২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`
জালিয়াতি ও ভুলে ভরা ঢাবি অধ্যাপকের গবেষণা

এমফিলের থিসিসে পিএইচডি

-

গবেষণার শিষ্টাচার বা নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে একই গবেষণা পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা এমফিল এবং পিএইচডিতে ব্যবহার করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বাহাউদ্দিন। শিরোনাম পরিবর্তন করে আগের অংশ পরে এবং পরের অংশ আগে উল্লেখ করে একই লেখা দিয়ে নিয়েছেন দুই ডিগ্রি। রেফারেন্স ছাড়া অন্যের লেখা তুলে দিয়ে যেমন প্লেজারিজম করেছেন, তেমনি নিজের লেখায় ব্যবহৃত উদ্ধৃতি-কবিতা-বক্তব্যের কোনো রকম উল্লেখ ছাড়া ব্যবহার করে নেন প্রতারণার আশ্রয়। ফলে যা এমফিল থিসিস, অনেকাংশে তাই পিএইচডি। এর মাধ্যমে একই পরিশ্রমে দুটো ডিগ্রি নিয়ে ঈর্ষণীয় সাফল্যের মতো দ্রুততম সময়ে লেকচারার থেকে অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পেয়েছেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গবেষণা শেষ করতেও তাড়াহুড়া করেছেন তিনি। এ নিয়ে আরো ছয় মাস কাজ করার কথা বললেও তা না করে উল্টো নিজের তত্ত্বাবধায়কের চরিত্র হনন করেছেন বলে অভিযোগ।
অধ্যাপক বাহাউদ্দিনের এমফিল থিসিসের তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন বিভাগের বর্তমান অধ্যাপক এবং তৎকালীন সহযোগী অধ্যাপক ড. কে এম সাইফুল ইসলাম খান। আর পিএইচডিতেও তিনি তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন। পরে পর্যাপ্ত সময়ের অভাবে সহ-তত্ত্বাবধায়ক নিতে বলেন। পিএইচডির সহ-তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন বর্তমান অধ্যাপক এবং তৎকালীন সহযোগী অধ্যাপক ড. তারিক জিয়াউর রহমান সিরাজী। এমফিলের গবেষণা প্রকাশের তারিখ দেয়া হয়েছে ডিসেম্বর ২০০৮ সাল আর পিএইচডি প্রকাশের সাল ডিসেম্বর ২০১১। এমফিল গবেষণা গ্রন্থের মোট পৃষ্ঠা ২০৩ এবং পিএইচডি গবেষণা গ্রন্থের মোট পৃষ্ঠা ২৮৭। জালিয়াতি সংক্রান্ত প্রমাণাদি এই প্রতিবেদকের কাছে রয়েছে।
এমফিল থিসিসের শিরোনাম ‘বাংলাদেশে মরমী সাহিত্য ও রূমী চর্চায় ছৈয়দ আহমদুল হকের অবদান’। অন্য দিকে পিএইচডির শিরোনাম ‘সৈয়দ আহমদুল হক ও বাংলাদেশে সুফিবাদ’। আহমদুল হকের নামের বানানে এমফিল থিসিসে ছৈয়দ এবং পিএইচডি থিসিসে সৈয়দ লেখা হয়েছে। একজন প্রখ্যাত ব্যক্তির নামের বানান দু’ভাবে নিশ্চয়ই সঠিক নয়। একজন গবেষক হিসেবে তবে উচিত ছিল সঠিক নামটি উভয় থিসিসে লিপিবদ্ধ করা। আর যদি দুটো নাম কোনো কারণে ব্যবহৃত হয়ে থাকে তাহলে তার কারণ ব্যাখ্যা দেয়া। ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক একই সাথে এমফিল ও পিএইচডি গবেষক, যার জীবন ও কর্মের ওপর এমফিল ও পিএইচডি থিসিস লিখলেন তার নামটাই সঠিকভাবে লিখতে পারলেন না। এ ছাড়া থিসিসে প্রচুর বানান ভুল রয়েছে। একই শব্দ কোথাও ‘-িকার’ আবার কোথাও ‘ী-কার’, কোথাও ‘ ু-কার’, কোথাও ‘ ূ কার’, কোথাও ‘ছ’, আবার একই শব্দে কোথাও ‘স’ ব্যবহার করেছেন। একই রেফারেন্স এমফিল থিসিসে পৃষ্ঠা নাম্বার ব্যবহার করেছেন এক, পিএইচডি থিসিসে আরেক। যা সম্ভব নয়। আবার কোথায় দুই বা পাঁচ লাইনের উদ্ধৃতির জন্য রেফারেন্স উল্লেখ করেছেন ১০ পৃষ্ঠা। এসব অসঙ্গতির জন্য গবেষণার মানের কথা বাদ দিলেও নৈতিক স্খলনের বিষয়টি কোনোভাবেই এড়িয়ে যাওয়া যায় না।
এ দিকে পিএইচডির অনুসন্ধান করতে গিয়ে প্রশ্ন উঠেছে এই অধ্যাপকের এমফিল গবেষণার বৈধতা নিয়েও। এমফিল গবেষণার ১৩ নম্বর পৃষ্ঠা থেকে ১৭২ নম্বর পৃষ্ঠা পর্যন্ত অন্তত (যেগুলো চিহ্নিত করা গেছে) ৩৯টি কবিতা-কবিতাংশ ও উদ্ধৃতি রেফারেন্স উল্লেখ না করে নিজের নামে চালিয়ে দিয়েছেন। এসব উক্তি ও কবিতার অনেকগুলো আবার হুবহু কপি করেছেন পিএইচডি থিসিসেও। এ ছাড়াও পিএইচডি থিসিসের ২২ নম্বর পৃষ্ঠা থেকে ২৩৯ নম্বর পৃষ্ঠা পর্যন্ত অন্তত ১৬টি উক্তি ও উদ্ধৃতি চিহ্নিত করা গেছে যেগুলোর ক্ষেত্রে কোনো রেফারেন্স উল্লেখ করেননি। এর মাধ্যমে শেখ সাদী, রুমি, ইকবাল, শেকসপিয়ার, লালন, রবীন্দ্রনাথ ও নজরুলের মতো মনীষীদের লেখা নিজের নামে চালিয়ে দিয়েছেন।
এ দিকে পিএইচডি থিসিসের অন্তত ১৬টি উদ্ধৃতি, কবিতা, বক্তৃতা যা নিজের নামে চালিয়ে দিয়েছেন তা পৃষ্ঠা হিসেবে অন্তত ৪৬ পৃষ্ঠা। আবার তার অনেকগুলোর ক্ষেত্রেই পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা এমফিলের লেখা থেকে হুবহু তুলে দিয়েছেন কোনো রকম রেফারেন্স উল্লেখ না করেই।
গবেষণা দুটোর শিরোনামের দিকে লক্ষ করলে এর বিষয়বস্তুর মধ্যে শিরোনাম ছাড়া খুব বেশি পরিবর্তন পাওয়া যায় না। বিশ্লেষকদের মতে, সুফিবাদ মরমিবাদ ভিন্ন কিছু নয়। তবে এর একটু বিশেষ পার্থক্য রয়েছে। তাই কেবল শিরোনামে পরিবর্তন এনে (আগের অংশ পরে এবং পরের অংশ আগে উল্লেখ করে) একই লেখা দিয়ে দুই ডিগ্রি নিয়েছেন এমন অভিযোগ করেছেন বিভাগের অন্য শিক্ষকরা।
একই রেফারেন্সে এমফিল থিসিসের ২২ পৃষ্ঠায় ও পিএইচডি থিসিসের ৩৯-৪০ পৃষ্ঠায় মরমীবাদের একই সংজ্ঞায় এমফিল থিসিসের তিন জায়গায় মরমী (ঈ-কার) বানানে লিখলেও পিএইচডি থিসিসে মরমি (ই-কার) বানানে লিখেছেন। অনুরূপ ঘটেছে এমফিল থিসিসের ২৩ পৃষ্ঠা ও পিএইচডি থিসিসের ৪০ পৃষ্ঠায়। এখানে একই রেফারেন্স এমফিল থিসিসে পৃষ্ঠা-২৩ লিখলেও পিএইচডি থিসিসে লিখেছেন পৃষ্ঠা-২৪। এমফিল থিসিসের ২৭ ও পিএইচডি থিসিসের ৩৭ পৃষ্ঠায় অনুরূপ ঘটেছে কমপক্ষে তিনবার। এমফিলের ২৭ পৃষ্ঠায় যে রেফারেন্স উল্লেখ করা হয়েছে পিএইচডির ৩৮ পৃষ্ঠায় একই উদ্ধৃতি শব্দ, বাক্য আলাদা। এমফিল ২৭ পৃষ্ঠার উদ্ধৃতি পিএইচডির ৩৯ পৃষ্ঠায় রেফারেন্স ছাড়াই উল্লেখ করা হয়েছে। এমফিল ২৭ পৃষ্ঠার একটি উদ্ধৃতি পিএইচডির ৩৭ পৃষ্ঠায় উল্লেখ করা হলেও পৃষ্ঠা নম্বরে গরমিল, রেফারেন্সটিতে এমফিলে আত্মপরিচয় এর স্থলে আদ্মপরিচয় লেখা হয়েছে। এমফিল ২৮ পৃষ্ঠার চারটি রেফারেন্স পিএইচডি থিসিসের ৩৭ পৃষ্ঠায় ব্যবহৃত হলেও উভয় থিসিসে শব্দের ভিন্নতা লক্ষণীয়।
রেফারেন্সে অসঙ্গতি : এমফিল ৩১ পৃষ্ঠায় একই রেফারেন্স ২৫-২৬ পৃষ্ঠা উল্লেখ করলেও পিএইচডি ৪৫ পৃষ্ঠায় পৃষ্ঠা ২৬ উল্লেখ করা হয়। এই পৃষ্ঠায় তিনি লিখেন, ‘মুসলমানেরা বেদবাক্যের মতই নীরবেই স্বীকার করে নিয়েছেন’, বাক্যটি অসংলগ্ন বলছেন সংশ্লিষ্টরা। মুসলমান হলে সে বেদবাক্য মানবে কেন? একই রেফারেন্সে অনেক শব্দেরও ভিন্নতা লক্ষণীয়। এমফিল ৩৩-৩৪ পৃষ্ঠায় পৃষ্ঠা ৪৭২-৪৮১ উল্লেখ করা হলেও পিএইচডি ৪৯-৫০ পৃষ্ঠায় একই রেফারেন্সে পৃষ্ঠা ৪৮১ উল্লেখ করা হয়েছে। ১০ লাইনের একটি উদ্ধৃতি ১০ পৃষ্ঠাজুড়ে হওয়া সম্ভব নয়, হলেও দুই জায়গায় একই হওয়ার কথা। এমফিল ৩৪ পৃষ্ঠায় এবং পিএইচডি ৫২ পৃষ্ঠায় দুই লাইনের উদ্ধৃতি যার এমফিলে পৃষ্ঠা ১৫০-১৫১ হলেও পিএইচডিতে পৃষ্ঠা ১৫১ উল্লেখ করা হয়েছে। এমফিলের ৩৪-৩৫ পৃষ্ঠায় পিএইচডির ৫৬ পৃষ্ঠায় দুই লাইনের একটি উদ্ধৃতির জন্য রেফারেন্স উল্লেখ করা হয়েছে ১০ পৃষ্ঠা আর পিএইচডি থিসিসে উল্লেখ করা হয়েছে ১ পৃষ্ঠা। ২ লাইনের উদ্ধৃতি ১০ পৃষ্ঠাজুড়ে দেয়া, তাও আবার দুই জায়গায় একই হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। এমফিলের ৩৬ পৃষ্ঠায় এবং পিএইচডির ৫৮-৫৯ পৃষ্ঠায় এমফিলে সাত লাইনের উদ্ধৃতির জন্য রেফারেন্স উল্লেখ করা হয়েছে ৮ পৃষ্ঠা, ৭ লাইনের উদ্ধৃতি ৮ পৃষ্ঠাজুড়ে হওয়া সম্ভব নয়, হলেও দুই জায়গায় একই হওয়ার কথা। কিন্তু এমফিলের ৪৩ পৃষ্ঠায় এবং পিএইচডির ৬৪ পৃষ্ঠায় শব্দে বর্ণে পার্থক্য, রেফারেন্সের পৃষ্ঠা সংখ্যায় অমিল।
এমফিলের ৮৬-৮৯ পৃষ্ঠায় এবং পিএইচডির ১০০-১০৪ পৃষ্ঠায় (ছৈয়দ আহমদুল হকের ৯০তম জন্মদিন স্মারক-২০০৬, আল্লামা রুমী সোসাইটি, আনজুমানে ফার্সী বাংলাদেশ, ২ সেপ্টেম্বর, ২০০৬, ঢাকা, পৃষ্ঠা-৪৬) রেফারেন্সে কিছু বর্ণনা আর একটি কবিতা লেখা হয়। অথচ উক্ত স্মারকের ৪৬তম পৃষ্ঠায় এমন কোন কবিতা বা বর্ণনার অস্তিত্ব নাই। পিএইচডির ১৩৯ পৃষ্ঠায় রেফারেন্সসহ যে উদ্ধৃতিটি ব্যবহার করা হয়েছে এমফিলের ১০৬ পৃষ্ঠায় সেটা রেফারেন্স ছাড়া ব্যবহার করা হয়েছে। এসব জায়গায় কমপক্ষে চারটি ইংরেজি শব্দের বানান ভুল পাওয়া যায়। এমফিলের ১১৩ পৃষ্ঠায় ও পিএইচডির ১৩৩ পৃষ্ঠায় অল্প কিছু পরিবর্তন ছাড়া একই উদ্ধৃতি পিএইচডিতে রেফারেন্স থাকলেও এমফিলে রেফারেন্স নেই। এমফিলের ১১৫ পৃষ্ঠায় ও পিএইচডির ১৫০ পৃষ্ঠায় বর্ণনায় এম ফিল থিসিসে রেফারেন্স থাকলেও পিএইচডিতে রেফারেন্স নেই।
এমফিল থিসিসের রেফারেন্সবিহীন কোটেশন : ১৩ নম্বর পৃষ্ঠায় বর্ণিত ১১-১৭ লাইনগুলো ‘বাংলার রুমী সৈয়দ আহমদুল হক স্মারকগ্রন্থ ২০১১ এর ২৩ নম্বর পৃষ্ঠায় হুবহু কোন প্রকার উদ্ধৃতি ছাড়াই ছাপা হয়েছে। এভাবে, ৪৫ নম্বর পৃষ্ঠা, ৫০ পৃষ্ঠা, ৬৯ পৃষ্ঠা, ৭০ পৃষ্ঠা, ৯২ পৃষ্ঠা, ৯৩-৯৪ পৃষ্ঠা, ৯৫ পৃষ্ঠা, ৯৭ পৃষ্ঠা, ৯৮ পৃষ্ঠা, ১১০ পৃষ্ঠা, ১১৭-১১৯ পৃষ্ঠা, ১২০ পৃষ্ঠা, ১২১ পৃষ্ঠা, ১২২ পৃষ্ঠা, ১২৩ পৃষ্ঠা, ১২৪ পৃষ্ঠা, ১২৬ পৃষ্ঠা থেকে ১৩৩ পৃষ্ঠা, ১৩৬ পৃষ্ঠার মধ্যভাগ থেকে ১৩৭ পৃষ্ঠার মধ্যভাগ, ১৭২ পৃষ্ঠার শুরু থেকে ১৭৫ পৃষ্ঠা পর্যন্ত দেশ-বিদেশের তথা প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের সাহিত্যিকদের অনেক লেখা নিজের নামে চালিয়ে দেন।
পিএইচডি থিসিসের রেফারেন্সবিহীন কোটেশন : ২২ পৃষ্ঠার শুরুতে সীতার উক্তি এবং একই পৃষ্ঠার শেষে রুমীর কবিতা, ৬৭ ও ৬৮ পৃষ্ঠাজুড়ে আবদুল হাকিম, সৈয়দ সুলতান এর কবিতা, ১০৭ থেকে ১১০ পৃষ্ঠা পর্যন্ত শেকসপিয়ার, শেলি, হাফিজ, মসনভীর ঘটনা, ১১৩ পৃষ্ঠার শুরুর দিকে ওমর খৈয়ামের কবিতা, ১৬২ থেকে ১৬৯ পৃষ্ঠা পর্যন্ত রমেশ ফকির, শেকসপিয়ার এর কবিতা, ২৩৬ নম্বর পৃষ্ঠায় আল্লামা ইকবালের কবিতা, ২৩৯ নম্বর পৃষ্ঠায় আল্লামা ইকবালের কবিতা।
এ বিষয়ে মন্তব্য চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাবির এক জ্যেষ্ঠ শিক্ষক বলেন, থিসিসে রেফারেন্স উল্লেখ না করলে ওই কবিতা বা উদ্ধৃতি কার লেখা তা যাচাই করা সম্ভব হয় না। সে ক্ষেত্রে গবেষণাকর্ম ত্রুটিপূর্ণ হয়, যা সূক্ষ্ম চুরি। তবে রেফারেন্স জানা না থাকলে উল্লেখ না করাই শ্রেয়।
গবেষণার বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বাহাউদ্দিন নয়া দিগন্তকে বলেন, গবেষণার এত দিন পরে যে বিষয়টা নিয়ে কথা উঠেছে সেটা আসলেই বিব্রতকর। বিষয়টা সত্য নয়। থিসিসে নিয়মের কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি। আমার এমফিল থিসিসের রেফারেন্স হিসেবে নয় বরং আমি মূল রেফারেন্স হিসেবেই পিএইচডিতে তা উল্লেখ করেছি। তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সামনে ২০-২৫ দিন পরে হতে যাওয়া আমার চেয়ারম্যানশিপ আটকানোর জন্য একটা মহল আমার নামে মিথ্যা-অপ্রচার চালাচ্ছে।
এ বিষয়ে গবেষণার তত্ত্বাবধায়ক ড. কে এম সাইফুল ইসলাম নয়া দিগন্তকে বলেন, তার এমফিলের গাইডও আমি ছিলাম। তাই আমি বুঝতে পেরেছে তার পিএইচডির অসঙ্গতিগুলো। আমি যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর হই তখন তার গাইড হই। পরে তাকে বললাম আমি খুব বেশি সময় পাই না ওই তুমি একজন কো-গাইড নাও। হিসেবে সে কো-গাইড নেয়। থিসিসটা যখন আমার কাছে জমা দেয়, তখন আমি থিসিসটা আটকে দেই। এ কথাও বলি যে তোমার থিসিসটাতে সমস্যা আছে এবং তুমি যে রেফারেন্স দিয়েছ আগের লেখা থেকে এগুলো কোট- কোটেশন এবং রিসার্চ মেথডলজি অনুসরণ করা হয়নি। তোমাকে আরো কাজ করতে হবে ছয় মাস। কিন্তু সে তা না করে উল্টো নানাভাবে আমার নামে অপ্রচার চালায়। আমি নাকি তার ডিগ্রি আটকে রেখেছি। তিনি বলেন, শেষ পর্যন্ত ক্যাম্পাসে চাউর হলোÑ আমি নাকি তার ডিগ্রি হতে দেই না, তার প্রমোশন আটকে রাখছি। এরপরে আমি লিয়েনে চলে যাই। শেষে আর আমার দেখার সুযোগ হয়নি। পরে পরিস্থিতির কারণে আমি দিতে বাধ্য হয়েছি। মূল কাজটা হলো গবেষকের। বারবার বলার পরও উল্টো সে আমার চরিত্র হনন করেছে। এক রকম বিব্রত বোধ করেই ডিগ্রির অনুমতি দিয়েছে।
বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আবুল কালাম সরকার বলেন, এ রকম একটা বিষয় শুনেছি। এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিকে জানানো হয়েছে। তিনিই এ ব্যাপারে ভালো বলতে পারবেন। আমি কিছু বলতে চাই না।
এ ব্যাপারে জানতে ঢাবির প্রোভিসি (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল এবং ভিসি অধ্যাপক ড. মো: আখতারুজ্জামানকে একাধিকবার ফোন দিয়েও তাদের পাওয়া যায়নি।


আরো সংবাদ



premium cement