২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`
ডাণ্ডাবেড়ি পরা ছাত্রদল নেতা বাবার জানাজায়

এভাবে চললে আমরা হয়তো ‘সভ্য নয়’ বলে পরিচিত হবো : হাইকোর্ট

-

পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলায় ছাত্রদল নেতা মো: নাজমুল মৃধাকে ডাণ্ডাবেড়ি পরা অবস্থায় তার বাবার জানাজায় অংশ নেয়ার ঘটনা হাইকোর্টের নজরে আনা হয়েছে। ডাণ্ডাবেড়ি পরানো বিষয়টি নজরে আনার পর হাইকোর্ট বলেছেন, এভাবে চলতে থাকলে আমরা হয়তো আনসিভিলাইজড (অসভ্য) হিসেবে পরিচিত হবো।
গতকাল বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো: আতাবুল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।
এর আগে ‘বাবার নামাজে জানাজায় ডাণ্ডাবেড়ি পায়ে ছাত্রদলের নেতা’ শিরোনামে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন মানবাধিকার আইনজীবী ও বিএনপির আইন সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।

এই প্রতিবেদন নজরে এনে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনার প্রদানের আবেদন করেন আইনজীবী কায়সার কামাল। আদালত বলেন, ‘আমরা দেখেছি।’ তখন কায়সার কামাল বলেন, একের পর এক এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। রাষ্ট্র দিন দিন নাগরিকদের প্রতি নিষ্ঠুরতা প্রদর্শন করছে।

একপর্যায়ে আদালত বলেন, চাইলে আগের রিটে সম্পূরক আবেদন দিতে পারেন। চাইলে নতুন করে আবেদন নিয়েও আসতে পারেন।
আদালতে কায়সার কামালের সাথে ছিলেন আইনজীবী মো: মাকসুদ উল্লাহ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।

এ বিষয়ে ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় এসেছে পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে ছাত্রদল এক নেতা তার বাবার নামাজে জানাজা পড়েছেন ডাণ্ডাবেড়ি পরা অবস্থায়। বিষয়টি আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে, আদালত নির্দেশনা দিয়েছেন যে বর্তমানে ডাণ্ডাবেড়ি পরানোর বিষয়ে যে মামলা আছে সে মামলার অন্তর্ভুক্ত করতে। অথবা এ বিষয়ে আলাদা একটি আবেদন করতে বলেছেন। তিনি আরো বলেন, আমরা আদালতকে বলেছি রাষ্ট্র ক্রমান্বয়ে তার নাগরিকদের প্রতি হিংস্র আচরণ করছে। এবং দিন দিন এটা বেড়েই চলেছে। যে কারণে এটার একটা একটা সেটেলমেন্ট দরকার। আমরা আরো বলেছি দেশের ভাবমূর্তি বহিঃবিশ্বে খারাপ হচ্ছে। কারণ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মিডিয়াতে এগুলো আসছে। যে জানাজা পড়াতে গেলেও ডাণ্ডাবেড়ি পরানো হচ্ছে। সব কিছু বিবেচনা করে আদালত আমাদের একটি আবেদন করতে বলেছেন। আমরা যথা শিগগির সম্ভব আবেদন করব। আমরা পৃথকভাবে একটি আবেদন করতে পারি বা আগের আবেদনের সাথে সংযুক্ত করতে পারি।

তিনি অভিযোগ করেন, সরকারবিরোধী যারা রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী আছেন। তাদের ওপরেই এই নৃশংসতা প্রয়োগ করা হচ্ছে। এখানে রাষ্ট্রের দায়িত্ব নাগরিকের সাংবিধানিক ও মৌলিক অধিকার সমুন্নত রাখা।

উল্লেখ্য, গত শনিবার পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো: নাজমুল মৃধা বাবার জানাজায় অংশ নেয়ার জন্য প্যারোলে মুক্তি পান। কিন্তু ডাণ্ডাবেড়ি পরা অবস্থায় তার বাবার নামাজে জানাজায় অংশ নিতে হয়।

এ বিষয়ে একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘প্যারোলে মুক্তি পেয়ে ডাণ্ডাবেড়ি পরা অবস্থায় বাবার জানাজায় অংশ নিয়েছেন ছাত্রদল নেতা মো: নাজমুল মৃধা। সময় সংক্ষিপ্ত হওয়ার কারণে নির্ধারিত জানাজার আগেই আয়োজন করা হয় বিশেষ জানাজার। শনিবার বেলা ৩টার দিকে পশ্চিম সুবিদখালী গ্রামে ওই জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজার সময় নাজমুলের হাতকড়া খুলে দেয়া হলেও খোলা হয়নি পায়ের ডাণ্ডাবেড়ি। জানাজা শেষে তাকে আবার পটুয়াখালী জেলা কারাগারে পাঠায় পুলিশ।


আরো সংবাদ



premium cement