১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ জিলকদ ১৪৪৫
`


ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে আবার চালু হলো বিআরটিসি বাস

-

দুই বছর বন্ধ থাকার পর ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে আবার চালু হয়েছে সরকার নিয়ন্ত্রিত পরিবহন বিআরটিসি বাস সার্ভিস। আজ বুধবার বেলা ১১টায় গুলিস্তান বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের ২নং গেট এলাকায় এ সার্ভিসের উদ্বোধন করেন সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এসময় উপস্থিত ছিলেন বিআরটিসির চেয়ারম্যান ফরিদ আহমদ ভূঁইয়া, নারায়ণগঞ্জ ডিপোর ইনচার্জ প্রকৌশলী কামরুজ্জামানসহ অন্যরা।

আগে এ রুটে এসি ও নন-এসি চললেও এবার শুধু এসি বাস চলবে। ইতোমধ্যে নারায়ণগঞ্জ ডিপোতে ১১টি বিলাসবহুল বাস সংযুক্ত হয়েছে। কাউন্টার সার্ভিসভিত্তিক এ বাসে টিকিটের মূল্য ধরা হয়েছে ৫৫ টাকা। তবে চাষাঢ়া থেকে ঢাকা যাওয়া যাবে ৫০ টাকায়।

সূত্রে জানা গেছে, নগরী থেকে ঢাকাগামী যাতায়াত করে বর্তমানে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত শীতল পরিবহন। এর টিকিটের মূল্য ৫৫ টাকা। পাশাপাশি রয়েছে নন-এসি বাস বন্ধন, উৎসব, আনন্দ, সেতু ও হিমাচলসহ আরো কয়েকটি পরিবহন।

বিআরটিসি ডিপোতে ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী জেড এ কামরুজ্জামান জানান, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দুই বছর ধরে নানা কারণে এ রুটে বিআরটিসি সার্ভিস বন্ধ রয়েছে। এটি খুব দুঃখজনক। এ রুটে আবার বিআরটিসি বাস সার্ভিস চালুর উদ্যোগ নেয় সরকার। এর অংশ হিসেবে গত ৭ মে ১১টি বিলাসবহুল বাস ভারত থেকে আনা হয়েছে। চাহিদা ছিল ২৫টি বাসের। পর্যায়ক্রমে আরো বাস আসবে। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এ বাসের সিট সংখ্যা ৫১টি। অত্যাধুনিক সব সুবিধা রয়েছে এসব বাসে।

প্রকৌশলী জেড এ কামরুজ্জামান জানান, কোনো ঠিকাদারের মাধ্যমে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে বিআরটিসি বাস চলবে না। সরাসরি বিআরটিসি কর্তৃপক্ষ এটি পরিচালনা করবে।

জানা গেছে, আগে নগরীর মেট্রো হলের মোড় থেকে বিআরটিসি বাস ছাড়ত। এবার মণ্ডলপাড়া পুল এলাকা থেকে ছাড়ার চিন্তা রয়েছে। সেক্ষেত্রে জনপ্রতি ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৫ টাকা। তবে চাষাঢ়া থেকে উঠলে ৫০ টাকা করে রাখা হবে। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ পথে ৪টি কাউন্টার সার্ভিসের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এগুলো হলো- মন্ডলপাড়া, চাষাঢ়া, শিবু মার্কেট ও জালকুড়ি।

এদিকে বিআরটিসি এসি বাসের ভাড়া ৪৫ টাকা ও ননএসি-বাসের ভাড়া ৩০ টাকার ঊর্ধ্বে না করার দাবি জানিয়েছে যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ ফোরাম। এক বিবৃতিতে এ দাবি জানান সংগঠনটি।

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি যে, নারায়ণগঞ্জে গণপরিবহনে বেসরকারি বাস নিয়ে চিহ্নিত একটি গোষ্ঠী দীর্ঘদিন ধরে যে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি তৈরি করে রেখেছে। সরকারি পরিবহন সংস্থা বিআরটিসির ভূমিকা যেন তাতে সহায়তা করে চলেছে। পরিবহন থেকে চাঁদা আদায়ের জন্য এখানে সুবিধাভোগী একটি গোষ্ঠী সিন্ডিকেট তৈরি করে জনগণের সাথে সাথে বেসরকারি বাসমালিকদেরকেও জিম্মি করে রেখেছে। বাসের বহু মালিক এ বিষয়ে ভিন্ন সময় র‌্যাব ও পুলিশ প্রশাসনসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযোগ করে এসেছে।

২০১১ সালে নারায়ণগঞ্জে বাসভাড়া বৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা আন্দোলনের মধ্যদিয়ে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে বিআরটিসির এসি ও নন-এসি বাস পুনরায় চালু করা হয়েছিল। কিন্তু এখানে চলমান বেসরকারি নন-এসি বাসগুলোকে সুবিধা দেয়ার জন্য সে সময় সাত দিনের মাথায় নন-এসি বাস বন্ধ করে শুধুমাত্র এসি-বাস চালু রাখা হয়। গত দুই বছর আগে এখানে বেসরকারি এসি-বাস ‘শীতল’ চালু হওয়ার পরপরই আবার বিআরটিসি তাদের সকল এসি-বাস বন্ধ করে দেয়। তখন শীতল বাসের ভাড়া ৫৫ টাকা হলেও বিআরটিসি বাসের ভাড়া ছিল ৪৫ টাকা। যার ফলে এই বেসরকারি শীতল বাসকে একচেটিয়া ব্যবসা করার সুযোগ দেয়ার জন্যই বিআরটিসি তাদের বাস বন্ধ করে দেয় বলেই নারায়ণগঞ্জের মানুষ তখন মনে করে।

এখন আবার বিআরটিসি কর্তৃপক্ষ তাদের এসি-বাস ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে চালু করতে যাচ্ছে বলে আমরা তাকে স্বাগত জানাই। আমরা এসি-বাসের সাথে সাথে নন-এসি বাস চালুরও দাবি জানাচ্ছি এবং কোনো ভাবেই এসিবাসের ভাড়া ৪৫ টাকা ও ননএসি-বাসের ভাড়া ৩০ টাকার ঊর্ধ্বে না করারও জোর দাবি জানাচ্ছি।


আরো সংবাদ



premium cement