২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

টেক্সটাইলের ১৭০০ কোটি টাকা আটকা পোশাক রফতানিকারকদের কাছে

-

টেক্সটাইল খাতের প্রায় ১ হাজার ৭০০ কোটি টাকা সমমূল্যের ১৯ কোটি ডলার আটকে গেছে পোশাক রফতানিকারকদের কাছে। সাধারণত ১৪ দিনের মধ্যে বিল পরিশোধের কথা থাকলেও কোনো কোনো রফতানিকারক তিন থেকে চার মাস যাবৎ বিল পরিশোধ করছেন না। এমনি পরিস্থিতিতে ব্যাক টু ব্যাক আমদানি ঋণপত্র স্থাপনকারী (এলসি) ব্যাংকগুলোকে যথাশিগগির স্থানীয় রফতানিকারক তথা টেক্সটাইল খাতের উদ্যোক্তাদের বিল পরিশোধ করার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গতকাল বুধবার এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে এক সার্কুলার জারি করে ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীকে অবহিত করা হয়েছে।
বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আলী খোকন গতকাল নয়া দিগন্তকে জানিয়েছেন, তারা পোশাক রফতানিকারকদের পণ্য সরবরাহ করেছিলেন। বিল অ্যাক্সসেপ্টেন্সের ১৪ দিনের মধ্যে তাদের অর্থ পরিশোধ করার কথা। কিন্তু দীর্ঘ ৩ মাস ধরে কোনো কোনো ক্ষেত্রে ৪ মাস পর্যন্ত তাদের বিল পরিশোধ করা হচ্ছে না। এ পর্যন্ত তাদের প্রায় ১৯ কোটি ডলারের বিল আটকে গেছে। বিল বকেয়া থাকায় অনেক প্রতিষ্ঠান কর্মচারীদের বেতনভাতা দিতে পারছে না। অনেকেরই ব্যবসা বন্ধ হওয়ার উপক্রম। এমনি পরিস্থিতিতে তারা নিরুপায় হয়ে বকেয়া বিল আদায়ের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের হস্তক্ষেপ কামনা করেছিলেন। তাতে পদক্ষেপ নেয়ায় তিনি কেন্দ্রীয় ব্যাংককে ধন্যবাদ জানান।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানিয়েছে, সাধারণত পোশাক রফতানিকারকরা স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে রফতানি উপকরণ ক্রয় করে থাকে। কাপড় থেকে শুরু করে বোতামসহ নানা উপকরণ স্থানীয় ব্যবসায়ীরা সরবরাহ করে থাকেন। এ জন্য পোশাক রফতানিকারকরা স্থানীয় ব্যাংকের মাধ্যমে ব্যাক টু ব্যাক এলসি করে থাকে। নীতিমালা অনুযায়ী বিল গৃহীত হওয়ার ১৪ দিনের মধ্যে পরিশোধ করা হয়; কিন্তু করোনার কারণে অনেক কারখানার রফতানি আদেশ বাতিল বা স্থগিত হওয়ায় পোশাক রফতানি ব্যাহত হয়। রফতানিকারকদের দিক চিন্তা করে সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের নানা সহায়তা দেয়। যেমন, শ্রমিকদের বেতন দেয়ার জন্য মাত্র ২ শতাংশ সুদে ৫ হাজার কোটি টাকা প্রণোদনা দেয়া হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে রফতানিকারকদের সুবিধার্ধে রফতানি উন্নয়ন তহবিল (ইডিএফ) সীমা বাড়ানো হয়। স্থানীয় ব্যাক টু ব্যাক এলসির দায় পরিশোধে রফতানি উন্নয়ন তহবিল থেকে বৈদেশিক মুদ্রায় প্রয়োজনীয় ঋণ নেয়ার সুযোগ করে দেয়া হয়। কিন্তু এরপরেও তারা স্থানীয় ব্যবসায়ীদের দায় পরিশোধ করছে না।
বিটিএমএ থেকে এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে আবেদন করা হয়। আবেদনে সাড়া দিয়ে গতকাল জারি করা বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারে বলা হয়েছে, যথাশিগগিরই ব্যাক টু ব্যাক এলসির দায় পরিশোধ করতে হবে। কোনো ব্যাংক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ নির্দেশনা অমান্য করলে বৈদেশিক মুদ্রা নীতিমালা অনুযায়ী ব্যাংকগুলোর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে ব্যাংকগুলোকে জরিমানা করা হবে। এরপরেও নির্দেশনা অমান্যের অভিযোগ পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের বিরুদ্ধে আরো কঠোর পদক্ষেপ নেয়া হবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement

সকল