২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

লন্ডনে অবতরণের আগেই মেসেজ দিতে হয়

-

লন্ডনের হিথ্রো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ট্রাভেল করা প্রত্যেক যাত্রীর সাথে থাকা করোনাভাইরাসের সনদকে গুরুত্ব দিচ্ছে না। তবে তারা নির্ধারিত সময়ে ফ্লাইট অবতরণ করার দুই ঘণ্টা আগেই যাত্রীদের কারো কোভিড-১৯ পজিটিভ রয়েছে কি না তা নিশ্চিত করানোর জন্য মোবাইলে মেসেজ দেয়া বাধ্যতামূলক করেছে। সেই মোতাবেক দায়িত্বরত পাইলট উড়োজাহাজ থেকেই যাত্রীদের পক্ষে মেসেজ পাঠাচ্ছেন। তবে এখন পর্যন্ত কোনো যাত্রীকেই হিথ্রো বিমানবন্দরে সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়নি।
গত ১৬ জুন আন্তর্জাতিক রুটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ও কাতার এয়ারওয়েজকে ফ্লাইট চলাচলের অনুমতি প্রদান করে বাংলাদেশের সিভিল অ্যাভিয়েশন কর্তৃপক্ষ। সেই অনুযায়ী ২১ জুন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ঢাকা-হিথ্রো-ঢাকা রুটে প্রথম শিডিউল ফ্লাইট অপারেশন শুরু করে। সপ্তাহের রোববার শুধু ফ্লাইট চলাচল করবে। এর আগে অবশ্য কাতার বিমানবন্দর ব্যবহার করে ট্রানজিট যাত্রী নিয়ে কাতার এয়ারওয়েজ ফ্লাইট চলাচল শুরু করেছে। তারই ধারাবাহিকতায় গত বৃহস্পতিবার ঢাকা-দুবাই-ঢাকা রুটে এমিরেটস এয়ারলাইন্সও ফ্লাইট অপারেশন শুরু করে।
গতকাল শুক্রবার বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একাধিক কর্মকর্তা নয়া দিগন্তকে নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স অত্যাধুনিক ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজ দিয়ে (বোয়িং-৭৮৭-৮০০, ৭৮৭-৯০০) ঢাকা-লন্ডন-ঢাকা রুটে ফ্লাইট চালানো শুরু করলেও লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ঢাকা থেকে লন্ডনে পাড়ি জমানো কোনো যাত্রীর সাথে থাকা করোনাভাইরাসের সনদকে মোটেও গুরুত্ব দিচ্ছে না। তাদের কাছে এই সার্টিফিকেটের কোনো মূল্য নেই! তারা বিমান কর্তৃপক্ষকে শর্ত দিয়েছে, সার্টিফিকেট নয়, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা ফ্লাইটটি অবতরণের দুই ঘণ্টা আগে মেসেজের মাধ্যমে তাদেরকে যাত্রীর শারীরিক অবস্থার সর্বশেষ তথ্য জানাতে হবে। সেভাবেই প্রথম ফ্লাইটের পাইলট ক্যাপ্টেন সাজ্জাদ হোসেন দুই ঘণ্টা আগে যাত্রীদের সর্বশেষ অবস্থা জানিয়ে মেসেজ পাঠিয়েছেন।
এক প্রশ্নের উত্তরে তারা বলেন, আমাদের বর্তমানে ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজ থেকে ক্যাপ্টেন মোবাইলে কথাও বলতে পারেন এবং যেকোনো ধরনের মেসেজও সরাসরি আদান প্রদান করতে পারেন। এই সিস্টেমটিকে ‘একারস এয়ারক্রাফট কমিউনিকেশন এড্রেস ইন রিপোর্টিং সিস্টেম’ নাম দেয়া হয়েছে। এই সিস্টেম থেকেই পাইলটরা তাদের মেসেজ লন্ডনে থাকা স্টেশন ম্যানেজারের কাছে পাঠাচ্ছেন। পরে ওই মেসেজ লন্ডনের স্টেশন ম্যানেজার হিথ্রো বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়ে দিচ্ছেন। মেসেজ পাওয়ায় হিথ্রো বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ আর কোনো যাত্রীকে বিমানবন্দরে করোনা নিয়ে কোনো প্রশ্ন করছে না। উড়োজাহাজ থেকে নেমে যাত্রীরা সরাসরি ইমিগ্রেশন শেষ করে বের হয়ে যাচ্ছেন। তবে কোনো কারণে একজন যাত্রীর শরীরের তাপমাত্রা বেশি পাওয়া গেলে তখন তারা ফ্লাইটের সকল যাত্রীকে পরীক্ষার আওতায় নিয়ে আসবে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো সমস্যাই হয়নি বলে জানান তারা।
গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো: মোকাব্বির হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি টেলিফোন ধরেননি।
বিমানবন্দর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, আান্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট চলাচল শুরু হলেও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লন্ডন-ঢাকা রুট ছাড়া আর কোনো রুটে শিডিউল ফ্লাইট চলাচল শুরু করেনি। তবে এই সময়ের মধ্যে বিমান মালয়েশিয়া, দুবাই, রোম, লন্ডন, জাপান, মালে, বাহরাইনসহ বিভিন্ন দেশে চার্টার্ড ফ্লাইট পরিচালনা করছে এবং বিদেশে আটকেপড়া বাংলাদেশীদের দেশে ফিরিয়ে আনার কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। অন্যান্য দেশ বাংলাদেশী যাত্রীদের প্রবেশে ক্লিয়ারেন্স না দেয়ার কারণে বেশকিছু রুটে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও বিমান কর্তৃপক্ষ ফ্লাইট চালাতে পারছে না বলে জানা গেছে।
এসব প্রসঙ্গে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জনসংযোগ কর্মকর্তা তাহেরা খন্দকারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনিও টেলিফোন ধরেননি।


আরো সংবাদ



premium cement