১৮ মে ২০২৪, ০৪ জৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৯ জিলকদ ১৪৪৫
`


সাপও অকারণে ফণা তোলে না

- ফাইল ছবি

বর্ষার শুরুতে গাঁয়ে গিয়েছিলাম। বসেছিলাম চা দোকানে। একদল শিশু-কিশোর হল্লা করে আমাদের দিকে আসছিল। হল্লার কারণ, একটি গোখরা সাপের গলায় রশি বেঁধে একজন আগে আগে হাঁটছে আর অন্যরা পেছনে পেছনে জয়ধ্বনি করছে। সাপটার লেজ তখনো নড়ছিল। জোয়ারের পানি ওঠার আগে জমির আলে পেতে রাখা চায়নাজালে মাছের লোভে প্রায়ই এরকম সাপ ঢুকে থাকে। সাপ মানুষের শত্রু। শত্রুর শেষ রাখতে নেই। শৈশবে আমরাও এসব করতাম। নতুন বৃষ্টির পানিতে ডোবায় নেমে আসা ব্যাঙ মেরে হাত পাকাতাম, মরা গরুর কাছ থেকে শকুন তাড়িয়ে দেয়াসহ অমঙ্গলের হাত থেকে বাঁচতে পেঁচাকে গ্রামছাড়া করতাম।

‘আমিই তাদের (বিশ্বের সব জীব) মাঝে জীবিকা বণ্টন করি এবং পার্থিব জীবনে একজনকে আরেকজনের ওপর সমুন্নত করি; যাতে একে অপরের দ্বারা সেবা নিতে পারে (সূরা ৪৩, আয়াত ৩২)। বিষধর সাপও অকারণে ফণা তোলে না- একমাত্র মানুষই অকারণে বা তুচ্ছ কারণে মানুষসহ জীব হত্যা করে থাকে। বিশ্বের জীববৈচিত্র্যের ওপর মানুষের অযাচিত হস্তক্ষেপের ফলে কোনো একটি জীব বিপন্ন হওয়ার কারণে মাঝে মধ্যে এমন সব অণুজীব বের হয়ে আসে যেসবের দিশা নির্ণয় করতে আধুনিক বিজ্ঞান নিজেই দিশা হারিয়ে ফেলে। পরিবেশবিজ্ঞানের হুঁশিয়ারির পর ‘বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন ২০১২’ প্রণীত হয়। এ আইন হওয়ার বহু আগেই দেশের অধিকাংশ জীব বিলুপ্ত হয়ে গেছে।

অগণিত জীববৈচিত্র্যের মধ্যে স্মৃতি থেকেও হারিয়ে গেছে বাওড়াল (বনবিড়াল) ও মেছোবাঘ। বাঘ, মেছোবাঘ, বাওড়াল ও বিড়াল আকারের ভিন্নতা ছাড়া গোত্র ও স্বভাব অভিন্ন। মেছোবাঘের স্থানীয় নাম বাঘডাস। এরা লড়াকু। এক জোড়া কুকুরও এদের সাথে পারে না। একসময় দেশজুড়েই ছিল এদের বিচরণ। চর এলাকা হলেও একসময় আমাদের গাঁয়েও ছিল বাঘডাস। বর্ষায় সব মাঠঘাট তলিয়ে গেলে এদের আবাসিক সমস্যাসহ খাদ্যের অভাব তীব্রভাবে দেখা দেয়। তখন এরা গৃহস্থের ঘরের সিলিং, খড়কুটোর টাল ও গোয়ালঘরে লুকিয়ে আত্মরক্ষার চেষ্টা করে। পেটের তাড়নায় মাঝে মধ্যে গৃহস্থের হাঁস-মুরগির খোঁয়াড়েও হানা দেয়। শৈশবে গ্রাম থেকে দু-চারটি হাঁস-মুরগি খোয়া গেলেই ঘোষণা দিয়ে এদের মারা শুরু হয়। লাঠি-সড়কি নিয়ে দলবেঁধে, ফাঁদ পেতে, বা বিষটোপ দিয়ে শুরু হয় সংহার।

শৈশবে এক সংহার ‘মচ্ছবের সৈনিক’ ছিলাম আমিও। সংহার নির্মমতার দৃশ্যটি আজো চোখ থেকে সরাতে পারছি না। ১৯৬০ সালের ভরা বর্ষাকাল। ‘গ্রাম থেকে ক’দিনে বেশ ক’টি হাঁস-মুরগি খোয়া গেছে। সামান্য ফাঁকফোকর দিয়ে ঘরে ঢুকে খোঁয়াড়ের বেড়া কেটে বা গর্ত করে হাঁস-মুরগি নিয়ে যাওয়া মানুষের কর্ম নয়। নিয়ে যাওয়ার সময় হাঁস-মুরগি ডাকচিৎকার দেয়। ডাকচিৎকারে অনেকের ঘুম ভাঙে। ঘুম ভাঙার পর কেউ কোনো সময় চোরের ছায়াটিও দেখতে পায় না। শেয়াল, বাওড়াল কিংবা বাঘডাস ছাড়া সঙ্কীর্ণ ফাঁকফোকর দিয়ে মানুষ ঢুকতে পারবে না। গ্রামের চার দিকে পানি থইথই করে। গ্রাম থেকে আধা মাইল দূরে গোরস্তান। সেখান থেকে শেয়াল গাঁয়ে এসে মুরগি চুরি সম্ভব নয়। এখন গোরস্থানেও শেয়াল নেই। একযুগ আগেও ছিল। তখন রাতের বেলা রয়ে রয়ে শেয়াল ডাকত। শেয়ালের ডাকে ঘুম ভাঙলে কান পেতে থাকতাম। চিরবৈরী শেয়াল আর কুকুর। শেয়াল ডাকবে কুকুর ডাকবে না- তা কী হয়! মাঠের এক মাথা থেকে ‘হুক্কাহুয়া হুক্কাহুয়া’ বলে ডাক দিলে অপর মাথা থেকে ‘কেয়াহুয়া কেয়াহুয়া’ বলে জবাব দেয়। সওয়াল-জবাব শেষ না হতেই ‘ঘেউ ঘেউ’ রবে ডেকে উঠে কুকুর। মাঠে শেয়াল আর গাঁয়ে কুকুর। নিজ নিজ মহল্লায় ডাকাডাকি হাঁকাহাঁকি করে। একে অন্যের ত্রিসীমানা ঘেঁষে না। কারণ বাগে পেলে ছাগেও বাঘেরে ছাড়ে না।

একসময় পুরনো এলাকার ঝোপ-জঙ্গলে এরা বাস করত। বাঘডাসের প্রধান খাদ্য মাছ, তাই নাম হয়েছে মেছোবাঘ। মেছোবাঘ ‘মাউক মাউক’ শব্দ করে ডাকত বলে, আমরা বলতাম ‘মাউক্কাওলা’। গহিন রাতে কখনো কখনো মাউক্কাওলার ডাকও শুনতাম। মাউক মাউক শব্দ কানে ঢুকলে ভয়ে হাত-পা শরীরের ভেতরে ঢুকে পড়তে চাইত। শৈশবে ঘুমিয়ে না পড়তে চাইলে মা মাউক্কাওয়ালার ভয় দেখিয়ে ঘুম পাড়াতেন। মাউক্কাওয়ালা গোয়াল থেকে ছাগল-ভেড়া পর্যন্ত নিয়ে যেত। বাড়িঘর বাড়তে শুরু করলে ঝোপ-জঙ্গল কমতে শুরু করে। কমতে শুরু করে এদের খাবার ও আশ্রয়। মাউক্কাওয়ালারা মাছ পাওয়া দূরের কথা মাথা আড়াল করার আশ্রয়টুকুও খুঁজে পেত না। আশ্রয়হীন মাউক্কাওয়ালারা গোরস্তানে আশ্রয় নেয়। দিনের বেলা পুরনো কবরের গর্তে শরীর লুকিয়ে রাখে। রাতে বের হয় আহারের খোঁজে। দিনের আলো দেখা দেয়ার আগেই আবার ঢুকে পড়ে কবরের অন্ধকার খোঁড়লে। নতুন কবর খোঁড়ার সময় কারো নজরে পড়লে আর রক্ষা থাকে না। কবর খোঁড়া বাদ দিয়ে শেয়াল আর মাউক্কাওয়ালা মারা শুরু করে দেয়। ইচ্ছামতো লাঠি সড়কি করে খোঁড়লের ভেতরেই মুমূর্ষু অবস্থায় মাটিচাপা দিয়ে শেষ করে দিত। পঞ্চাশের দশকে একবার সারা এলাকা বন্যায় ভেসে যায়। মানুষ আশ্রয় নেয় নৌকা ও মাচানে। তখন আশ্রয়হীন শেয়াল ও মাউক্কাওয়ালারা প্রাণ বাঁচাতে একেবারে লোকালয়ে চলে আসে। পাকের ঘর, গোয়ালঘর ও খড়কুটোর তলায় আশ্রয় নিতে গিয়ে মানুষের হাতে শেষ হয়ে যায়। তাই গাঁয়ের সাম্প্রতিক হাঁস-মুরগি খোয়া যাওয়ার জন্য দায়ী করা হয় বাওড়াল ও বাঘডাসকে। গভীর রাতে হাঁটা চলার সময় অনেকে বাঘডাস দেখেছে বলে প্রমাণও পাওয়া যাচ্ছে। হাঁস-মুরগি চুরির জন্য একমাত্র দায়ী বাঘডাস। সবার আক্রোশ বাঘডাসের ওপর। তখন গাঁয়ের চার পাশের ঝোপ-জঙ্গলের তলায় একবুক পানি। এ অবস্থায় মাটিতে ভর করা কোনো জীব-জানোয়ারের পক্ষে ঝোপ-জঙ্গলে অবস্থান সম্ভব নয়। মুরগি চোর গ্রামেই আছে। দিনের বেলায় কারো না কারো গোয়াল কিংবা বসতঘরের আড়ালে আত্মগোপন করে থাকে। রাত গহিন হলেই চুরি করতে বের হয়। চোর ধরতেই হবে। বর্ষাকালে বড়দের তেমন কাজ থাকে না। আর আমরা তো ‘বেকারের বাদশা’।

বড়দের হুকুম পেয়ে কোনো এক শুক্রবার সকালে যার যা আছে তাই নিয়ে মুরগি চোর মারার অভিযানে বের হয়ে পড়ি। পাকের ঘর, গোয়ালঘর, খড়কুটার স্তূপ- এমনকি সন্দেহযুক্ত বসতঘরের সিলিংয়ে আমাদের অনুসন্ধান কাজ চলতে থাকে। ঘণ্টা দুয়েক অনুসন্ধান করে মুরগি চোরের শুলুক সন্ধান পাওয়া গেল না। তার পরও উৎসাহে ভাটা পড়েনি। সৈনিকের সংখ্যাও বাড়তে থাকে। সরকার বাড়ির গোয়ালঘরটি অনেক বড়। লোকালয় থেকেও দূরে। তাদের বাড়ির একপাশে গভীর জলাশয়। জলাশয়ের তিন পাড়ে নলখাগড়ার ঘন জঙ্গল। জঙ্গলের ভেতর মানুষ প্রবেশ করা তো দূরের কথা, সূর্যের আলোও প্রবেশ করতে পারে না। এ জঙ্গলে বাঘডাস কেন, বনের ডাসাবাঘ রাজত্ব করলেও কেউ টের পাবে না। নলখাগড়ার তলায়ও গলায় গলায় পানি। শুষ্ক মৌসুম ছাড়া এখানে বাঘডাস-বাওড়াল বাস সম্ভব নয়। তাই সবার সন্দেহ সরকার বাড়ির গোয়ালঘরের দিকে।

গোয়ালঘরে বাঁশ-কঞ্চি বিছিয়ে সিলিং বানানো হয়েছে। সিলিংয়ের ওপর তুষের বস্তা, গমের টাগা, তিলের গাছ, পাটখড়িসহ খড়কুটোয় ঠাসা। এসব সরিয়ে বাঘডাস অনুসন্ধান সহজ ছিল না। তাই কোচের সূচালো শলাকা, বল্লম, সড়কি ইত্যাদি ধারাল অস্ত্র দিয়ে সিলিংয়ের নিচ থেকে উপরের দিকে সজোরে খোঁচাতে শুরু করি। খোঁচার এত জোর ছিল যে, কোনো কোনো খোঁচা খড়কুটো ভেদ করে টিনের চালে গিয়ে ঠেকত। মিনিট দশেক খোঁচাখুঁচির মাথায় শাঁ করে একটা বাঘডাস লাফ দিয়ে নিচে নেমে আসে। কেউ কিছু বুঝতে না বুঝতেই ভোঁ দৌড়। ‘মুরগি চোর গেল রে’ বলে লাঠিসোটাসহ আমরাও এর পেছনে পেছনে ছুটি।

বাঘডাস দৌড়ে গিয়ে মোল্লা বাড়ির গাজী মিয়ার গোয়ালঘরে আত্মগোপন করে। ‘শালার ভাই শালা, পালিয়ে যাবি কই’ বলে সবাই গিয়ে গাজী মিয়ার গোয়ালঘরে হামলে পড়ি। বাঘডাসটি আবার লাফিয়ে পড়ে। দৌড় দেয় পূর্ব দিকে। দৌড়াতে গিয়ে সামনে বাধা হলো মোহরালি দাদার জোড়া কুকুর। দামাল ছেলেদের জোড়া কুকুরসহ সামাল দেয়া একেবারেই অসম্ভব। লাঠিসোটা হাতে পেছনে আমরা। উভয় সঙ্কটে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে নায়েবালী প্রধানের বাড়ির উত্তর দিকের মাদার গাছে আরোহণ করে জন্তুটি। আমরা লগি-বৈঠা ও সড়কি-বল্লম হাতে খোঁচাতে শুরু করি। যতই খোঁচাই ততই উপরে উঠে যায়। কাঁটার ঘায়ে ক্ষত-বিক্ষত শরীর নিয়ে একেবারে মগডালে পৌঁছে যায়। সূচালো ও ঘনকাঁটাযুক্ত মাদার গাছ। মাদার কাঁটার ভয় পাগলা কুকুরের ভয়ের চেয়েও ভয়ঙ্কর। মানুষ তো দূরের কথা কুকুরের ভয়ে বিড়ালও মাদার গাছে ওঠে না। লগি-সড়কির নাগালের বাইরে চলে গেলে আমরা সমানে ইটপাটকেল ছুড়তে শুরু করি। নিরুপায় বাঘডাসটি ভয়ার্ত চোখে সবার দিকে তাকাচ্ছিল। কোনো কোনো ঢিল লাগতে গেলেই মাথা এদিক-সেদিক সরিয়ে নেয়। নির্মমতার এক অভ‚তপূর্ব দৃশ্য।

এ দৃশ্য দেখার জন্য মানুষের ভিড় বাড়তেই থাকে। বদমাশ মারার জন্য গাঁয়ের লোক এক হয়ে যায়। সবার এক কথা, শালার বেটা মুরগি চোর। মার, শালার বেটারে মেরে শেষ করে দে।’ কে একজন খোঁজাখুঁজি করে লম্বা একটি বাঁশ নিয়ে আসে। কয়েকজন ধরাধরি করে বাঁশের আগা বাঘডাসের লেজের গোড়ায় ঠেকিয়ে সজোরে খোঁচা দিতেই ছিটকে পড়ে মগডাল থেকে। ধপাস করে খালের পানিতে পড়েই দ্রত সাঁতার কাটে ধান ক্ষেতের দিকে। খালের ওপারে জলি আমনের ক্ষেত। জলি আমন আট-দশ ফুট পানির ওপর মাথা জাগিয়ে রাখতে পারে। পায়ের তলায় মাটি না পেলেও মাথা লুকানোর ঠাঁই হলে জানটা বেঁচে যাবে। এ লক্ষ্যে উদবিড়ালের মতো তীব্র বেগে ছুটছে। কিন্তু শেষ রক্ষা পেল না। ধান ক্ষেতে পৌঁছার আগেই আমরা পৌঁছে যাই বাঘডাসের কাছে। কোষা নৌকা বোঝাই করে কাছে গিয়েই শুরু করি বাড়ি। ডুব-গোত্তা দিয়ে পালাতে চাইছিল, পারেনি। লাঠির পর লাঠি পড়তেই সাঁতার কাটা থেমে যায়। রক্তাক্ত ও অসাড় দেহটি ডাঙায় এনে সবাই বিজয়োল্লাস করছিলাম। উল্লাস শেষ না হতেই কে একজন বলে উঠল, ‘ভাইসব, আমরা যে চোরটা খতম করলাম এটা মরদ; মাদিটা রয়ে গেছে। চল, মাদিটাকে শেষ করে আসি। চোরের মূল উৎপাটন না করে ঘরে ফিরব না।’ বলতে না বলতেই সবাই ছুটল মাদিটাকে শেষ করার জন্য।

টেঁটা, বল্লম ও সড়কি দিয়ে গোয়ালঘরে আবার খোঁচাতে শুরু করি। আমাদেরই একজন সড়কি চালাতে ওস্তাদ। ওস্তাদ সড়কি চালাতে চালাতে, ‘ধরছিরে ভাই ধরছি, মুরগি চোর ধরছি’ বলে সড়কি উপরের দিকে ঠেসে সজোরে চিৎকার শুরু করে। সিলিংয়ের উপরে রাখা খড়কুটোর ভেতর থেকে বাঘডাস গোঙানিসহ ধস্তাধস্তি শুরু হয়ে যায়। তা শুনে সড়কি উপরের দিকে আরো জোরে চেপে ধরে। কেউ কেউ সিলিং থেকে খড়কুটো নামাতে থাকে। এমন সময় উপর থেকে খড়কুটোর সাথে ধপাধপ বাচ্চা পড়তে থাকে। বাঘডাসের বাচ্চা। সদ্যোজাত চারটি বাচ্চা মাটিতে পড়েই ‘ম্যাও ম্যাও’ রোদনসহ মাকে খুঁজছিল। বাচ্চাগুলো গায়ে গায়ে লুটোপুটি করে যখন মাকে খুঁজছে তখন মা ছিল সড়কিবিদ্ধ। সড়কিওয়ালা সুকৌশলে শরীর এফোঁড় করে মা বাঘডাসটিকে ধপাস করে নিচে নামায়। সড়কির আগা সজোরে চেপে ধরে মাটির সাথে। সূচালো সড়কির ফলা মায়ের বুক ভেদ করে মাটিতে ঢুকে রয়েছে।

ধূসর গাত্রবর্ণের বাঘডাসটি প্রচণ্ড আক্রোশে গোঙাচ্ছিল। মায়ের বিদীর্ণ বুক থেকে তাজা রক্ত গড়িয়ে যাচ্ছে লুটোপুটিরত বাচ্চাদের দিকে। মায়ের মাথা এক দিকে কাত হয়ে থাকলেও কোমরের অংশ ছিল মাটির সাথে সমান্তরাল। মায়ের কোমরের কাছেই ছিল বাচ্চাগুলো। সড়কিতে আটক মরণোন্মুখ মা করুণ চোখে তাকিয়ে থাকে বাচ্চাদের দিকে আর বাচ্চাগুলো ঘোঁৎ ঘোঁৎ শব্দসহ গুটি গুটি পায়ে মায়ের বুকের কাছে চলে আসে। মায়ের রক্ত গায়ে মেখে ক্ষুধার্ত শাবকরা চুকচুক করে মুমূর্ষু মায়ের মাই টানতে শুরু করে।’ জুমার আজানের আগেই আমরা মুরগি চোরের বংশ নির্বংশ করে মসজিদে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করি।
লেখক : আইনজীবী ও কথাসাহিত্যিক
E-mail : adv.zainulabedin@gmail.com


আরো সংবাদ



premium cement