০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`


গোমতীর মাটি লুট : হুমকিতে বাঁধ ও জমিv

দেখার কি কেউ নেই?

-

কুমিল্লা জেলার প্রধান নদী, জাতীয় কবি নজরুলের গানে উল্লিখিত ও স্মৃতিধন্য, ঐতিহ্যবাহী গোমতীর মাটি অবাধে লুট করে নেয়া হচ্ছে। জেলা সদরের আশপাশের এলাকায় এই বেআইনি তাণ্ডবের দরুন বন্যা প্রতিরক্ষা বাঁধ এবং ফসলি জমি এখন হুমকির সম্মুখীন। নয়া দিগন্তের সংবাদদাতার পাঠানো সচিত্র সংবাদে এ কথা জানা গেছে। সাথে ছাপানো ছবিতে দেখা যায়, মাটিখেকো দুর্বৃত্তদের অপতৎপরতায় বুড়িচংয়ের বাগিলারা এলাকাতে গোমতী নদীর বাঁধ ক্ষতবিক্ষত হয়ে পড়েছে।

খবরে বলা হয়েছে, গোমতীর চর থেকে মাটি কেটে ট্রাকযোগে বহন করা হচ্ছে। এতে আবাদি জমিজিরাত ও বাঁধ হুমকির শিকার। ভারী ড্রাম্প ট্রাকযোগে মাটি পরিবহনের ফলে এলাকার রাস্তাঘাটও মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছে। জেলা প্রশাসন গোমতীর প্রতিরক্ষা বাঁধ ও চর রক্ষার জন্য ‘দিনরাত’ নাকি অভিযান চালাচ্ছে। তবে মাটি লুটের পাঁয়তারা ও কর্মকাণ্ড অব্যাহত রয়েছে। সরেজমিন ঘুরে এবং স্থানীয় নানা সূত্রে জানা গেছে বিশেষত ময়নমতি ইউনিয়নে গোমতীর বিশাল চরের কথা।  প্রতি বছর বর্ষায় নদীর উজান থেকে নেমে আসে বিপুল পরিমাণ পলি, আর উর্বর হয়ে ওঠে নদীর চর এলাকার জমি। কিন্তু কিছু প্রভাবশালী লোক অবাধে মাটি কেটে নিচ্ছে। ফলে স্থানীয় কৃষকদের মুখের হাসি মিলিয়ে গিয়ে এখন চলছে হাহাকার। গ্রামবাসী জানিয়েছেন, কেবল অতিরিক্ত বর্ষার সময়টুকু বাদে প্রায় সারা বছরই খননযন্ত্র দিয়ে চরের মাটি সাবাড় করা হচ্ছে। এ মাটি নেয়া হচ্ছে বিভিন্ন প্রকল্পের নিচু জমি ভরাট করতে, হাউজিংয়ের কাজে, ইটের ভাটায় কিংবা জলাশয় ভরাট করার জন্য। সংশ্লিষ্ট ট্রাকগুলো বারবার ওঠানামা করায় নদীর বাঁধ হচ্ছে ক্ষতিগ্রস্ত। তেমনি মাটি কাটা ও পরিবহনের প্রতিক্রিয়ায় ফসলের জমিতে ভাঙন ধরেছে। রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতাপুষ্ট প্রভাবশালী চক্র প্রতি দিন চরাঞ্চল, এমনকি গোমতী নদীর মূল অংশের মাটিও লুটপাট করছে। এ দিকে মূল বাঁধেরও ক্ষতি হচ্ছে। ফসলি জমি ভাঙছে বিধায় কৃষকদের চাষাবাদে নিদারুণ সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। প্রধানত রাতে মাটিবাহী ট্রাকগুলো বেপরোয়াভাবে চলাচল করে। ফলে এলাকার মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা এবং ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনার ক্ষতি ছাড়াও ব্যাপক বায়ুদূষণের কারণে লোকজনের দুর্দশা এখন চরমে। অপর দিকে মাটি বোঝাই ট্রাক চলাচলের ফলে গ্রামীণ সড়কের বেশ কয়েকটি কালভার্ট অকার্যকর হয়ে পড়েছে। মাটিখেকোদের তাণ্ডব বন্ধ না হওয়ায় শত একর জমিতে ফসল আবাদ বন্ধ হয়ে গেছে। 

এ ব্যাপারে পাউবোর সংশ্লিষ্ট ইঞ্জিনিয়ার ফোন ধরেননি বারবার যোগাযোগের চেষ্টা সত্ত্বেও। আর বুড়িচংয়ের ইউএনও বলেছেন, ‘ডিসি সাহেব এ বিষয়ে কঠোর ভূমিকায় রয়েছেন। ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে দ্রুত।’ তবে  এ পদক্ষেপ কখন নেয়া হবে, তা উল্লেøখ করা হয়নি।

আমরা মনে করি, কর্তৃপক্ষ সব ধরনের ঢিলেমি বা শিথিলতা পরিহার করে অবিলম্বে কঠোর পদক্ষেপ নিয়ে সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগ করবে এবং দলমত নির্বিশেষে সব ভূমিদস্যু দমনে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেয়া হবে।


আরো সংবাদ



premium cement