সাক্ষাৎকার : অধ্যাপিকা দিলারা চৌধুরী

ইউনূস ঠিক পথেই হাঁটছেন, রাজনৈতিক দলগুলোকে একসুরে কথা বলতে হবে

রাশিদুল ইসলাম
Printed Edition
সাক্ষাৎকার : অধ্যাপিকা দিলারা চৌধুরী
সাক্ষাৎকার : অধ্যাপিকা দিলারা চৌধুরী

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহম্মাদ ইউনূস চীন সফরে গিয়ে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলসহ নেপাল ও ভুটানের মতো দেশগুলোকে ‘স্থলবেষ্টিত’ অভিহিত করে বাংলাদেশকে এই অঞ্চলের ‘সমুদ্র প্রবেশাধিকারের অভিভাবক’ হিসেবে উল্লেখ করে যে বক্তব্য দিয়েছেন সে পরিপ্রেক্ষিতেই ভারতের তরফ থেকে বলা হচ্ছে ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ক খারাপ হয় এমন বক্তব্য পরিহার করতে। কিন্তু রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা বলছেন ভারত যা মুখে বলছে তা কাজে দেখাতে হবে। চট্টগ্রাম বন্দর দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার করে আসছে ভারত। ভারতের ‘প্রতিবেশী প্রথম’ এই নীতিরও কোনো প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না বাংলাদেশ, নেপাল, পাকিস্তানসহ প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে সম্পর্কের ক্ষেত্রে।

বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী নয়া দিগন্তকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন বাংলাদেশের রাজনৈতিক দল থেকে শুরু করে রাজনীতিবিদদের অনৈক্যের কারণেই ভারতের আগ্রাসন মোকাবেলা করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এই দাদাগিরি বা বড় ভাই সুলভ মনোভাব ভারতকে প্রতিবেশীদের কাছ থেকে অনেক দূরে সরিয়ে নিয়েছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক দিলারা চৌধুরী জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক এবং চেয়ারপারসন ছিলেন। তিনি গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য। ১৯৮৯ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত, তিনি কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ভিজিটিং স্কলার ছিলেন। ১৯৯২ সালে তিনি ইউএসএআইডির স্পনসরড ডেমোক্র্যাসি অ্যাসেসমেন্ট টিমের সদস্য ছিলেন। ১৯৯৬ থেকে ১৯৯৭ পর্যন্ত কলেজ পার্কের মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুলব্রাইট ভিজিটিং স্কলার ছিলেন। স্পষ্টবাদী এই অধ্যাপক ২০০৮ সালে বলেছিলেন যে, ফখরুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের শাসনামলের পর তিনি খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনার কাছ থেকে আরো ভালো রাজনীতি আশা করেন। তিনি রাজনীতিবিদদের ১/১১-এর ভুল এবং ২০০৬-২০০৮ সালের বাংলাদেশের রাজনৈতিক সঙ্কট থেকে শিক্ষা নেয়ার আহ্বান জানান। অধ্যাপক দিলারা নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে বাংলাদেশকে একদলীয় রাষ্ট্র বলে অভিহিত করেছিলেন। তার সাথে কথোপকথনের কিছু অংশ এখানে তুলে ধরা হলো :

নয়া দিগন্ত : অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস যখন উত্তর-পূর্ব ভারত, নেপাল, ভুটানের মতো স্থলবেষ্টিত দেশগুলোকে চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দর ও বঙ্গোপসাগরের মাধ্যমে পণ্য পরিবহনের সুবিধা দিতে চাইছেন তখন ভারতের তরফ থেকে ঢাকা-দিল্লির মধ্যে সম্পর্ক খারাপ হয় এমন বক্তব্য পরিহারের কথা বলা হচ্ছে কেন?

দিলারা চৌধুরী : চীনে প্রফেসর ইউনূসের বক্তব্যের কনটেক্সটে ভারত এ ধরনের বক্তব্য দিয়েছে। এই বক্তব্যে ইন্ডিয়াতে তোলপাড় হয়ে গেছে। কিন্তু নেইবার ফার্স্ট পলিসি ভারত নিলেও তাকে তো তা কাজে দেখাতে হবে। তাহলে ভারতের সব নেইবারের সাথে সম্পর্ক খারাপ কেন? নেইবার ফার্স্ট হলে তো সম্পর্ক ভালো হওয়ার কথা। এটা ভারতের অফিসিয়াল স্টেটমেন্ট কিন্তু সব নেইবারের সাথে ভারতের সম্পর্ক খারাপ। ইউনূসের বক্তব্যে ভারত যে অত্যন্ত অসন্তুষ্ট তা তাদের মিডিয়ার দিকে তাকালে দেখা যায়।

নয়া দিগন্ত : কিন্তু এমন হচ্ছে কেন? যেদিন ভারতের তরফ থেকে বলা হচ্ছে ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ক যাতে খারাপ না হয় এমন বক্তব্য পরিহার করতে তখন ভারতের মিডিয়ায় বাংলাদেশে প্রয়োজনে একাত্তরের মতো একটা অপারেশন চালানোর কথাও বলা হচ্ছে। দি প্রিন্টে শেষাদ্রির একটি কলামে তো রীতিমতো বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সামরিক হুমকি দেয়া হয়েছে।

দিলারা চৌধুরী : হ্যাঁ, ত্রিপুরা থেকে বলা হচ্ছে আমরা চিটাগাংকে পৃথক করে সমুদ্র ব্যবহার করব। তারা খুব অবজেকশনাবল কমেন্ট করছে। এবং মোদি সাহেবও প্রফেসর ইউনূসকে বুঝিয়ে দিলেন যে এই সমস্ত স্টেটমেন্টগুলো (আঞ্চলিক সহযোগিতা) আমরা সহ্য করব না। যদি নেইবার ফার্স্ট পলিসি আদৌ থাকত তাহলে প্রতিটি প্রতিবেশীর সাথে ভারতের সম্পর্ক ভালো থাকত। তাদেরতো কারো সাথে ভালো সম্পর্ক নেই। তার মানে তারা নেইবারদের সেরকমভাবে ট্রিটমেন্ট করে না। নেইবারদেরকে তারা সব সময়, যেটাকে দাদাগিরি বলেন বা একটা আধিপত্যভাব বজায় রেখে চলতে চায়। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি ভারতের এটি ভুল পলিসি। কারণ তারা এখানে একটা রিজিওনাল পাওয়ার হতে চাচ্ছে অ্যাটলিস্ট। তো রিজিওনাল পাওয়ার হতে হলে তা আশপাশের লোকদেরকে নিয়ে চলতে হয়। ভারত সেটা করছে না। প্রফেসর ইউনূসের এ বক্তব্যের পর তো জয়শঙ্কর বঙ্গোপসাগরের দীর্ঘতম উপকূলরেখা দাবি করলেন। যদিও তার আগে তিনি সার্ককে ফিরিয়ে আনার কথা বলেছিলেন।

নয়া দিগন্ত : ভারতের তরফ থেকে দেয়া বক্তব্যের এমন ফ্লাকচুয়েট হওয়ার কারণ কী?

দিলারা চৌধুরী : ভারতের কাছে সেভেন সিস্টারস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটা তাদের নিরাপত্তার জন্য। আমার ব্যক্তিগত মতামত হচ্ছে যে, তারা বাংলাদেশকে ছাড়বে না। মোদিতো এবারো দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বলেছেন, ইনক্লুসিভ নির্বাচন করতে। তার মানে তারা আওয়ামী লীগতে ফেরত আনতে চাচ্ছে। তার মানে কী? তার মানে বাংলাদেশের ওপর গ্রিপ তারা ছাড়বে না। এখন বাংলাদেশকে এখান থেকে বেরিয়ে যাওয়ার উপায় হলো নিজেদের ঘরকে ঠিক করা। নিজেদের গণতন্ত্রকে মজবুত করতে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে থাকা। সেটাতো আমরা করছি না।

নয়া দিগন্ত : মোদির এমন বক্তব্যের পর তো রাজনৈতিক দলগুলো আশার আলো দেখতে পাচ্ছে বলছে।

দিলারা চৌধুরী : আশার আলো মানে ওই যে ইনক্লুসিভ নির্বাচনের কথা বলেছে। ইলেকশন করতে হবে। আমরা গণতান্ত্রিক সরকার দেখতে চাই। ওইখানে তারা আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন। তাদের ক্ষমতায় যাওয়ার পথ প্রশস্ত হবে, যাতে তারা চুরি-ডাকাতি করতে পারে।

নয়া দিগন্ত : তাহলে এটা আশার আলো না দুরাশা? আশার আলোতো এর আগে তিস্তা চুক্তি নিয়ে দেখা গেছে। এক সময় বাংলাদেশের সাথে ভারতের স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের কথা বলা হয়েছে?

দিলারা চৌধুরী : না, এটাতো বাংলাদেশের ইন্টারেস্টের জন্য কথাটা ঠিক বলেনি। কিন্তু পলিটিক্যাল পার্টিরা কবে আমাদের দেশের ইন্টারেস্টে কথা বলেছে? তারা তো সবসময় নিজেদের স্বার্থ নিয়ে কথা বলে। হাসিনাও তাই করেছে।

নয়া দিগন্ত : তাহলে জাতীয় স্বার্থ ও সার্বভৌমত্বকে টিকিয়ে রাখতে আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো কি ...

দিলারা চৌধুরী : আমাদের পলিটিক্যাল পার্টি জাতীয় স্বার্থকে টিকিয়ে রাখার জন্যে তেমন কিছু করে না। এ জন্য আমরা বিপদে পড়েছি। তারা নিজেদের ব্যক্তিগত, আমরা কী করে ক্ষমতায় যাব, ওইটাই দেখে।

নয়া দিগন্ত : হাসিনাতো এখনো ভারতে বসে উসকানি দিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের তরফ থেকে ভারতের কাছে বারবার বলা হচ্ছে হাসিনাকে চুপ থাকতে।

দিলারা চৌধুরী : দিবেনইতো। কারণ সেতো ইন্ডিয়ার ব্যাকিং পাচ্ছে। বাংলাদেশের কথা ইন্ডিয়া শুনবে কেন। বাংলাদেশের মধ্যে কি সেরকম ইউনিটি আছে? নেই। যদি দেশের মধ্যে ইউনিটি থাকত, তাহলে একযোগে কথা বলতে পারলেই ভারত কথা শুনত। বাংলাদেশের মধ্যে ইউনিটিটা কোথায়? যেকোনো রাষ্ট্র যেকোনো সা¤্রাজ্য যেখানে ডিসইউনিটি আছে সেখানে অন্য দেশ এসে ডমিনেট করবেই করবে। এটা আমাদের মানবজাতির ইতিহাস। আপনার মধ্যে অনৈক্য মানেই বাইরের শক্তি আপনাকে ডমিনেট করবে। সুতরাং ইন্ডিয়া কী করছে সেটা বলার আগে আমাদের নিজেদের ঠিক করা উচিত। ইন্ডিয়াকে গালাগালি করার আগে আমাদের নিজেদের দেশে পলিটিক্যাল পার্টিকে গালাগালি করা উচিত জনগণের।

নয়া দিগন্ত : ভারতীয় মিডিয়া যেভাবে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার অব্যাহত রাখছে তার মোকাবেলায় বাংলাদেশের মিডিয়া কি পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে পারছে?

দিলার চৌধুরী : পারছে না। আমি শুনেছি মিডিয়া এখনো নিয়ন্ত্রিত। বিভিন্ন এজেন্সি কন্ট্রোল করে। অনেক এজেন্সিতে ভারতে প্রভাব আছে। কিছু রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় আসতে তাদের সুদৃষ্টি চায়।

নয়া দিগন্ত : মিডিয়ার ভেতরেও কি তাহলে অনৈক্য কাজ করে?

দিলারা চৌধুরী : সবখানে ডিসইউনিটি হলেতো এগুলো আলাপ করে লাভ নেই। আমাদের মধ্যে ডিসইউনিটি থাকলে ইন্ডিয়া আপনাকে ডমিনেট করবেই। এটাতো একটা ইতিহাস। আপনি যদি ভারতের পুরান ইতিহাস পড়েন, আপনার মৌর্য সা¤্রাজ্য যেটা এত পাওয়ারফুল ছিল, তার পতন হয় ভেতর থেকেই অনৈক্য সৃষ্টি হয়েছিল বলে। রোমান সাম্রাজ্যের পতনও এভাবেই হয়েছে।

নয়া দিগন্ত : বাংলাদেশের চীন ও পাকিস্তানের সম্পর্কোন্নয়নকেও তো ভারত ভয়ঙ্কার গেম প্লান হিসেবে দেখে? এটার কী যৌক্তিকতা?

দিলারা চৌধুরী : এটার যৌক্তিকতা হলো, তুমি আমার একটা করদ রাজ্য, তোমার এত স্পর্ধা কিসের? দেশকে স্বাধীনভাবে চালাতে চাচ্ছেন, তুমি তোমার স্বার্থের জন্যে চীনের সাথে বাণিজ্য করবে, পাকিস্তানের সাথে বাণিজ্য করবে সেটা আমি সহ্য করব কেন।

নয়া দিগন্ত : দীর্ঘদিন ধরে সার্ককেও সচল করতে পারিনি ভারতের একগুঁয়েমির কারণে।

দিলারা চৌধুরী : পারি নাই তো। বাংলাদেশকে কমবেশি ভারতের একটা করদ রাজ্য করে রাখা হয়েছিল। বিষয়টি আমাদের দেশের মানুষ না বুঝলে, আমাদের পলিটিক্যাল লিডাররা না বুঝলে আমি আপনি কী করতে পারি, কথা বলা ছাড়া।

নয়া দিগন্ত : বিমসটেকের সভাপতি হলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এতে কি আঞ্চলিক সহযোগিতার সুযোগ বাড়বে?

দিলারা চৌধুরী : না, ইন্ডিয়া অবজেকশন দিলে যেমন সার্ক হয়নি, তেমনি এগুলোও কিছু হবে না।

নয়া দিগন্ত : ভারততো ভেটো পাওয়ার চায়। ভেটো পাওয়ার পেতে হলে প্রতিবেশী দেশগুলোকে নিয়ে তো চলতে হবে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো দেশগুলোর মতো অনেকটা...

দিলারা চৌধুরী : ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো কি একজন আরেকজনের সাথে এভাবে লেগে থাকে। ভারত বোঝে না, কারণ ইন্টারন্যাশনাল পলিটিক্সে এটা বোঝার কথা না। ইন্টারন্যাশনাল পলিটিক্সে রাষ্ট্রগুলো নিজেদের স্বার্থই দেখবে। আপনার নিজের জোর না থাকলে অন্য রাষ্ট্র আপনাকে ডমিনেট করবেই। এটাই ইন্টারন্যাশনাল পলিটিক্স।

নয়া দিগন্ত : আসিয়ানের সাথে বাংলাদেশ যুক্ত হতে পারলে কতটা আশা করা যায় বিষয়টি।

দিলারা চৌধুরী : ড. ইউনূস এটা একটা ভালো উদ্যোগ নিয়েছেন। আসিয়ানের সাথে যুক্ত হতে পারলে ট্রিলিয়ন ডলারের ইকোনমির দেশগুলোর সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়ে তোলা সম্ভব হবে এবং ইন্ডিয়ার ডমিনেশন থেকে আমরা বেরিয়ে আসতে পারব। আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোর জনসংখ্যাও অনেক। আসিয়ানের সাথে যুক্ত বহুদিন আগেই হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু বাংলাদেশের ফরেইন পলিসি কোনোদিনই স্বাধীন ছিল না। আমাদের প্রধান উপদেষ্টা একটা প্রস্তাব দিয়েছেন। আসিয়ান দেশগুলোর তো একটা ঐকমত্য প্রয়োজন এ ব্যাপারে। তারা যদি আমাদের অন্তর্ভুক্ত করে তাহলে আমি মনে করব এটা একটা ভালো উদ্যোগ হবে। আমার মনে হয় প্রফেসর ইউনূস ঠিক পথেই হাঁটছেন। তিনি মিয়ানমারের সাথেও রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনের ব্যাপারে একটা অ্যাগ্রিমেন্ট করে এসেছেন। সুতরাং আমরা যদি দুই দিক থেকে বের হয়ে যাই, মিয়ানমার, আসিয়ান তাহলে ভারতের আগ্রাসন থেকে বের হয়ে আসতে পারব।