২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

মাদরাসাছাত্রদের বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করল পুলিশ

রাজধানীতে মাদরাসার ছাত্রদের প্রতিবাদ বিক্ষোভে পুলিশ লাঠিচার্জ করে : নয়া দিগন্ত -

রাজধানীতে মাদরাসাছাত্রদের বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে পুলিশ। গতকাল জুমার নামাজের পর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম থেকে মিছিল নিয়ে শান্তিনগরে গেলে পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলে পুলিশ সেখান থেকে ২০-২৫ জন ছাত্রকে আটক করে।
জানা যায়, গতকাল জুমার নামাজের পর বিভিন্ন মাদরাসা থেকে ছাত্ররা বায়তুল মোকাররমে জড়ো হয়। নামাজ শেষে তারা বিক্ষোভ মিছিল বের করে। এ সময় দেশের বিভিন্ন স্থানে ভাস্কর্য নির্মাণের প্রতিবাদে স্লোগান দেয়। তারা মিছিল নিয়ে পল্টন মোড় হয়ে বিজয়নগর হয়ে শান্তিনগরে যায়। সেখানে পুলিশ বাধা দিলে সংঘর্ষ শুরু হয়।
শিক্ষার্থীরা জানায়, মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ নামের একটি সংগঠন সম্প্রতি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির সৈয়দ ফয়জুল করীম এবং বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মামুনুল হককে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেছে এবং তাদের কুশপুত্তলিকা দাহ করেছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে বিভিন্ন মাদরাসার শিক্ষার্থীরা বায়তুল মোকাররমে বিক্ষোভ মিছিল করতে এসেছিলেন; কিন্তু পুলিশ তাদের বাধা দিয়েছে। এ সময় পুলিশ তাদের ২০-২৫ জনকে আটক করেছে।
পরে এ ব্যাপারে মাওলানা মামুনুল হক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক প্রতিক্রিয়া বলেন, শিরকের প্রতীক মূর্তির বিরুদ্ধে কথা বলায় আমি যখন জুলুমের শিকার, এক মজলুমের পক্ষে দাঁড়াতে হাজারো তৌহিদি জনতা রাজপথে নেমেছে। তাদের এ বিক্ষোভ ছিল তৌহিদি চেতনার বহিঃপ্রকাশ। ছিল একত্ববাদ প্রতিষ্ঠা ও শিরকের প্রতীকের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানানোর কর্মসূচি। এই সাহসী জনতাকে সশ্রদ্ধ সালাম! তাদের ওপর নির্মম লাঠিচার্জ ও নির্যাতনের দৃশ্য জাতি দেখেছে। বিক্ষোভকারী প্রায় অর্ধশত তৌহিদি জনতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদের মুক্তি না দিলে বিক্ষোভ সারা দেশে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এক জুলুমের প্রতিবাদে হাজার মানুষের বিক্ষোভ হলে পরবর্তী জুলুমের প্রতিবাদে লাখো জনতার বাঁধভাঙা বিক্ষোভ নেমে আসবে রাজপথে, এটাই স্বাভাবিক। দায়িত্বশীল মহলের যথাযথ পদক্ষেপের প্রতীক্ষায় রইলাম।
ভাস্কর্যবিরোধী মিছিলে পুলিশি হামলার নিন্দা : মূর্তিবিরোধী মিছিলে পুলিশের হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম। গতকাল এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, মূর্তিবিরোধী কোনো কর্মসূচিতে পুলিশি হামলা মেনে নেয়া যায় না। তিনি অবিলম্বে গ্রেফতারকৃত মাদরাসাছাত্র এবং ঈমানদার মুসল্লিদের মুক্তির দাবি জানান।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সংবাদদাতা জানান, জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে মিছিলে মাদরাসা ছাত্রদের ওপর পুলিশের হামলা ও গ্রেফতারের প্রতিবাদে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া। এ ঘটনায় গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে বিপুল সংখ্যক কওমি মাদরাসার ছাত্ররা জেলা শহরের প্রধান সড়ক টি এ রোডে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। এ সময় শহরের প্রধান সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যানার ও ফেস্টুনে অগ্নিসংযোগ করে।
এ সময় থানা ব্রিজের সামনে মুফতি রাকিবুল হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সভায় বক্তারা আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতারকৃত ছাত্রদের মুক্তি না দিলে হরতালসহ কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন।


আরো সংবাদ



premium cement