স্পর্শকাতর চাঞ্চল্যকর মামলা। এ মামলার সন্দেহভাজন আসামিদের ধরা ও তাদের তদন্তের মুখোমুখি করা ছিল তদপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ। জঙ্গিদের ধরার পর আমরা পুলিশের অত্যন্ত সতর্ক পদক্ষেপ দেখেছি। তাদের মাথায় হেলমেট পরানো থাকত। পরানো হতো বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট। একজন জঙ্গিকে আগলে রাখার জন্য শত শত পুলিশের বহর আশপাশের সব নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দিত। সোহেলের খুনিদের জীবিত আটক করে ষড়যন্ত্র উদঘাটন করার সতর্ক প্রচেষ্টা মোটেও দেখা গেল না। নিজ দলের একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির হত্যার বিচারের জন্য তাদের বেঁচে থাকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
সোহেল খুনের এক সপ্তাহের মাথায় দেখা গেল গুরুত্বপূর্ণ দুই আসামি পুলিশের সাথে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ অভিযুক্তরা এভাবে প্রাণ হারালে তা নিয়ে সংশয় জাগা স্বাভাবিক। সাধারণত ঘটনার মূল হোতাদের আড়াল করার জন্য এমনটি পরিকল্পিতভাবে ঘটানো হয়েছে বলে মানুষের মনে সন্দেহ জাগে। তার মাত্র এক দিন পর হত্যা মামলার প্রধান আসামিও একই ‘বন্দুকযুদ্ধে’ প্রাণ হারায়। এভাবে ঘটনা ঘটতে দেখলে সেটাকে সাজানো ভাবতে মানুষের মনে আর দ্বিধা থাকে না।
দু’টি পৃথক ‘বন্দুকযুদ্ধে’ পরপর তিনজন প্রাণ হারাল। গত বছরের ১ ডিসেম্বর রাতে মামলার প্রধান আসামি শাহ আলমের প্রাণ হারানোর বিবরণ কুমিল্লা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক পরিমলের ভাষায় মিডিয়ায় এভাবে প্রকাশিত হয়। তিনি বলেন, ‘বুধবার গভীর রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চাঁনপুরস্থ গোমতী নদীর বেড়িবাঁধ এলাকায় অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের আটক করতে জেলা ডিবি ও কোতোয়ালি থানা পুলিশের একাধিক দল বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে সন্ত্রাসীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে থাকে। পুলিশও আত্মরক্ষায় পাল্টা গুলি করে। গোলাগুলির একপর্যায়ে কয়েকজন দুষ্কৃতকারী পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় একজনকে উদ্ধার করা হয়। হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’
তার আগে বন্দুকযুদ্ধের শিকার অন্য দু’জন প্রধান সন্দেহভাজনের ব্যাপারে একই ভাষ্য সংবাদমাধ্যমে এসেছে। এই দুটো বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় দেখা যাচ্ছে, পুলিশের একটি যৌথ দলের সাথে দুষ্কৃতকারীদের গুলিবিনিময় হচ্ছে। এর পরিণামে কেবল নির্দিষ্ট মামলার প্রধান প্রধান আসামিরা নিহত হচ্ছে। এর বিপরীতে দুষ্কৃতকারী দলের অন্য কাউকে আহত হতে দেখা যাচ্ছে না। অন্য দিকে পুলিশের কাউকে হতাহত দেখা যাচ্ছে না। বিচারবহির্ভূত হত্যার এ বিবরণ আমরা বছরের পর বছর একই রকম দেখে আসছি।
বিচারবহির্ভূত হত্যার সাথে ক্ষমতার রাজনীতির এক নিবিড় সম্পর্ক লক্ষ করা যাচ্ছে। সাধারণত ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে সবাইকে চুপ রাখার জন্য এর প্রয়োগ হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা এমন মতামত দীর্ঘ দিন ধরে প্রকাশ করে আসছেন। নির্বাচন কিংবা বিশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতি সামনে রেখে এমন হত্যাকাণ্ড তুলনামূলক অনেক বেড়ে যায়। বিচারবহির্ভূত হত্যার উচ্চ হারের সাথে মানুষের প্রতিবাদ বিক্ষোভের বিপরীত সম্পর্ক পাওয়া যায়। প্রতিবাদী মানুষেরা প্রাণ হারালে নীরবতা নেমে আসতে দেখা গেছে। রাজনৈতিক অসন্তোষ প্রশমিত হওয়ায় সরকারও স্বস্তি বোধ করেছে। আবার যখন কোনো ইস্যুকে কেন্দ্র করে প্রতিবাদ বিক্ষোভ দানা বাঁধার সম্ভাবনা উঁকি মেরেছে আবারো এমন হত্যার সংখ্যা বেড়েছে। সর্বশেষ ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচন ঘিরে বিচারবহির্ভূত হত্যা আগের বছরের চেয়ে তিনগুণ বেড়ে যায়। অধিকার-এর হিসাবে সে বছর ৪৬৬ জন প্রাণ হারায়। একে ‘ভয়ের সংস্কৃতি’ প্রতিষ্ঠা হিসেবে দেখছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
বিশেষজ্ঞদের এ মতামতকে সমর্থন করছে দুটো ঘটনা। একটি হচ্ছে ২০২০ সালের ৩১ জুলাই পুলিশের গুলিতে অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদের হত্যা। ওই ঘটনার আগে ও পরের বিচারবহির্ভূত হত্যার পরিসংখ্যান আমাদের স্পষ্ট করে দিচ্ছে এ ব্যাপারটি। ওই বছরের প্রথম ভাগে অর্থাৎ সিনহা হত্যার আগের সাত মাসে বিচারবহির্ভূত হত্যার ঘটনা ঘটে ১৮৪টি। অন্য দিকে বছরের বাকি পাঁচ মাসে মাত্র একটি বিচারবহির্ভূত হত্যা ঘটেছে। সিনহা হত্যার পরপরই সিলেটে বিচারবহির্ভূত হত্যাটি কেন হয়েছিল, তাও বোঝা যাচ্ছে; কারণ সিনহা খুন হওয়ার ঘটনাটি আড়াল করে দেয়ার চেষ্টা হয়েছিল। সাধারণ মানুষের ক্ষোভ প্রকাশিত হতেও তাই কয়েক দিন সময় লেগে গিয়েছিল। তার আগেই সিলেটে সে ঘটনাটি ঘটে যায়। সিনহা হত্যার প্রভাব তখনো সিলেটের আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর ওপর পড়েনি।
আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কখন বন্দুকের নল গুটিয়ে নিচ্ছে সেটি আবার আমরা বুঝতে পারলাম যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর। দেশটি গত বছরের ১০ ডিসেম্বর র্যাবের সাবেক ও বর্তমান মিলিয়ে সাত শীর্ষ কর্মকর্তার ওপর এটি আরোপ করে। ঠিক এ নিষেধাজ্ঞার এক মাস পূর্তির পরদিন ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টার খবর দিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের অবরোধ আরোপের পর ‘ক্রসফায়ারে কোনো মৃত্যু নেই’। অথচ নিষেধাজ্ঞা ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা আগে বরগুনার পাথরঘাটায় র্যাবের সাথে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ একজন প্রাণ হারান। তার চার দিন আগে দ্বীপজেলা ভোলায় আরো দু’জন প্রাণ হারান।
আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে র্যাব গঠন করা হয়েছিল অপরাধ দমনের জন্য। বাহিনীটি গঠনের প্রথম দিকে এর ফলাফলও পাওয়া গেছে। ‘ভালোর জন্য’ চালিত অভিযান কখন দিগভ্রান্ত হয়ে গেল কেউ যেন টেরও পেল না। এরপর বর্তমান সরকার প্রথমবার ক্ষমতায় আসার আগে ঘোষণা দিয়েছিল তারা ‘বিচারবহির্ভূত’ হত্যা পুরোপুরি বন্ধ করবে। বাস্তবে দেখা গেল সম্পূর্ণ উল্টো দৃশ্য। মানুষের মন্দ করার প্রবণতা প্রবল। তার ওপর কারো হাতে যদি অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র থাকে, কথাই নেই। এমন বাহিনীকে নিয়ম-শৃঙ্খলার কাঠামোর মধ্যে রাখতে হয়, তাদের কর্মকাণ্ডের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হয়। সরকার এগুলো না করে সম্পূর্ণ নিজেদের রাজনৈতিক অভিলাষচরিতার্থে চেষ্টা চালিয়েছে। এর নেতিবাচক প্রভাব কেবল র্যাবের মধ্যে সীমিত থাকেনি; অন্য বাহিনীর মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। পুলিশ, রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা, সীমান্তরক্ষাকারী বাহিনী-বিজিবি, শিল্প পুলিশ এমনকি নিরীহ আনসারের মধ্যেও তা ছড়িয়েছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলোর তালিকায় গুম, খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যার সাথে তাদের সম্পৃক্ততার তথ্য মিলছে।
ডেইলি স্টার বিচারবহির্ভূত হত্যা বন্ধের বিষয়ে জানতে চায় র্যাবের পরিচালক মিডিয়া উইং, কমান্ডার খন্দকার আল মইনকে। পত্রিকাটির প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বন্দুকযুদ্ধ’ কোনো বিশেষ অবস্থা বা সময়ের ওপর নির্ভর করে না। এটি নির্ভর করে পরিচালিত অভিযানের সময় অপরাধীদের নির্বিচারে গুলি করার পারিপার্শ্বিকতার ওপর।’ সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের ওপর সাধারণ মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস বেশি থাকে। তাদের ব্যাপারে উচ্চ ধারণার কারণ উন্নত প্রশিক্ষণ ও নৈতিক দৃঢ়তা। আমাদের সামরিক বাহিনীর সদস্যরা সারাবিশ্বে শান্তি অর্জনে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছেন। তারা গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষায়ও সুনাম কুড়িয়েছেন। এমন ধারণাও সাধারণত সবার ছিল, র্যাবে পুলিশের চৌকশ কর্মকর্তারা নিয়োগ পান। দুর্ভাগ্য হচ্ছে, আমাদের টোটাল সিস্টেমটা এখন এমন লেজেগোবরে অবস্থায় গিয়েছে যে, সঠিক কথা বলার স্পেস নেই। দেখা যাবে, র্যাবের মিডিয়া উইংয়ের এই কর্মকর্তা ব্যক্তিজীবনে সৎ। হালাল উপার্জনের টাকায় তাকে উচ্চমূল্যের বাজারে স্ত্রী পরিজন নিয়ে অত্যন্ত মিতব্যয়ী হতে হয়। তিনি অত্যন্ত স্পর্শকাতর একটি প্রতিষ্ঠানের মুখপাত্র। তাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটির ভাবমর্যাদা রক্ষাকে। তার প্রকাশিত স্টেটমেন্টের সাথে বাস্তব অবস্থার মিল নেই। সিনহা হত্যার পর সমাজে ও সামরিক বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্যদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়া রোষ এবং সাম্প্রতিক যুক্তরাষ্ট্র্রের নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর বিচারবহির্ভূত হত্যা বন্ধ হয়ে যাওয়ার মধ্যে স্পষ্ট সম্পর্ক দেখা যাচ্ছে। বাহিনীর মিডিয়ার উইংয়ের কথা সত্য হলে বাস্তব পরিস্থিতিকে মিথ্যা বলতে হবে। আমাদের বাহিনীগুলো সততা ও স্বচ্ছতার পথে ফিরে এলে সবার মঙ্গল হবে।
র্যাবের কমান্ডার খন্দকার আল মইন আরো বলেছেন, ‘বাংলাদেশের সংবিধান ও আইন আত্মরক্ষার্থে গুলি করার অনুমতি দিয়েছে। এটি মানবাধিকারের বিষয় নয়।’ গত এক মাসে বাহিনী আক্রমণের শিকার না হওয়ায় ‘বন্দুকযুদ্ধ’ হয়নি বলে মন্তব্য করেন তিনি। অধিকার-এর হিসাবে দেখা যাচ্ছে গত বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সর্বমোট তিন হাজার ১৩৫ জন বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছেন বাংলাদেশে। বাহিনীর হিসাবে এগুলো কেবল অপরাধী পক্ষ। এখানে বাহিনীর কেউ প্রাণ হারিয়েছেন বলে পরিসংখ্যান নেই। আমরা উভয়পক্ষের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধ হওয়ার খবর বাহিনী সূত্রে জানতে পারি যেখানে একজন বা একাধিক ব্যক্তি প্রাণ হারান। এসব ঘটনায় সাধারণত আহত কাউকে পাওয়া যায় না। অন্য দিকে বাহিনীর কেউ কেউ আহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়। তাদের নিজস্ব হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। তারা সবাই সুস্থ হয়ে ওঠেন। সে জন্য হয়তো আর খবর দেয়ার প্রয়োজন হয় না। উভয়পক্ষের একসাথে প্রাণহানির কোনো খবর কখনো পাওয়া যায় না। বাহিনীগুলোর বিবৃতি এ কারণে একঘেয়ে ও অযৌক্তিক বলে প্রতীয়মান হলেও সেটি শোধরাতে দেখা যায় না।
জবাবদিহিহীনতা মানুষকে বেপরোয়া করে দেয়। একটি অপরাধ করে কেউ যদি পার পেয়ে যায় দ্বিতীয় অপরাধটি করা তার জন্য আরো সহজ হয়ে যায়। এভাবে অপরাধের সংখ্যা যত বাড়বে ব্যক্তিটি ততই দানবে পরিণত হবে। গুম, খুন, হেফাজতে মৃত্যু ও বিচারবহির্ভূত হত্যার সংখ্যা কয়েক হাজার ছাড়িয়ে গেছে। আশ্চর্যজনক বিষয় হচ্ছে, এগুলো নিয়ে কোনো তদন্ত নেই। মানবাধিকার সংগঠনগুলো এসব তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করে এর সুষ্ঠু তদন্ত চাচ্ছে। আমাদের প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে প্রতিটি অভিযোগকে আমলে নেয়া। এর প্রতিটিকে নিয়মানুযায়ী খতিয়ে দেখা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উঠেছে, তা থেকে তারা এভাবেই কেবল নিষ্কৃতি পেতে পারে। আর যদি কাউকে দোষী পাওয়া যায় তার বিরুদ্ধে নিয়মানুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে। আমাদের একটি বিশাল দেশ। ১৭ কোটি মানুষ। আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আকারও বিশাল। সব মিলিয়ে কয়েক লাখ হবে। চার দিকে থেকে যেভাবে অভিযোগ উঠেছে তাতে মনে হচ্ছে বাহিনীর লাখ লাখ সদস্য সবাই দোষী। বাস্তবে অল্পসংখ্যক সদস্যের বিরুদ্ধে সীমা লঙ্ঘনের অভিযোগ। সুনির্দিষ্ট ব্যক্তিদের ব্যাপারে তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নিলে অভিযোগের দায় থেকে পুরো বাহিনী মুক্তি পেয়ে যাবে। বাহিনীগুলোর ভাবমর্যাদাও ফিরে পাবে।
২০১৮ সালের নির্বাচনের বছরে অধিকার-এর তালিকা থেকে পাওয়া গেল, গড়ে প্রতিদিন একজন করে বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হয়েছেন। পরিস্থিতির সাথে তাল মিলিয়ে এর হার কখনো কমেছে কখনো বেড়েছে। বিগত এক যুগে এটি একেবারে বন্ধ হয়ে যায়নি। দুটো ব্যতিক্রম আমরা দেখতে পাচ্ছি সিনহা রাশেদ হত্যা ও যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার পর। আমরা আশা করব আমাদের বাহিনীগুলো পূর্ণ পেশাদার ভূমিকায় অবতীর্ণ হবে। জানমালের নিরাপত্তায় তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবে। মানুষ আশা করে কারো নিষেধাজ্ঞা কিংবা মৃত্যু থেকে সৃষ্ট ছড়ানো ভীতি নয়, বরং এমনিতেই বন্ধ থাকুক ‘বন্দুকযুদ্ধ’। গত বছরের ১০ ডিসেম্বরের পর বন্ধ হওয়া বেআইনি কাজটি চিরদিনের জন্য বন্ধ হোক। সেই প্রত্যাশা করে নাগরিকরা। তারা স্বস্তি পেতে চায়।
jjshim146@yahoo.com


আরো সংবাদ



premium cement