১৮ মে ২০২৪, ০৪ জৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৯ জিলকদ ১৪৪৫
`


ওয়ার কোর্স-স্বাধীনতাযুদ্ধের দূরদর্শী পরিকল্পনা

ওয়ার কোর্স-স্বাধীনতাযুদ্ধের দূরদর্শী পরিকল্পনা - ছবি- সংগৃহীত

১। প্রায় এক লাখ সুপ্রশিক্ষিত পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের মাত্র পাঁচটি ইউনিটের ভগ্নাংশ ও স্বল্পসংখ্যক অফিসারের নেতৃত্বে যুদ্ধ করে দেশমুক্ত করা এক দুঃস্বপ্ন বৈ কিছু নয়। কিন্তু তারপরও প্রচণ্ড আত্মবিশ্বাসী, দুঃসাহসী, দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ, দুর্ধর্ষ, অকুতোভয় ও চৌকস বাঙালি অফিসার ও সৈনিকগণ পৃথিবীর মায়া পরিত্যাগ করে শুধু প্রতিরোধ যুদ্ধই শুরু করলেন না; অসংখ্য তরুণ, ছাত্র, যুবক, কৃষক, শ্রমিক যারা দেশমাতৃকার মুক্তির জন্য স্বেচ্ছাসেবক হয়ে এগিয়ে এসেছেন তাদের যুদ্ধের প্রশিক্ষণও দেয়া শুরু করলেন। এ বিপুলসংখ্যক মুক্তিযোদ্ধাকে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য প্রয়োজন সুপ্রশিক্ষিত কমিশন্ড অফিসারের; এ চিন্তা থেকেই মুক্তিযুদ্ধের দূরদর্শী সর্বাধিনায়ক জেনারেল ওসমানীর মাথায় আসে ডধৎ ঈড়ঁৎংব চালু করার পরিকল্পনা।

২। হানাদার বাহিনীর অতর্কিত গণহত্যা শুরু হলে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতেই বিক্ষিপ্তভাবে স্বাধীনতাযুদ্ধ শুরু হলে ৪ এপ্রিল হবিগঞ্জের তেলিয়াপাড়া চা বাগানের ঐতিহাসিক মিটিংয়ের মাধ্যমে যুদ্ধকে একক নেতৃত্বের (এমএজি ওসমানী-সর্বাধিনায়ক) অধীনে আনয়ন করে যুদ্ধক্ষেত্রকে বিভিন্ন সেক্টর/অঞ্চলে ভাগ করে কমান্ডারগণের অধীনে ন্যস্ত করা হয় এবং মুক্তিযুদ্ধকালীন একটি জাতীয় সরকার গঠনের পরামর্শ বা সুপারিশ করা হয়। সে অনুসারে ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল রাজনৈতিক নেতারা সৈয়দ নজরুল ইসলামকে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি করে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকার গঠন করেন। যা মুজিবনগর সরকার বা প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার নামেও পরিচিত। ১৭ এপ্রিল এই সরকারের মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলায় (বর্তমান মুজিবনগর) শপথ গ্রহণ করেন। এ সরকার সেনাবাহিনীর ৪ এপ্রিল তেলিয়াপাড়া মিটিংয়ের সব পরিকল্পনাকে অনুমোদন ও সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করে।

৩। ২৭ মার্চ কিংবদন্তি সমরনায়ক মেজর জিয়াউর রহমান কর্তৃক স্বাধীনতা ঘোষণা এবং পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে জনগণের প্রতিরোধযুদ্ধ শুরু হলেও মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার জন্য মুক্তিবাহিনী গঠন ও সমন্বয়, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন আদায় এবং যুদ্ধে সহায়তাকারী রাষ্ট্র ভারতের সরকার ও সেনাবাহিনীর সাথে সাংগঠনিক সম্পর্ক রক্ষায় অস্থায়ী বাংলাদেশ সরকারের ভূমিকা ছিল অপরিসীম। এই সরকারের অধীনে জেনারেল ওসমানীর নেতৃত্বে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধযুদ্ধ প্রবল রূপ লাভ করে এবং স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের বিজয় অর্জন ত্বরান্বিত হয়।

৪। এ ছাড়াও বাংলাদেশ সরকার গঠনের পর মুক্তিযুদ্ধ একটি সমন্বিত রূপ লাভ করে এবং সেনাবাহিনী ও জনসাধারণের এবং মুক্তিবাহিনীর মনোবল বহুগুণে বৃদ্ধি পায়। সারা দেশকে প্রথমে ৬টি ও ১২-১৫ জুলাই-এ কলকাতায় অনুষ্ঠিত সেক্টর কমান্ডার্স কনফারেন্সে সমগ্র বাংলাদেশকে ১১টি সেক্টরে ভাগ করে সুপরিকল্পিতভাবে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালিত হয়। কিন্তু লক্ষাধিক পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের মাত্র পাঁচ ব্যাটালিয়ন, ইপিআর, পুলিশ ও স্বল্প প্রশিক্ষিত মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে শক্ত প্রতিরোধ যুদ্ধ গড়ে তোলা সহজ হবে না বলে ওসমানী ও ঊর্ধ্বতন কমান্ড বুঝতে পারেন। তাই এ পরিস্থিতিতে বিভিন্ন যুদ্ধক্ষেত্রে নেতৃত্ব আরো সুদৃঢ় করার প্রয়োজনীয়তাও ভীষণভাবে অনুভূত হয়। এ ছাড়াও আসন্ন বর্ষাকালের মধ্যেই মুক্তিযুদ্ধকে দেশব্যাপী ছড়িয়ে দেয়ারও প্রয়োজন উপলব্ধি করেন তারা। ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের আরো কয়েকটি ব্যাটালিয়ন ও ব্রিগেড গঠন করারও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সেজন্য প্রয়োজন হয় সুপ্রশিক্ষিত কমিশন্ড অফিসার, যারা হাজার হাজার গণযোদ্ধাকে নেতৃত্ব দেবেন। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এসব সামরিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মুজিবনগর সরকার একটি ‘নিয়মিত বাংলাদেশ সেনাবাহিনী’ গঠনের উদ্যোগ গ্রহণ করেন যার প্রথম ধাপ হিসেবে প্রয়োজন হয় একটি মিলিটারি একাডেমির।

৫। অস্থায়ী ‘বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি’ প্রতিষ্ঠা : জেনারেল ওসমানীর বিশেষ অনুরোধে অতঃপর স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের সদর দফতর থেকে সেনাবাহিনীর নেতৃত্ব প্রদানের লক্ষ্যে কমিশন্ড অফিসার তৈরির প্রশিক্ষণের জন্য একটি অস্থায়ী মিলিটারি একাডেমি প্রতিষ্ঠা করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ভারত সরকারও এতে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়। তাদের অনুমোদনে শিলিগুড়ির উত্তর-পূর্বে, জলপাইগুড়ির ডুয়ার্স রিজার্ভ ফরেস্টের পার্বত্য জঙ্গলে ভুটান সীমান্তের কাছে অবস্থিত ছিল মূর্তি প্রশিক্ষণ শিবিরটি। ভুটান হয়ে ভারতে প্রবেশ করা মূর্তি নদীর পাশে অস্থায়ী মিলিটারি একাডেমি স্থাপনের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হলো। ওই স্থানে আগে থেকেই ‘মুজিব ক্যাম্প’ নামে বিপুলসংখ্যক মুক্তিযোদ্ধার নিয়মিত প্রশিক্ষণ চলছিল। এটিকে নতুন করে সংগঠিত করা হয় ‘মুজিব উইং’ এবং ‘ভাসানী উইং’ নামে। ‘ভাসানী উইং’ চালু হয় অস্থায়ী একাডেমি। এই একাডেমিতে ৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধের সময় প্রচলিত ‘ওয়ার কোর্স’ এর আদলে ১৪ সপ্তাহের প্রশিক্ষণ কর্মসূচি ‘বাংলাদেশ ওয়ার কোর্স’ চালু করার সিদ্ধান্তও অনুমোদিত হয়। প্রশিক্ষণের সার্বিক দায়িত্ব গ্রহণ করেন ভারতীয় বাহিনীর বিভিন্ন র‌্যাংকের চৌকস অফিসার।

৬। দুর্দশাগ্রস্ত জীবন : এখানে পদাতিক ব্যাটালিয়নের সৈনিকদের থাকার জন্য আগে থেকেই দু’টি পুরনো টিনশেড ছিল। ক্যাডেটদের জন্য তেমন কোনো মানোপযোগী সুযোগ-সুবিধা বলতে এখানে কিছুই ছিল না। ফলে তাদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ ও অসহনীয় কষ্ট স্বীকার করতে হয়। তবে তারা দেশমাতৃকার স্বাধীনতার জন্য নির্দ্বিধায় ও নিঃসঙ্কোচে কোনো কষ্টকেই গায়ে লাগাননি। ইন্ডিয়ান সেনাবাহিনীর অফিসার ব্রিগেডিয়ার আরপি সিংহ, যিনি ক্যাপ্টেন অবস্থায় এখানে প্রশিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেছেন, তার বর্ণনা মতে : These cadets did not enjoy the facilities which were provided to their counterparts in IMA and OTA. They were accommodated in temporary huts with bamboo walls and the roof was corrugated-galvanized tin sheets. In the hot and humid weather of July to September 1971, living condition in these barracks was miserable. There was no electricity and hence no fans. At night the cadets had to light up the barracks with hurricane lanterns to study and prepare their uniforms etc. for the next day's classes.

৭। ৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধের সময় পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমিতে স্বল্প সময়ে কমিশন্ড অফিসার তৈরির জন্য প্রচলিত ‘ওয়ার কোর্সের’ অভিজ্ঞতা বা কনসেপ্ট মাথায় ছিল। সে আদলেই স্বাধীনতাযুদ্ধে আমাদের প্রয়োজন পূরণের লক্ষ্যে ‘বাংলাদেশ ওয়ার কোর্স’ চালু করা। ইন্ডিয়ান মিলিটারি একাডেমি ও ‘অফিসার্স ট্রেনিং একাডেমি’র প্রশিক্ষণ সিলেবাস ও সূচিকে সংক্ষিপ্ত করে এ একাডেমিতে ১৪ সপ্তাহের প্রশিক্ষণ সিলেবাস প্রণয়ন করা হয়, যা ছিল ক্যাডেটদের জন্য অত্যন্ত কষ্টকর ও দুঃসহ।

৮। বাংলাদেশ ওয়ার কোর্সের (Bangladesh War Course-BWC) শুভ সূচনা : একাডেমির প্রথম বাংলাদেশ ওয়ার কোর্সের জন্য জেন্টলম্যান ক্যাডেট নির্বাচন করার লক্ষ্যে জুন মাসের প্রথমেই সর্বাধিনায়ক জেনারেল ওসমানীর চিফ অব স্টাফ লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুহাম্মদ আবদুর রবের নেতৃত্বে একটি বিশেষ কমিটি সব সেক্টর পরিদর্শন করেন এবং সেনাবাহিনীর কমিশন্ড অফিসার হওয়ার জন্য যোগ্যতাসম্পন্ন যুদ্ধরত তরুণদের মধ্য থেকে মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে কেবল বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগদানে ইচ্ছুকদেরকেই বাছাই করা হয়। শিক্ষিত, মেধাবী, নেতৃত্বের গুণাবলী সম্পন্ন দুর্ধর্ষ চৌকস ৬০ জন তরুণকে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত করা হয়। তাদের মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্টপুত্র শেখ কামালও নির্বাচিত হয়েছিলেন। পরে পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমি (পিএমএ) থেকে ৪৭ পিএমএ লং কোর্সের একজন জেন্টলম্যান ক্যাডেট পালিয়ে এসে এ কোর্সে যোগ দেন। এই ৬১ জন গেরিলা ক্যাডেটকে আধুনিক সমর শিক্ষায় পারদর্শী করে কমিশন প্রদানের লক্ষ্যে ভারতের মূর্তিতে অবস্থিত অস্থায়ী বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে প্রেরণ করা হয়। ৩০ জুন থেকে দিনরাত ১৪ সপ্তাহের কঠিন ও চ্যালেঞ্জিং প্রশিক্ষণ শুরু হয় ‘ফার্স্ট বাংলাদেশ ওয়ার কোর্সের’ ক্যাডেটগণের। মুক্তিযুদ্ধের নিয়মিত সেনাবাহিনীর সুদক্ষ নেতৃত্ব তৈরি করার লক্ষ্যেই যুদ্ধরত এই যুবকদের নিয়মিত সামরিক এবং গেরিলা যুদ্ধের সব কৌশল, অস্ত্র প্রশিক্ষণ ও শারীরিক শিক্ষায় পারদর্শী করে তোলা হয়।

৯। প্রথম বাংলাদেশ ওয়ার কোর্সের সমাপনী কুচকাওয়াজ : ৯ অক্টোবর ১৯৭১ তারিখটি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের একটি অবিস্মরণীয় দিন। ১৪ সপ্তাহের টানা কঠিন প্রশিক্ষণ ও পরিশ্রমের পূর্ণাঙ্গ বাস্তব রূপ পেল এ দিনে। ঐতিহাসিক এ দিনে পাসিং আউট প্যারেড বা সমাপনী কুচকাওয়াজ শুরু হলো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে নির্মিত এয়ার ফিল্ডে সকাল সাড়ে ৮টায়। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী তথা সামরিক বাহিনীর সর্বপ্রথম ঐতিহাসিক এই কুচকাওয়াজ প্রধান অতিথি হিসেবে পরিদর্শন করেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম। আরো উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ, সর্বাধিনায়ক জেনারেল আতাউল গনি ওসমানী, উইং কমান্ডার আবদুল করিম খন্দকার (পরবর্তীতে বিমানবাহিনী প্রধান ও মন্ত্রী), ৬ নম্বর সেক্টর কমান্ডার মুহাম্মদ খাদেমুল (এমকে) বাশার (পরবর্তীতে বিমানবাহিনী প্রধান) ও মুজিবনগর সরকারের অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তি ও সংশ্লিষ্ট ভারতীয় সেনা অফিসারগণ। সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট হিসেবে কমিশন লাভ করলেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ‘প্রথম ওয়ার কোর্সের ৬১ জন দুর্দান্ত, দুঃসাহসী গেরিলা যোদ্ধা। অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম ও ডিফেন্স সেক্রেটারি তৌফিক-ই-এলাহী স্বাক্ষরিত ‘পার্চমেন্ট (উন্নত কাগজের) কমিশন (Parchment Commission) সার্টিফিকেট’ দিয়ে তাদেরকে ভূষিত করা হয়েছিল। এ কোর্সে প্রথম স্থান অধিকার করে 'C-in-C's Cane' অর্জন করেন সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট সাঈদ আহমেদ (পরবর্তীতে মেজর জেনারেল ও ডিভিশন কমান্ডার)। একটি দেশ সৃষ্টির সূচনার সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অত্যন্ত গৌরবময় ঐতিহাসিক এ দিনে না ছিল কোনো জাঁকালো জৌলুসময় আনুষ্ঠানিকতা, ছিল না কোন ‘ফ্যানফেয়ার’, ছিল না কোনো ‘মিলিটারি ব্যান্ড’, ছিল না কোনো ‘ভোজের’ আয়োজন! এ গেরিলা অফিসারদের ছিল না কোনো মাথার টুপি, কোমরের বেল্ট, কোনো ধরনের সাজ-সজ্জা; দেয়া হয়েছিল কেবল ‘খাকি ট্রাউজার ও শার্ট’ ও এক জোড়া ‘জঙ্গল বুট’। বিশ্বের সামরিক ইতিহাসে এত সাধারণ ও দীনহীন পাসিং আউট প্যারেড হয়তো ছিল এটিই।

১০। কমিশন লাভের পরপরই এই দুর্ধর্ষ অফিসারগণকে বদলি করা হয় যুদ্ধরত বিভিন্ন সেক্টর ও ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের বিভিন্ন ব্যাটালিয়নে। তারা সবাই ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের ইউনিটে বা ইনফ্যান্ট্রি/পদাতিক বাহিনীতে যোগ দেন। এ তরুণ অফিসারগণের অসাধারণ রণনৈপুণ্যে ও সমরকৌশলে যুদ্ধক্ষেত্রের পুরো চিত্রই পাল্টে যায়; সমগ্র মুক্তিযুদ্ধ তীব্র গতি লাভ এবং দেশের স্বাধীনতাকে ত্বরান্বিত করে। প্রথম বাংলাদেশ ওয়ার কোর্সের অন্যতম উজ্জ্বল এক অফিসার ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠপুত্র শেখ কামাল। কমিশন লাভের পর তিনি মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল এমএজি ওসমানীর ব্যক্তিগত সচিব বা এডিসি হিসেবে যোগদান করেন এবং দক্ষতা ও সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করেন। এ দায়িত্ব শেষে তাকে বদলি করা হয় ২ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট।

১১। হানাদার বাহিনীর সাথে সম্মুখসমরে এ কোর্সের তিনজন অফিসার শাহাদতবরণ করে শহীদের মর্যাদা লাভ করেন; তারা হলেন- শহীদ বীর উত্তম লেফটেন্যান্ট আবু মঈন মুহাম্মদ আশফাকুস সামাদ, শহীদ বীর বিক্রম লেফটেন্যান্ট খন্দকার আজিজুল ইসলাম ও শহীদ লেফটেন্যান্ট সেলিম কামরুল হাসান। অসামান্য অবদানের জন্য এ কোর্সের ১ জন ‘বীর উত্তম’, ২ জন ‘বীর বিক্রম’ ও ১৭ জন ‘বীর প্রতীক’ খেতাব অর্জন করেন। অতি সম্ভাবনাময় এ কোর্সের সবাই ছিলেন দারুণ মেধাবী, অকুতোভয় যোদ্ধা ও চৌকস সামরিক নেতা। আমাদের সেনাবাহিনীতে যখন মাত্র ২৮-২৯ জন জেনারেল ছিলেন, তাদের মধ্যে এ কোর্সেরই ছিলেন চারজন- মেজর জেনারেল সাঈদ আহমেদ বীর প্রতীক, মেজর জেনারেল জামিল ডি আহসান বীর প্রতীক, মেজর জেনারেল মাসুদুর রহমান বীর প্রতীক ও মেজর জেনারেল খন্দকার নূরন্নবী। তারা হলেন আমাদের সামরিক বাহিনীর উজ্জ্বল নক্ষত্র। তাদের দ্বারা একটি নতুন দেশ সৃষ্টির পর দেশ ও সামরিক বাহিনী গঠনে তাদের অসামান্য অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।

১২। দ্বিতীয় বাংলাদেশ ওয়ার কোর্স : প্রথম বাংলাদেশ ওয়ার কোর্সের ৬১ জন গেরিলা ক্যাডেটের প্রশিক্ষণ চলাকালীনই জেনারেল ওসমানী ও পলিসিমেকাররা আরো কোর্স পরিচালনা করার সিদ্ধান্ত নেন। অস্থায়ী বাংলাদেশ সরকার তা অনুমোদন করেন। ফলে দ্বিতীয় ওয়ার কোর্সের ক্যাডেট নির্বাচন কমিটি বিভিন্ন সেক্টর ও ইউনিট পরিদর্শন করে আরো ৭৫ জন তরুণ অভিজ্ঞ, সুশিক্ষিত ও যোগ্যতাসম্পন্ন চৌকস গেরিলা যোদ্ধাকে নির্বাচিত করেন দ্বিতীয় বাংলাদেশ ওয়ার কোর্সের ক্যাডেট হিসেবে। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে তাদের প্রেরণ করা হয় অ্যাডহক বাংলাদেশ মিলিটারি অ্যাকাডেমি, ভারতের মূর্তিতে। একই সিলেবাসে তাদের সুকঠিন প্রশিক্ষণ শুরু হলো। প্রশিক্ষণ কোর্সের মাঝামাঝি ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জনের সুসংবাদ তখন সবার মুখে মুখে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ সেনা অফিসার তৈরির ১৪ সপ্তাহের প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিলেন। ফলে ১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সেখানে তাদের প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করা হয়। সমাপনী কুচকাওয়াজের জন্য দুই দিন তাদের রিহার্সেল প্যারেডও অনুশীলন করা হয়েছে। কিন্তু তা অনুষ্ঠিত না হওয়ায় ক্যাডেটগণকে কমিশন্ড অফিসার হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার সিদ্ধান্ত আটকে যায়। এমতাবস্থায় তাদের মনে দারুণ আঘাত লাগে। ফলে তারা দেশে ফেরত আসার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতে থাকেন। হয়তো বিজয় অর্জনের পর বাংলাদেশ সরকার অন্য সব গুরুত্বপূর্ণ কাজে ভীষণ ব্যস্ত হয়ে পড়েন এবং সেনাবাহিনীও নিজেরা সুসংগঠিত না হতে পেরে সুসংহত অবস্থানে ছিল না। তখন পর্যন্ত কমান্ড চ্যানেল পুরোপুরিভাবে প্রতিষ্ঠিতও হয়নি। কেননা সেনাবাহিনী সদর দফতর ছিল ভারতীয় সেনাবাহিনীর দখলে। যা হোক অনেকে ভুলে গেলেও জেনারেল ওসমানী তো তার ছেলেদের ভুলে যাননি। তিনি ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সাথে সকল যোগাযোগ করেই সেকেন্ড ওয়ার কোর্সের ক্যাডেটদের স্বাধীন বাংলাদেশে আনার ব্যবস্থা করেন।

১৩। অতঃপর বাংলাদেশ সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে সাতটি ট্রাকে করে ৭৫ জন ক্যাডেটকে ইন্ডিয়ার মূর্তি থেকে শিলিগুড়ি বর্ডার দিয়ে বাংলাদেশের পঞ্চগড় হয়ে রংপুর সেনানিবাসে আনা হয়। এখানে তাদেরকে ক্যাডেট (পরে মেজর) মেসবাহ ও ক্যাপ্টেন (পরবর্তীতে কর্নেল) নওয়াজেশ অভ্যর্থনা জানান। রংপুরে এক দিন অবস্থানের পর তাদেরকে ট্রেনযোগে ঢাকা সেনানিবাসে আনা হয়। এখানে আসার পর সবাইকে ১০ দিনের ছুটি প্রদান করা হয়েছিল। কিন্তু ছুটি শেষে ৬১ জন যোগদান করেন এবং ১৪ জন অনুপস্থিত থাকেন; যার মধ্যে ছিলেন বর্তমান ইরেজি ডেইলি স্টার পত্রিকার সম্পাদক জনাব মাহফুজ আনাম। হয়তো দীর্ঘদিন কঠোর প্রশিক্ষণের পরও সেনাবাহিনীতে কমিশন না পেয়ে ভবিষ্যৎ সম্পর্কে হতাশ হয়ে সেনাবাহিনীতে যোগদানের জন্য আরো প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে অনিচ্ছুক হয়ে চলে যান। সুতরাং ৬১ জনকে নিয়েই সেকেন্ড ওয়ার কোর্সের কঠিন প্রশিক্ষণের দ্বিতীয় অধ্যায় শুরু হয়। প্রথমেই তাদেরকে অন-জব প্রশিক্ষণের জন্য সেনাবাহিনীর বিভিন্ন ইউনিটে প্রেরণ করা হয়েছিল। সেথায় তারা মার্চ থেকে মে পর্যন্ত তিন মাসের প্রশিক্ষণ লাভ করেন। অতঃপর আরো দুই মাসের প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণের জন্য সেকেন্ড ওয়ার কোর্সের এসব ক্যাডেটের জন্য ঢাকা সেনানিবাসের কচুক্ষেতে মিলিটারি একাডেমির আদলে একটি অস্থায়ী ‘ব্যাটল স্কুল’ প্রতিষ্ঠা করা হয়। এর দায়িত্বে ছিলেন ৪৬ স্বতন্ত্র ব্রিগেড কমান্ডার কর্নেল জিয়াউদ্দিন, যিনি মুক্তিযুদ্ধে সেনাবাহিনীর কিংবদন্তী এবং পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে ‘দালাইলামা’ নামে পরিচিত ছিলেন। তিনি স্বয়ং অস্থায়ী ব্যাটল স্কুলে (২ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট কর্তৃক পরিচালিত) বর্ধিত প্রশিক্ষণের সার্বিক তত্ত্বাবধানে নিয়োজিত ছিলেন। কর্নেল জিয়াউদ্দিন স্বভাবগতভাবেই অত্যন্ত কঠিন ন্যায়নীতিবান ও প্রকৃত দেশপ্রেমিক অফিসার ছিলেন। তার একনিষ্ঠতায় ক্যাডেটদের জীবন কঠিন হলেও দীর্ঘ দুই মাসের যে প্রশিক্ষণ তারা পেলেন, তা দিয়ে তৈরি হলেন ইস্পাত কঠিন পেশাগত দক্ষ সামরিক অফিসার হিসেবে। ফলে সেকেন্ড ওয়ার কোর্সের মোট প্রশিক্ষণকাল ছিল মূর্তিতে চার মাস, ইউনিটে তিন মাস ও ব্যাটল স্কুলে দুই মাস; মোট ৯ মাসের পূর্ণাঙ্গ সামরিক প্রশিক্ষণ যা সামরিক ইতিহাসে বিরল ।

১৪। দ্বিতীয় বাংলাদেশ ওয়ার কোর্সের সমাপনী কুচকাওয়াজ : কঠোর ও অবর্ণনীয় প্রশিক্ষণ শেয়ে ৬১ জন ক্যাডেটের বহু লালিত স্বপ্নের দিন সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, ৬১ জনের মধ্যে ১৫ জনকে অযোগ্য ঘোষণা করে বাদ দেয়া হয়েছিল। যা হোক, ঢাকা সেনানিবাসের বর্তমান সিগন্যাল মসজিদের বিপরীতে ২ ইস্ট বেঙ্গলের প্রশিক্ষণ মাঠে সেকেন্ড ওয়ার কোর্সের সমাপনী কুচকাওয়াজের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশের অস্থায়ী মিলিটারি একাডেমির প্রথম পাসিং আউট প্যারেড অন্ষ্ঠুানের ব্যবস্থা করা হয়। দিনটি ছিল ১৯৭২ সালের ৫ আগস্ট। সরকারপ্রধান বঙ্গবন্ধু তখন চিকিৎসার জন্য লন্ডনে অবস্থান করছিলেন। তাই এ প্যারেডে প্রধান অতিথি ছিলেন রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী। এ ছাড়াও মন্ত্রিপরিষদের অধিকাংশ সদস্য, সিনিয়র রাজনীতিকগণ ও ঊর্ধ্বতন সামরিক ও বেসামরিক অফিসাররা উপস্থিত ছিলেন এ জৌলুসময় জমকালো কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে। বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জনের পর সামরিক বাহিনীর ইতিহাসে এটিই ছিল প্রথম পাসিং আউট প্যারেড। প্যারেড কমান্ডার ছিলেন ব্যাটালিয়ন সিনিয়র আন্ডার অফিসার (বিএসইউও) মোদাচ্ছের হোসেন খান বীর প্রতীক যিনি প্রথম স্থান অধিকারী হিসেবে রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে ‘সোর্ড অব অনার’ গ্রহণ করেন। উল্লেখ্য, মোদাচ্ছের ছিলেন পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমির ৪৭তম লং কোর্সের ক্যাডেট। স্বাধীনতা যুদ্ধের মাঝামাঝি সময়ে তিনি তার মায়ের অসুস্থতার কারণে ছুটিতে এসে পাকিস্তানে ফেরত না গিয়ে যোগদান করেন মুক্তিযুদ্ধে।

১৫। বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক র‌্যাংক ব্যাজ প্রদান : সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হলেও সেদিন সেকেন্ড ওয়ার কোর্সের ক্যাডেটগণ তাদের বহুলালিত স্বপ্ন সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট হিসেবে র‌্যাংক ব্যাজ পরিধান করতে পারেননি। কেননা সে সময়ে বঙ্গবন্ধু গলব্লাডার অপারেশনের জন্য লন্ডনে অবস্থান করছিলেন। সেখান থেকে তিনি নির্দেশ দেন যে, সেকেন্ড ওয়ার কোর্সের অফিসারগণকে যেন বঙ্গভবনে আমন্ত্রণ জানিয়ে ভোজসভার মাধ্যমে সম্মানিত করে রাষ্ট্রপতি স্বয়ং র‌্যাংক ব্যাজ পরিয়ে দেন। সে অনুযায়ী ৬ আগস্ট মহামান্য রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী ৪৬ জন সেকেন্ডে লেফটেন্যান্টের সে বহুল প্রতীক্ষিত কমিশন ও র‌্যাংক প্রদান করেন; যা বাংলাদেশ সামরিক বাহিনীর ইতিহাসে এক বিরল ঘটনা। এটা ছিল সেকেন্ড ওয়ার কোর্সের জন্য একটি উচ্চ সম্মানের সোনালী অধ্যায়। অতঃপর তাদেরকে সেনাবাহিনীর বিভিন্ন আর্মস ও সার্ভিসেস ইউনিটে বদলির আদেশ প্রদান করা হয়।

১৬। দ্বিতীয় বাংলাদেশ ওয়ার কোর্সের মোট আটজন কর্মকর্তা স্বাধীনতা যুদ্ধে তাদের অসামান্য ও দুঃসাহসিক অবদান রাখার জন্য বীরত্ব সূচক উপাধিতে ভূষিত হন। তারা ছিলেন- তিনজন ‘বীর বিক্রম’- মেজবাহ্ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম, কাজী কামাল উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম ও কামরুল হক স্বপন বীর বিক্রম (ক্র্যাক প্লাটুন থেকে ২ জন) ও ৫ জন ‘বীর প্রতীক’- মোদাচ্ছের হোসাইন খান বীর প্রতীক, সৈয়দ ইকরামুল হক খন্দকার বীর প্রতীক, এম হুমায়ুন কবির চৌধুরী বীর প্রতীক, রওশন ইয়াজদানী ভূঁইয়া বীর প্রতীক ও জাহাঙ্গীর ওসমান ভূঁইয়া বীর প্রতীক। স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে কমিশনপ্রাপ্ত এ ব্যাচের সব অফিসারই ছিলেন অসাধারণ মেধাবী ও দুর্দান্ত সাহসী। এ কোর্স থেকে মেজর জেনারেল হয়েছেন AL.M Fazlur Rahman; Jiban Kanai Das। এ কোর্সের মেধাবী দুঃসাহসী ও চৌকস অফিসারগণ বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও দেশ গঠনে অনন্য অবদান রেখেছেন। এ কোর্সের সবচেয়ে পরিচিত মুখ Major General Fazlur Rahman, যিনি বর্তমান বিজিবি বাহিনীর প্রধান ছিলেন এবং রৌমারি-পাদুয়া যুদ্ধের সিংহ পুরুষ হিসেবে বিশেষভাবে পরিচিত।

একটি মজার ব্যাপার হলো আমাদের মহান স্বাধীনতাযুদ্ধে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর দু’টি মাত্র কোর্সের সব অফিসারই অংশগ্রহণ করেন। সে কোর্স দু’টি হলো প্রথম ও দ্বিতীয় বাংলাদেশ ওয়ার কোর্স। বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ এবং ওয়ার কোর্স দু’টি তাই একই সূত্রে গাঁথা। অন্য কোনো কোর্সের এত বেশি অফিসার মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পাননি।

১৭। বর্তমান বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি (বিএমএ) স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় প্রতিষ্ঠিত অস্থায়ী মিলিটারি একাডেমিরই ধারাবাহিকতার ধারক ও বাহক। বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করার পেছনে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকা পালন করেছেন আমাদের পূর্বসূরি সামরিক কর্মকর্তারা। তাদের রক্ত, ঘামসহ বিশাল আত্মত্যাগ জড়িত আছে এ স্বাধীনতা ও আধুনিক সামরিক বাহিনীর সাথে। এত বিশাল ত্যাগ ও রক্তের ঋণ আমাদের দেশ ও জাতি কোনো দিন শোধ করতে পারবে না। তবে বাংলাদেশ সামরিক বাহিনীর প্রতি যথাযথ সম্মান, কৃতজ্ঞতা প্রকাশ, গৌরবময় ইতিহাস ও ঐতিহ্য স্মরণ করে এবং আমাদের পূর্বসূরি বীরদেরকে সম্মানিত ও দোয়া করার মাধ্যমে আমরা এক গর্বিত জাতিতে পরিণত হতে পারি। মহান আল্লাহ সুবাহানু ওয়া তায়ালা আমাদের সবার সহায় হোন।

লেখক : নিরাপত্তা ও ইতিহাস বিশ্লেষক, সমাজসেবক ও লেখক।
hoque2515@gmail.com


আরো সংবাদ



premium cement
আবারো ভারতের নির্বাচন তাপপ্রবাহের মুখে, সতর্ক করল আবহাওয়া ব্যুরো সব বন্দীকে ফিরিয়ে আনব : নেতানিয়াহু বালিয়াডাঙ্গীতে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে স্কুলছাত্রের মৃত্যু বোরোর ফলন ভালো হলেও উৎপাদন খরচ বেশি ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে আওয়ামী লীগ দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে : প্রধানমন্ত্রী আত্মরক্ষার অধিকার বৈধতা দেয় না গণহত্যাকে চার বিভাগে ৪৮ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিতে আগ্রহী সার্বিয়া ডিমের ডজন ১৫০ ছাড়িয়েছে, নাগালে আসছে না মাছ ও সবজি যুক্তরাষ্ট্র র‌্যাবের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করছে না : মার্কিন উপ-মুখপাত্র শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উদযাপিত

সকল