২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

অনেক গার্মেন্ট কারখানা বন্ধ হওয়ার আশঙ্কা

-

করোনার প্রভাবে অনেক গার্মেন্ট কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে গার্মেন্ট সেক্টরে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এক গোয়েন্দা প্রতিবেদনে এই আশঙ্কার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গার্মেন্ট শিল্পের যন্ত্রপাতি, ফেব্রিকস, সুতা, বোতাম, রঙের কেমিক্যাল ও কাঁচামালের চাহিদার ৭০ শতাংশের জোগানদাতা দেশ চীন থেকে আমদানি বন্ধ রয়েছে। এসব সরঞ্জাম সঙ্কটের কারণে ক্ষুদ্র ও মাঝারি গার্মেন্ট কারখানার উৎপাদন হুমকির মুখে পড়েছে। এতে অর্থনীতির পাশাপাশি ওইসব কারখানায় কর্মরতরা বিপাকে পড়বেন। তাদের বেতনভাতা বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
চীনে গত বছরের নভেম্বরে প্রথম করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। সর্বশেষ ভাইরাসটি দুই শ’র কাছাকাছি দেশে ছড়িয়ে পড়ার খবর পাওয়া গেছে। ভাইরাসটির কারণে ইতালি, স্পেন, ফ্রান্স ও যুক্তরাষ্ট্রে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। উন্নত দেশগুলোতে অনেক পোশাকের ব্র্যান্ড তাদের শত শত বিক্রয়কেন্দ্র বন্ধ করে দিয়েছে।
এ দিকে নানা আশঙ্কার কারণে গতরাতেও পোশাক শিল্পের কয়েকটি সংগঠনের নেতারা বৈঠক করেছেন। উদ্যোক্তাদের দাবিÑ করোনাভাইরাস ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়া ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দেশগুলো বাংলাদেশী পোশাকের বড় বাজার। গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৩ হাজার ৪১৩ কোটি ডলারের পোশাক রফতানি হয়েছে। তার মধ্যে ৬১ দশমিক ৯১ শতাংশ বা ২ হাজার ১১৩ কোটি ডলারের পোশাকের গন্তব্য ছিল ইইউভুক্ত দেশ। আর যুক্তরাষ্ট্রে গেছে ৬১৩ কোটি ডলারের পোশাক।
পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর প্রথম সহসভাপতি মোহাম্মদ হাতেম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ইউরোপের ব্র্যান্ড ও ক্রেতা প্রতিষ্ঠান বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বিভিন্ন কারখানার ৭৩ লাখ ডলারের ক্রয়াদেশ স্থগিত করেছে। সেটি বেড়ে এক কোটি ডলারে চলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। গ্রীষ্ম মৌসুমেই সাধারণত ব্র্যান্ডগুলো বড় ব্যবসা করে থাকে। তার আগেই করোনা আঘাত হেনেছে। ইউরোপে এইচঅ্যান্ডএমের ৬২ শতাংশ বিক্রয়কেন্দ্র বন্ধ। করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতিতে পোশাক শ্রমিকদের নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)।
গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়, ঈদ সামনে রেখে প্রতি বছরই অনেক গার্মেন্ট কারখানা কর্তৃপক্ষ তাদের শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতাদি সময়মতো পরিশোধ করতে না পারায় গার্মেন্ট সেক্টরে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি, ভাঙচুর, রাস্তা অবরোধ ইত্যাদি আইনশৃঙ্খলা বিঘেœর ঘটনা ঘটে থাকে। করোনাভাইরাসের কারণে উৎপাদন সরঞ্জামাদির অভাবে এ বছর গার্মেন্ট কারখানাগুলো চাহিদা অনুযায়ী অর্ডার না পাওয়া, উৎপাদন কমে যাওয়ায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি অনেক গার্মেন্ট কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এর নেতিবচাক প্রভাব আগামী ঈদুল ফিতরে পড়তে পারে। যথাসময়ে বেতন বোনাস পরিশোধ না করলে শ্রমিকরা আইনশৃঙ্খলার বিঘœ ঘটাতে পারে। এ কারণে পরিস্থিতি মোকাবেলায় এখন থেকেই প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করা প্রয়োজন। পাশাপাশি শ্রমঘন এলাকা বিশেষ করে গার্মেন্ট ফ্যাক্টরি, অন্যান্য কলকারখানা, বস্তি এলাকা, বিহারি ক্যাম্প এলাকায় সচেতনতা বৃদ্ধিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি। গার্মেন্ট ফ্যাক্টরিসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সাবান, হ্যান্ডওয়াশ, সেনিটাইজার, টিস্যুপেপার, মাস্ক উপকরণ সরবরাহের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তের তুলনায় মৃত্যুঝুঁকি কম, যা গড়ে ২ থেকে ৩ শতাংশ। অপর দিকে মার্স ভাইরাসে মৃত্যুর হার ৩৪ এবং সার্স ভাইরাসে মৃত্যুর হার ৯.৬ শতাংশ। এ ছাড়া করোনাভাইরাসে আক্রান্তÍ ও মৃত্যুর ক্ষেত্রে বয়স একটি কারণ হিসেবে কাজ করে। ৮০ বছরের ঊর্ধ্ব বয়সীদের আক্রান্তের হার ২১.৯ শতাংশ এবং মৃত্যু হার ১৪.৮ শতাংশ। ৭০-৭৯ বছর বয়সীদের মৃত্যুর হার ৮ শতাংশ। ৬০-৬৯ বছর বয়সীদের মৃত্যুর হার ৩.৬ ও ৫০-৫৯ বছর বয়সীদের মৃতুর হার ১.৩ শতাংশ। ৪০-৪৯ বছর বয়সীদের মৃত্যুর হার ০.৪ ও ২০-৩৯ বছর বয়সীদের মৃত্যুর হার ০.২ শতাংশ।
বয়স্করা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে বার্ধক্যজনিত নানা রোগের কারণে তাদের সংক্রমণ প্রকট হচ্ছে। কিশোর-যুবক থেকে মধ্য বয়সীদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বেশি থাকায় আক্রান্ত হলেও নিরাময় লাভ করছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী অন্যান্য ভাইরাসের তুলনায় করোনাভাইরাসকে ভয়ানক ভাইরাস হিসেবে চিহ্নিত না করে বরং যথাযথ সচেতনতা অবলম্বন করলে ভাইরাস মোকাবেলা সম্ভব বলে বিশেষজ্ঞদের অভিমত।
গোয়েন্দা প্রতিবেদনের সুপারিশে বলা হয়, করোনাভাইরাস সম্পর্কে গণসচেতনতা সৃষ্টিতে মোবাইল ফোন, প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় প্রচার-প্রচারণা বৃদ্ধি করা এবং নেতিবাচক প্রচারণার মাধ্যমে মানুষ যেন আতঙ্কিত না হয় সে ব্যাপারে সচেতন থাকা। মার্স ও সার্চ ভাইরাস অপেক্ষা করোনাভাইরাস তুলনামূলক কম বিপজ্জনক এবং মৃত্যুর হার কম। বিষয়টি মানুষের কাছে পৌঁছানো এবং সচেতনতা বৃদ্ধি করা। সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দল ও স্বার্থান্বেষী মহল দেশে অস্থিরতা সৃষ্টি এবং সরকারের প্রতি গণমানুষের আস্থা বিনষ্টের চেষ্টায় সোস্যাল মিডিয়ায় সাধারণ মৃত্যুকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে বলে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে। এ বিষয়ে নজরদারিপূর্বক দোষীকে দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে। গার্মেন্ট কারখানাসহ শ্রমঘন কলকারখানা এলাকায় প্রতিদিনই সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো। অফিস আদালত, বাসা-বাড়িতে সমষ্টিগতভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী যথাযথ সতর্কতা অবলম্বন করা। গার্মেন্টে বেতনভাতা পরিশোধে এখন থেকেই প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতে হবে।


আরো সংবাদ



premium cement
ঢাবির কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিটে প্রথম হয়েছেন যারা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত ইন্টার্ন চিকিৎসকদের নিজ দেশে ৫ বছর পর ফিরল দিপক চট্টগ্রামে ৬ কিশোর গ্যাংয়ের ৩৩ সদস্য আটক শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের জন্য সংগঠন মজবুত করতে হবে : শামসুল ইসলাম ইউরো ২০২৪’কে সামনে রেখে দল নির্বাচনে বিপাকে সাউথগেট ভারতীয় পণ্য বর্জনকে যে কারণে ন্যায়সঙ্গত বললেন রিজভী মাকে ভরণ-পোষণ না দেয়ায় শিক্ষক ছেলে গ্রেফতার প্রথম বাংলাদেশী আম্পায়ার হিসেবে আইসিসির এলিট প্যানেলে সৈকত ঢাবির সব ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ নিরাপত্তা-বিষয়ক আলোচনা করতে উত্তর কোরিয়ায় রুশ গোয়েন্দা প্রধান

সকল