২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সড়ক তৈরির চেয়ে বাঁক সারতেই খরচ বেশি

নতুন সড়কে কিলোমিটারে খরচ ৪.৬৮ কোটি টাকা আর বাঁক সোজায় ৫.২৬ কোটি
-

উন্নয়ন কার্যক্রমের বিভিন্ন খাতে খরচের পরিমাণ নিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে। সেখানে কেনাকাটা, নির্মাণ খাতে ব্যয়ের অঙ্ক নিয়ে আছে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা ও অভিযোগ। এরই মধ্যে নতুন করে সড়ক নির্মাণের চেয়ে বিদ্যমান সড়কের বাঁক সরলীকরণ বা সোজা করতেই ব্যয় বেশি দেখা যাচ্ছে। দেশের গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক মহাসড়ক এক কিলোমিটার নির্মাণে লাগছে ৪ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। আর এই এলাকায় বিদ্যমান সড়কের বাঁক সোজা করতে কিলোমিটারে খরচ ধরা হয়েছে ৫ কোটি ২৬ লাখ টাকা। পাশাপাশি দেখা যাচ্ছে, মহাসড়কে কালভার্ট নির্মাণের চেয়ে সম্প্রসারণের পার্থক্যটা অনেক বলে পরিকল্পনা কমিশনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সরকার বিভিন্ন সড়ক ও মহাসড়ক উন্নয়ন বা সংস্কারের জন্য কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। সেই কার্যক্রমের অংশ হিসেবে আরিচা (বরাঙ্গাইল)-ঘিওর-দৌলতপুর-নাগরপুর-টাঙ্গাইল আঞ্চলিক মহাসড়কটি সম্প্রসারণ ও সংস্কারের জন্য এক হাজার ৬৪২ কোটি ৯২ লাখ টাকা ব্যয়ের একটি প্রকল্প অনুমোদনের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়। সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে এই প্রকল্পটির বাস্তবায়ন মেয়াদ ধরা হয়েছে তিন অর্থবছর (জুলাই ২০ থেকে ২০২৩ সালের জুন)। প্রকল্পের উদ্দেশ্য হলো, মহাসড়কটি যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ করে কার্যকরী রুট হিসেবে গড়ে তোলা, মহাসড়কের ঝুঁকিপূর্ণ ও ক্ষতিগ্রস্ত সেতুগুলো পুনর্নির্মাণের মাধ্যমে যানবাহন চলাচলের জন্য নিরাপদ করা। প্রথমবার প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটিতে পাঠানো ডিপিপিতে খরচ দেখানো হয় ৭৯২ কোটি ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। এখন ২০২০ সালে জুনে আবার পিইসিতে প্রকল্পটি পাঠানো হয়। তাতে প্রথমবারের তুলনায় ব্যয় ১০৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ বা ৮৫০ কোটি ৮৮ লাখ টাকা বেশি ধরে প্রাক্কলন করা হয়Ñ এক হাজার ৬৪২ কোটি ৯২ লাখ টাকা।
প্রকল্পের আওতায় কার্যক্রমগুলো হলোÑ ১৩২ হেক্টর জমি অধিগ্রহণ, ২৪.৪৯ লাখ ঘনমিটার সড়কের বাঁধে মাটির কাজ, ১৬.৬৭ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ, ২৩.০৬ কিলোমিটার পেভমেন্ট প্রশস্তকরণ, মজবুতীকরণ, হার্ডশোল্ডার, ৩.৩০ কিলোমিটার বিদ্যমান সড়ক উঁচুকরণ, ৬.৩৭ কিলোমিটার বাঁক সরলীকরণ, সার্ফেসিং, সেতু, কালভার্ট নির্মাণ, আন্ডারপাস নির্মাণ, সড়কে বিভিন্ন সাইন বসানো ইত্যাদি।
পিইসির জন্য তৈরি কার্যপত্র ও প্রস্তাবনার খরচের হিসাবগুলোর তথ্যানুযায়ী, নতুন করে ১৬ দশমিক ৬৭ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ করা হবে। এর জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৮ কোটি টাকার বেশি। ফলে প্রতি কিলোমিটারে নির্মাণ খরচ ৪ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। এই দর নতুন রেট শিডিউল অনুযায়ী। কিন্তু চলমান মুন্সীগঞ্জের প্রকল্পে কিলোমিটারে ব্যয় হচ্ছে ৩ কোটি ৫৯ লাখ ২৯ হাজার টাকা। সে হিসাবের সাথে তুলনা করলে ব্যয় এক কোটি ৯ লাখ টাকা বেশি। প্রকল্পে ৬ দশমিক ৩৭ কিলোমিটার বাঁক রয়েছে। এটাকে সোজা করার জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৩ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। ফলে প্রতি কিলোমিটারে খরচ হবে ৫ কোটি ২৫ লাখ ৩৮ হাজার টাকা। নতুন সড়ক নির্মাণের চেয়ে বাঁক সোজা করতে খরচ কিলোমিটারে ৫৮ লাখ টাকা বেশি।
এই মহাসড়কে ২১টি কালভার্ট নির্মাণ করা হবে। যার দৈর্ঘ্য ১৩২ মিটার। এর জন্য ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়েছে ৯ কোটি ২৪ লাখ টাকা। ফলে কিলোতে খরচ হবে ৭০ কোটি টাকা। আর কালভার্ট সম্প্রসারণ করা হবে ৭টি; যার দৈর্ঘ্য মাত্র ৬২ মিটার। এই কাজে ব্যয় ধরা হয়েছে ৬ কোটি ৬৯ লাখ ৬০ হাজার টাকা। ফলে কিলোতে খরচ হবে ১০ কোটি ৮০ লাখ টাকা। বিশ্লেষণে দেখা যায়, নির্মাণের চেয়ে সম্প্রসারণে খরচ প্রতি মিটারে ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা বেশি।
জমি অধিগ্রহণ করা হবে ১৩২ দশমিক ৩৫ হেক্টর যাতে ব্যয় হবে ৬৯৩ কোটি ৮ লাখ ৩২ হাজার টাকা। প্রতি হেক্টরের মূল্য হবে ৫ কোটি ২৩ লাখ ৬৭ হাজার টাকা। প্রকল্পে ২৪ দশমিক ৪৯ কিলোমিটার সড়কে মাটির বাঁধ নির্মাণ করা হবে। এতে খরচ হবে ১০০ কোটি ৪০ লাখ ৯০ হাজার টাকা। প্রতি কিলোমিটারে খরচ হচ্ছে চার কোটি ১০ লাখ টাকা। এখানে চলমান সমজাতীয় মুন্সীগঞ্জের প্রকল্পে ব্যয় হচ্ছে ৩ কোটি ৯ লাখ টাকা। আর খুলনা জোনের একটি প্রকল্পে ৯৭ লাখ ৮২ হাজার টাকা। এখানে মুন্সীগঞ্জের সাথে ব্যয় তফাৎ এক কোটি ১ লাখ টাকা।
ডিপিপিতে দেয়া তুলনামূলক দর অনুযায়ী, প্রস্তাবিত প্রকল্পে সার্ফেসিং (১০.৩০ মিটার প্রস্থে) ৪৯.৪০ কিলোমিটার হবে। যার খরচ ১৮২ কোটি ৯৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা। ফলে প্রতি কিলোমিটারে ৩ কোটি ৭০ লাখ ৩২ হাজার টাকা। যেখানে চলমান প্রকল্পে ২ কোটি ১৪ লাখ ১৮ হাজার টাকা ও ৬৫ লাখ ৪ হাজার টাকা।
পরিকল্পনা কমিশন বলছে, এই কাজের মধ্যে টাঙ্গাইল অংশে সড়কের পরিমাণ হলো ৪০ কিলোমিটার এবং মানিকগঞ্জ অংশের পরিমাণ হলো সাড়ে ১৮ কিলোমিটার। ভূমি অধিগ্রহণের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ব্যয় প্রাক্কলন ও ভূমি অধিগ্রহণের পরিমাণ অনেক বেশি। টাঙ্গাইলে বাইপাস থাকার পরও কাগমারী থেকে নগরজলফই পর্যন্ত সাড়ে ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি বাইপাস নির্মাণ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। প্রকল্পের ব্যয় প্রাক্কলনের সময় চলমান সমজাতীয় প্রকল্পের দরের সাথে সামঞ্জস্য বজায় রাখা দরকার বলে পরিকল্পনা কমিশন অভিমত দিয়েছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি : মিশা সভাপতি, ডিপজল সম্পাদক ফিলিপাইনে ব্রহ্মস পাঠাল ভারত, ৩৭৫ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি চীনের মোকাবেলায় নতুন ডিভিশন ভারতীয় সেনাবাহিনীতে! আবারো চেন্নাইয়ের হার, ম্লান মোস্তাফিজ 'কেএনএফ' সন্ত্রাস : সার্বভৌম নিরাপত্তা সতর্কতা অর্থনীতিতে চুরি : ব্যাংকে ডাকাতি পাকিস্তানে আফগান তালেবান আলেম নিহত যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্য না করলে এ বছরই রাশিয়ার কাছে হারতে পারে ইউক্রেন : সিআইএ প্রধান রাশিয়ার সামরিক শিল্পক্ষেত্রে প্রধান যোগানদার চীন : ব্লিংকন ইরাকে সামরিক ঘাঁটিতে 'বিকট বিস্ফোরণ' শেখ হাসিনা সব প্রতিবন্ধকতা উপড়ে ফেলে দেশকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

সকল