২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

মুন্সীগঞ্জের ৩ সরকারি স্কুলে ১০২ জন ফেল

মুন্সীগঞ্জের ৩ সরকারি স্কুলে ৯২ জন ফেল - ফাইল ছবি

সদ্য প্রকাশিত এসএসসির ফলাফলে জেলার তিন সরকারি স্কুলের বিপর্যয়ে হতাশ মুন্সীগঞ্জবাসী। তিন সরকারি স্কুলের কোনোটিতেই শতভাগ পাশ করেনি। ফেল করেছে ১০২ জন। শিক্ষক সংকট ও বিষয় ভিত্তিক শিক্ষক না থাকায় ফল বিপর্যয় হয়েছে বলে দাবি করছেন সংশ্লিষ্ট স্কুল কর্তৃপক্ষ।

তথ্য মতে, এভিজেএম স্কুলে ফেল করেছে ৩৫ জন, কেকে গভঃ স্কুলে ফেল করেছে ৪৬ জন ও শ্রীনগর সুফিয়া এ হাই খান গার্লস স্কুলে ফেল করেছে ২১ জন। ফেল করা শিক্ষার্থীর অধিকাংশই গণিতে ফেল করেছে।

এদিকে ফলাফলের ভিত্তিতে শতভাগ পাশসহ এবারো শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্বাচিত হয়েছে প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ইয়াজউদ্দীন স্কুল ও কলেজ। ইয়াজউদ্দীন এ জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪৫ জন। অন্য দিকে সরকারি স্কুল তিনটির মধ্যে এভিজেএম এ ৩৫ জন, কে কে গভঃ স্কুলে ২৩ জন ও শ্রীনগর সুফিয়া গার্লস স্কুলে একজন জিপিএ-৫ পেয়েছে।

প্রাপ্ত ফলাফল অনুযায়ী মুন্সীগঞ্জ জেলায় এ বছরের এসএসসি পরীক্ষায় সাফল্য অর্জনকারী সেরা ১০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সদরে ২টি, গজারিয়ায় ২টি, শ্রীনগরে ২টি, সিরাজদিখানে ৩টি এবং লৌহজংয়ে একটি।

তথ্য অনুসন্ধানে দেখা যায়, ২০১৭ সালের জেএসসি পরীক্ষায় এভিজেএম স্কুল থেকে ৬৭ জন ও কেকে স্কুলে ৫০ জন জিপিএ-৫ পেয়েছিল। ২০১৭ সালের সেই ব্যাচই এবছর এসএসসি পরীক্ষা দেয়। কিন্তু ফলাফলে তেমন কোনো সফলতা দেখা যায়নি।

অভিযোগ রয়েছে মুন্সীগঞ্জের সরকারি স্কুলগুলোতে কিছু শিক্ষক দীর্ঘদিন শিক্ষকতা করছেন। নিয়মিত বদলি হচ্ছেন না তারা। এতে একই কর্মস্থলে থাকা বেশ কিছু শিক্ষক গড়ে তুলেছে কোচিং বাণিজ্য। যা স্কুলে শিক্ষার পরিবেশের অন্তরায়।

এছাড়া বিষয় ভিত্তিক শিক্ষক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ক্লাস না করানোর অভিযোগ বহু পুরনো৷ কোচিং সেন্টার ও গাইডবাজ কিছু শিক্ষক মূল বই পাশ কাটিয়ে শিক্ষার্থীদের গাইডমুখী করে ফেলেছে। এতে মূল বই রেখে গাইড মুখস্ততেই বেশি অভ্যস্ত হয়ে পড়ছে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ।

বিশিষ্টজনদের মতে অভিভাবকরাও এর দায় এড়াতে পারেন না। অভিভাবকরা চরম অসচেতন। স্কুলে ভর্তি করেই এরা দায়মুক্তির পথ বেছে নেয়। চটকদার কোচিং সেন্টারের বিজ্ঞাপনে মোহিত না হয়ে শিক্ষক নির্বাচনের সময় শিক্ষকদের যোগ্যতা ও সন্তানের মানসিক বিকাশের বিষয়ে অভিভাবকদের যথেষ্ট গুরুত্ব দেয়া উচিত।

ফল বিপর্যয়ের বিষয়ে এভিজেএম স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আনোয়ারুল হক বলেন ৩৩ জন শিক্ষক রয়েছে স্কুলে। এদের মধ্যে ৩জন বিএড করছেন। বাকি ৩০ জন শিক্ষক পাঠদান করাচ্ছেন। শিক্ষক সংকট ও বিষয় ভিত্তিক শিক্ষকের অভাবেই আমাদের ফলাফল বিপর্যায় হচ্ছে। শিক্ষক আসলেই ফলাফল আশানুরূপ হবে।

কে কে স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মনসুর রহমানও ফল বিপর্যয়ের কারণ হিসেবে শিক্ষক স্বল্পতাকে সামনে এনেছেন। অভিভাবকদের আরো সচেতন হওয়ার কথা বলেন তিনি।

জেলার তিন সরকারি স্কুলের এমন ফলাফলের বিষয়ে জেলা শিক্ষা অফিসার ইউনুচ ফারুকী বলেন, এভিজেএম ও কে কে স্কুলে শিক্ষক স্বল্পতা রয়েছে। ৫০ জন শিক্ষকের পরিবর্তে ৩২ জন শিক্ষক দিয়ে পাঠদান করা হচ্ছে। দুটি স্কুলেই প্রধান শিক্ষক নেই। সহকারি প্রধান শিক্ষকের একজনকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক করে স্কুল দুটি চালানো হচ্ছে। এছাড়া বিষয় ভিত্তিকও সংকট। এক বিষয়ের শিক্ষক অন্য বিষয় পড়াচ্ছেন। যার প্রভাব ফলাফলে পড়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement