২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`
ছুটির পর পুঁজিবাজারে প্রথম সপ্তাহ

বিনিয়োগকারীরা হারালেন দুই হাজার কোটি টাকার ওপরে

-

মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে ৬৬ দিন বন্ধ থাকার পর গত রোববার থেকে চালু হয়েছে দেশের দুই পুঁজিবাজারের লেনদেন। তবে প্রথম সপ্তাহ বিনিয়োগকারীদের জন্য ভালো কাটেনি। শেয়ারের দাম কমার কারণে এ সময় বিনিয়োগকারীরা দুই হাজার কোটি টাকার ওপরে পুঁজি হারিয়েছেন। সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসের চার দিনই সূচকের পতন হয়েছে। এ সময় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৫৫ পয়েন্ট নেমে গেছে। একই অবস্থা চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও।
জানা যায়, করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবেলার অংশ হিসেবে সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করলে গত ২৬ মার্চ থেকে শেয়ারবাজারে লেনদেন বন্ধ করে দেয়া হয়। সরকার ছুটি বাড়ালে তার সাথে তালমিলিয়ে শেয়ারবাজারও বন্ধ রাখার সময় বাড়ানো হয়। এতে ২৬ মার্চ থেকে ৩০ মে পর্যন্ত টানা ৬৬ দিন বন্ধ থাকে শেয়ারবাজার। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর গত ২৮ মে শেয়ারবাজারে আবার লেনদেন চালুর অনুমতি দেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমতি পেয়ে ৩১ মে থেকে আবার শেয়ারবাজারে লেনদেন চালু করে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই)।
লেনদেন শুরুর প্রথম দিনই দুই বাজারে মূল্যসূচকের বড় উত্থান হয়। এতে বিনিয়োগকারীরা ভালো বাজারের স্বপ্ন দেখতে থাকেন। কিন্তু পরের দিনই পতনের কবলে পড়ে শেয়ারবাজার, যা সপ্তাহের পরের তিন কার্যদিবসও অব্যাহত থাকে। এতে সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে চার কার্যদিবসেই দরপতন হয়।
এই দরপতনের কবলে পড়ে সপ্তাহটিতে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ২ হাজার ২৬৯ কোটি টাকা। ডিএসই ওয়েবসাইটে দেখা যায়, রোববার বাজারে লেনদেন শুরুর আগে ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৩ লাখ ১২ হাজার ২৩৫ কোটি টাকা। গত বৃহস্পতিবার লেনদেনে শেষে বাজার মূলধন কমে দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৯ হাজার ৯৬৬ কোটি টাকা। বাজার মূলধন কমার অর্থ হলো তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম ওই পরিমাণ কমেছে। অর্থাৎ শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার কারণে বিনিয়োগকারীদের সম্মিলিতভাবে ওই পরিমাণ লোকসান হয়েছে।
এ দিকে বিনিয়োগকারীরা বড় অঙ্কের অর্থ হারানোর পাশাপাশি সব ক’টি মূল্যসূচকের পতন হয়েছে। ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৫৫ পয়েন্ট। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক ৯ পয়েন্ট এবং ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক ৫ পয়েন্ট কমেছে।
সব সূচকের পতনের পাশাপাশি দেখা দিয়েছে লেনদেন খরা। সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবসে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ৬৯১ কোটি ৮৯ লাখ টাকা। এতে প্রতি কার্যদিবসে গড়ে লেনদেন হয় ১৩৮ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। শেয়ারবাজারে লেনদেন বন্ধ হওয়ার আগে শেষ সপ্তাহে মোট লেনদেন হয় ৮৮৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা। এতে গড়ে প্রতি কার্যদিবস লেনদন হয় ২২১ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। এ হিসাবে আগের সপ্তাহের তুলনায় গত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ ৩৫ শতাংশ কমেছে।
অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সপ্তাহব্যাপী প্রধান সূচক সিএএসপিআই কমেছে ৯১ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৭৯ শতাংশ। বাজারটির ভালো সূচক সিএসই৩০ ও কমেছে শূন্য দশমিক ৬৯ শতাংশ। এ সময় ২১৮ কোম্পানির লেনদেন হয়। যার মধ্যে ৩০টি বাড়লেও কমেছে ৫৫টির। বাজারটিতে সপ্তাহব্যাপী মোট ১২৩ কোটি ৩০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।


আরো সংবাদ



premium cement