বাংলাদেশের ফুটবলে অন্যতম উর্বরভূমি নারায়ণগঞ্জ। জাতীয় দল ও ক্লাব ফুটবলে এই জেলার ফুটবলারের সংখ্যা অগণিত। আশারাফউদ্দিন আহমেদ চুন্নু, মোনেম মুন্না, গোলাম গাউস, সম্রাট হোসেন এমিলি, সালাউদ্দিন, কাজী নজরুল ইসলাম, মোহাম্মদ সুজন, মিঠুন চৌধুরী, মেহেদী হাসান তপু, সোহেল রানা, ওয়ালী ফয়সাল, হাল আমলের তপু বর্মন, ইয়াসিন আরাফাতরা এই জেলা থেকেই জাতীয় দলকে সমৃদ্ধ করেছেন। তবে এখন এই জেলা ভুগছে করোনা মহামারীতে। গতকাল পর্যন্ত এই জেলায় করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৪৬ জন। মারা গেছেন ১২ জন। ফলে জেলার অন্য মানুষদের মতো ভীষণ আতঙ্কে আছেন ফুটবলাররাও। পুরো জেলা লকডাউনের কারণে ফুটবলাররাও এখন ঘরবন্দী। টেনশনে আছেন কখন তারাও না আবার আক্রান্ত হয়ে পড়েন।
নারায়াণগঞ্জে প্রথমে দুই-একটি এলাকা করোনার কারণে লকডাউন করা হয়। গতকাল থেকে পুরো জেলায় লকডাউনে। ফলে যারা এত দিন জেলার যে সব ফুটবলার একেবারে নিরিবিলিতে অনুশীলনের জন্য পাশের মাঠে যেতেন এখন তারাও ফিটনেসের সব কাজ সারছেন ঘরের মধ্যেই।
জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানার গোদনাইলে থাকেন জাতীয় দল এবং বসুন্ধরা কিংসের ডিফেন্ডার তপু বর্মন। এই এলাকায় থাকেন অনূর্ধ্ব-১৯ জাতীয় দলের ডিফেন্ডার সাদ্দাম হোসেন অ্যানি। তপুদের এলাকায় এখনো করোনা রোগী ধরা পড়েনি। এরপরও সতর্কতা। তপুর দেয়া তথ্য, ‘আমি বাসা থেকে এক মিনিটের হাঁটা পথের দূরত্বের বালুর মাঠে রানিং করি। সে সময়ই যাই যখন কেউ থাকে না। একেবার একা একা। তবে বাকি অনুশীলনের বাকি পর্বগুলো আমি বাসার মধ্যেই সম্পন্ন করি।’ জানান, সত্যিই খুব আতঙ্কের মধ্যে আছি। দোয়া করি আল্লাহ যেন সবাইকে এই মহামারী থেকে রক্ষা করে।
জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার আবদুল্লাহ পারভেজের বাস জেলার পাইকপাড়ার জান্নাতবাগে। সেখানে ইতালি প্রবাসীদের সংখ্যা বেশি। পারভেজের ছোট ভাইও থাকেন ইতালিতে। তার আসার কথা থাকলেও আসেননি। এই জান্নাতবাগের এক মহিলা নবীগঞ্জে মারা গেছেন। এরপরও ওই মহিলার জান্নাতবাগে অবস্থানকারী আত্মীয় স্বজনদের দু’টি বাড়ি স্থানীয় প্রশাসন লকডাউন করে দিয়েছে। জানান, বাম পায়ে অসাধারণ সব গোল করা আবদুল্লাহ পারভেজ। এই দুই বাড়ি পারভেজদের বাড়ি থেকে ১০ মিনিটের হাঁটা দূরত্বে। এরপরও সতর্ক এই মিডফিল্ডার। ‘আমি এখন বাড়ির বাইরেই যাই না। বাসা আর ছাদই আমার গন্তব্য।’
জাতীয় দলের আরেক ফুটবলার মিডফিল্ডার শাহরিয়ার আবদুল্লাহ রিন্টুর বাড়ি বাবুরাইলে। সেখানে চীন ও ভারত ভ্রমণ করে আসা সুজন নামের এক ব্যক্তি মারা গেলে সন্দেহ করা হয় তিনি করোনায় মারা গেছেন। পরে অবশ্য নিশ্চয়তা মেলে তার মৃত্যুর কারণ স্ট্রোক। তথ্য দেন পারভেজ।
মারাত্মক সমস্যায় আছেন জাতীয় দল থেকে বাদ পড়া লেফট ব্যাক ওয়ালী ফয়সাল। তার এলাকা পাইকপাড়ার জিমখানায় এ পর্যন্ত তিনজন মারা গেছেন করোনায় আক্রান্ত হয়ে। তাই গত চার-পাঁচ দিন ধরে আর বাড়ির বাইরে যাওয়া একেবারে বন্ধ এই ফুটবলারের। পুরোপুরি লকডাউন তাদের এলাকা। ওয়ালী জানান, ভাই খুব বিপদে আছি। দোয়া করি সবার জন্য।
এবার বিপিএলে ক্লাব না পেলেও মিঠুন চৌধুরী বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে খেলবেন ফরাশগঞ্জের হয়ে। তার এলাকা মাসদাইর। হিন্দু থেকে মুসলামান হওয়া এই ফুটবলারের এখন মসজিদে যাওয়াই বন্ধ হয়ে গেছে লকডাউনের কারণে। সর্বশেষ ২০১৩ সালে জাতীয় দলে খেলা এই স্ট্রাইকার জানান, ‘১০-১২ দিন ধরে ঘরে আটকা থাকলেও এত দিন শুধু মসজিদে যেতাম নামাজ পড়তে। তবে এখন পাশের মসজিদেও যাওয়া হচ্ছে না। ফলে ইবাদত আর অনুশীলনের সব কাজই করতে হচ্ছে বাসায়।’ এই এলাকায় বাস ফুটবলার ইমন, অনিকদেরও।
তবে কপাল খারাপ জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার মেহেদী হাসান তপুর। তার বাড়ি জেলার রসুলবাগে। সেই এলাকা লকডাউন। অবশ্য দুই মাস আগে থেকেই তপু থাকছেন ঢাকার আজিমপুরের পাশে নবাবগঞ্জে। কিন্তু করোনা ছোবল মেরেছে সেখানেও। বাগ মসজিদ এলাকায় তিনজন করোনা রোগী পাওয়া গেছে। তাই এই এলাকাতেও জনগণের বাড়ির বাইরে যাওয়া কঠোরভাবে নিষেধ।
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার তল্লাতে থাকেন জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার এবং বর্তমানে ঢাকা আবাহনীর সহকারী কোচ কাজী নজরুল ইসলাম। তার দেয়া তথ্য, খুব আতঙ্কের মধ্যে আছি। আগে খুব জরুরি প্রয়োজন হলে বাড়ির বাইরে যেতাম। কিন্তু গতকাল থেকে একেবারে ঘরে আটকা।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা