২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ব্যয় সমন্বয় করতে গিয়ে ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণে ব্যাংকের অনীহা

-

ব্যয় সমন্বয় করতে গিয়ে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে ঋণ বিতরণে ব্যাংকের অনীহা দেখা দিয়েছে। বড় শিল্পে ঋণ বিতরণে ব্যাংক যতটা আগ্রহ দেখাচ্ছে, ততটাই অনাগ্রহ দেখাচ্ছে ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে। করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের মধ্যে ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ থেকে শিল্প ও সেবা খাতে যেখানে ঋণ বিতরণ করা হয়েছে মোট লক্ষ্যমাত্রার ৭১ শতাংশ, সেখানে ক্ষুদ্র, কুটির ও মাঝারি শিল্পে বিতরণ করা হয়েছে মোট লক্ষ্যমাত্রার মাত্র সাড়ে ১৭ শতাংশ। ব্যাংকারদের মতে, ক্ষুদ্র শিল্পে ঋণ বিতরণ ও আদায়ে ব্যয় বেশি, সেখানে অন্য শিল্পে তুলনামূলক কম। কিন্তু ঋণের সুদহার উভয় ক্ষেত্রেই ৯ শতাংশের বেশি আদায় করা যাবে না। এ কারণেই ক্ষুদ্র শিল্পে ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে এ অনীহা দেখা দিয়েছে। ব্যাংকারোা জানিয়েছেন, ব্যাংক চায় যাকে ঋণ দেয়া হবে দিন শেষে তার কাছ থেকে সুদে আসলে ফেরত পাওয়ার নিশ্চয়তা। এ নিশ্চয়তা যেসব উদ্যোক্তার কাছ থেকে পাওয়া যাচ্ছে তাদেরকে ঋণ দেয়া হচ্ছে। কিন্তু ব্যাংক যদি কোনো প্রকল্প পর্যালোচনা করে দিন শেষে ঋণ ফেরত পাওয়ার নিশ্চয়তা না পায় তাহলে সেখানে ব্যাংক বিনিয়োগ করছে না। বর্তমানে করোনাকালে প্রকৃত ব্যবসায়ীরাও ঋণ নিতে চাচ্ছেন না। কারণ তাকে তো দিন শেষে ব্যবসা-পরিচালনা করে সুদে আসলে ব্যাংকের অর্থ ফেরত দিতে হবে। কিন্তু করোনার এই প্রাদুর্ভাবের সময় ব্যবসা-বাণিজ্যে এক ধরনের স্থবিরতা নেমে এসেছে। এ কারণে প্রকৃত ব্যবসায়ীরাও বিনিয়োগ নিতে চাচ্ছেন না। এরপরেও ব্যাংক প্রকৃত ব্যবসায়ীদের মধ্যে ঋণ দেয়ার জন্য সবসময়ই প্রস্তুত রয়েছে। এ কারণে বর্তমানে বেশির ভাগ ব্যাংকের হাতেই টাকা রয়েছে। অর্থ অলস বসিয়ে রাখলে তহবিল পরিচালন ব্যয় বেড়ে যাবে। আমানতকারীদের অর্থ দিন শেষে সুদে আসলে ফেরত দিতে হবে। এ কারণে বেশির ভাগ ব্যাংক সরকারকে ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছে।
একটি বেসরকারি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গতকাল নয়া দিগন্তকে জানিয়েছেন, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ক্রেডিট কার্ড ছাড়া সব ঋণের সুদহার ৯ শতাংশ বেঁধে দিয়েছে। একজন বড় ভালো গ্রাহককে ৫০০ কোটি টাকা ঋণ দিয়ে তার কাছ থেকে ঋণ ফেরত পেতে যেমন বেগ পেতে হয় না, আবার পরিচালন ব্যয়ও কম হয়। সেখানে ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাতে ৫০০ কোটি টাকা ঋণ দিতে হলে কমপক্ষে দেড় থেকে দুই হাজার উদ্যোক্তার মধ্যে তা বিতরণ করতে হবে। এ দুই হাজার উদ্যোক্তার কাছে ঋণ বিতরণ থেকে শুরু করে ঋণ আদায় পর্যন্ত জনবলের পাশাপাশি সময় ক্ষেপণও হয়। এ কারণে এ শ্রেণীর উদ্যোক্তাদের মধ্যে ঋণ বিতরণ করতে অন্য ঋণের তুলনায় ব্যাংকের পরিচালন ব্যয় বেড়ে যায়। কিন্তু বড় ও ছোট সব ঋণের ক্ষেত্রেই সুদহার অভিন্ন অর্থাৎ ৯ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। এর ফলে ব্যাংকের পরিচালন ব্যয় সমন্বয় করতে গিয়ে ব্যাংকগুলো ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণ করতে অনীহা দেখাচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, বৃহৎ শিল্প ও সেবা খাতে ৩০ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা হয় গত মার্চে। গত ২১ আগস্ট পর্যন্ত এ বৃহৎ শিল্প ও সেবা খাতে ঋণ বিতরণ করা হয়েছে ২৩ হাজার ৪০০ কোটি টাকা, যা মোট লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ৭১ শতাংশ। সেখানে কুটির, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ঋণে বিতরণ করা হয়েছে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা, যা মোট ২০ হাজার কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রার সাড়ে ১৭ শতাংশ। কৃষিভিত্তিক শিল্প খাতে ঋণ দিতে ৫ হাজার কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন স্কিম গঠন করা হয়েছে। জুলাই পর্যন্ত এ তহবিল থেকে বিতরণ করা হয়েছে মাত্র ৪৯৭ কোটি টাকা। প্যাকেজ বাস্তবায়নের হার মাত্র ১০ শতাংশ। নি¤œ আয়ের পেশাজীবী, কৃষক ও প্রান্তিক পর্যায়ের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য ৩ হাজার কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়। ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে ৯ শতাংশ সুদে এ ঋণ বিতরণ করার কথা। এ প্যাকেজ থেকে বিতরণ করা হয়েছে মাত্র ২৭৬ কোটি টাকা। প্যাকেজ বাস্তবায়নের হার মাত্র সাড়ে ৯ শতাংশ।


আরো সংবাদ



premium cement
থামছে না পুঁজিবাজারে পতন বিনিয়োগকারীদের আর্তনাদ ভারতের লোকসভা নির্বাচনে ভোট শুরু: নাগাল্যান্ডে ভোটার উপস্থিতি প্রায় শূন্য কারাগার এখন বিএনপি নেতাকর্মীদের স্থায়ী ঠিকানা: রিজভী আন্দোলনে ব্যর্থ বিএনপির হাল ধরার কেউ নেই : ওবায়দুল কাদের পাবনায় ভারতীয় চিনি বোঝাই ১২টি ট্রাকসহ ২৩ জন আটক স্বচ্ছতার সাথে সরকারি অনুদানের চলচ্চিত্র বাছাই হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী মিয়ানমার বিজিপির আরো ১৩ সদস্য পালিয়ে এলো বাংলাদেশে শ্যালকের অপকর্মে দুঃখ প্রকাশ করলেন প্রতিমন্ত্রী পলক মন্দিরে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ তুলে ২ ভাইকে হত্যা ইরানে ইসরাইলি হামলার খবরে বাড়ল তেল সোনার দাম যতই বাধা আসুক ইকামাতে দ্বীনের কাজ চালিয়ে যাবো : ডা: শফিকুর রহমান

সকল