১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ভারতীয়ের ট্যুইটে আরো খেপলেন স্যামি

ড্যারেন স্যামি
ড্যারেন স্যামি - সংগৃহীত

'কালু' কোনো বর্ণবিদ্বেষী নাম নয়! ভারতীয় পরিবারে, পাড়ায়, মহল্লায় আকছারই এই নামে ডাকা হয় যে কাউকে। কখনো আদরের সুরেও ব্যবহার করা হয় কালু নামটি। ভারতীয় ক্রিকেটারদের ব্যবহারে অসন্তুষ্ট ক্যারিবিয়ান সাবেক অধিনায়ক ড্যারেন স্যামিকে ঠিক এই কথা বলেই আগুনের আঁচ একটু হলেও কমাতে চাইলেন এক ভক্ত। কিন্তু তাতে যেন হিতের বিপরীতই হলো। রাগ আরও কয়েক গুন বেড়ে গেল ড্যারেন স্যামির।

ভারতের মাটিতে আইপিএল খেলার সময় তাকে বর্ণবিদ্বেষের শিকার হতে হয়েছে বলে অভিযোগ করেছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেটার ড্যারেন স্যামি। সাবেক ক্যারিবিয়ান অধিনায়কের অভিযোগ, ভারতে তাকে 'কালু' বলে ডাকা হতো। সেই অভিযোগের প্রমাণ হিসেবে ইশান্ত শর্মার একটি ইনস্টাগ্রাম পোস্ট ভাইরাল হয়েছিল সম্প্রতি। আর তাতেই প্রমাণ আরো জোরদার হয়। এরপরই বুধবার ট্যুইটারে এক ভারতীয় 'কালু' নামের সারবত্তা বোধানোর চেষ্টা করলেন ডারেন স্যামি-কে। কিন্তু তাতেও আখেরে কাজের কাজ কিছুই হলো না।

ট্যুইটারে অভিনব খারে নামের ওই ইউজার লিখছেন, "ডারেন স্যামি কালু মানেই কোনো বর্ণবিদ্বেষী মন্তব্য নয়। ভারতে প্রায় সব পরিবারেই অল্প বিস্তর কালু নামটি ব্যবহার করা হয়। আমার দাদুও আমাকে কালু নামে ডাকতেন। এটা নির্ভর করে কোন পরিপ্রেক্ষিতে আর কোন ভঙ্গিমায় বলা হচ্ছে। হ্যাঁ এটা বর্ণবিদ্বেষী হতেই পারে। তবে সবসময় নয়।"
আর তারই উত্তরে ড্যারেন স্যামি বললেন, "এই শব্দটা যদি বর্ণবিদ্বেষী মন্তব্য যদি হয়েও থাকে, তাহলে সেটা প্রয়োগ করার কোনো দরকার আছে বলে আমার মনে হয় না।"

আমেরিকায় কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডের নৃশংস হত্যা ঘিরে উত্তাল বিশ্ব। সেই অস্থির সময়েই আইপিএলে বর্ণবিদ্বেষের মারাত্মক অভিযোগ আনলেন ড্যারেন স্যামি। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দু’বার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতানো অধিনায়ক স্যামির অভিযোগ, আইপিএলে খেলার সময় তাকে এবং শ্রীলঙ্কার থিসারা পেরেরাকে বর্ণবিদ্বেষমূলক মন্তব্য শুনতে হত। ‘কালু’ বলে ডাকা হতো তাদের। যার প্রকৃত অর্থ এত দিনে আবিষ্কার করেছেন তিনি।

স্যামি তখন আইপিএলে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে খেলতেন। তখন স্যামি এর মানে না বুঝলেও এখন তিনি বুঝতে পেরেছেন, এটা তার গায়ের রং নিয়ে ব্যঙ্গ করে বলা। ইন্সটাগ্রামে বিষয়টি এ বার সামনে এনেছেন তিনি। স্যামি বলেছেন, ‘ওই সময় থিসারা আর আমাকে অনেকেই কালু বলে ডাকত। আমি ভাবতাম, এর মানে আমি একজন শক্তিশালী কালো মানুষ। কিন্তু এখন আমি বুঝতে পেরেছি, কালু শব্দের আসল মানে কী! এটা জানার পর আমি যথেষ্ট ক্ষুব্ধ।’ ইন্সটাগ্রামে এই পোস্ট দিয়ে বেশ কয়েকটি রাগের ইমোজিও দিয়েছেন তিনি। তবে ব্যক্তিগতভাবে বিশেষ কারো নাম স্যামি করেননি।

স্যামি অবশ্য আগে থেকেই এ নিয়ে সরব। কিছুদিন আগেই ট্যুইট করে আইসিসির কাছে তিনি জানতে চান, বর্ণবিদ্বেষের বিরুদ্ধে আইসিসি কেন ভূমিকা নিচ্ছে না? ট্যুইটে বলেছিলেন, ‘আইসিসি এবং অন্যান্য ক্রিকেট সংস্থা কি দেখতে পাচ্ছ না, আমাদের মতো মানুষদের সঙ্গে কী হচ্ছে? এটা শুধু আমেরিকার সমস্যা নয়। এটা প্রতিদিন সব জায়গায় হচ্ছে। #ব্ল্যাকলাইভসম্যাটার। এখন আর চুপ করে বসে থাকার সময় নয়।’

স্যামির আগে ক্রিস গেইলও এই ধরণের অভিযোগ করেছিলেন। বলেছিলেন, বর্ণবিদ্বেষ এখন শুধু ফুটবলে নয়, ক্রিকেটেও ভয়ঙ্কর ভাবে ছড়িয়েছে। বলেছিলেন, ‘আমি কৃষ্ণাঙ্গ হিসেবে গর্বিত ও শক্তিশালী।’ গেইলকে সমর্থন করেই আইসিসিকে সরব হতে বলেছিলেন স্যামি। এ বার নিজেই সরাসরি জড়িয়ে গিয়েছেন এই ক্যারিবিয়ান তারকা। এখন স্যামির অভিযোগকে আইপিএল-এর গভর্নিং কাউন্সিল কী ভাবে দেখবে, সেই প্রশ্ন খুবই জরুরি হয়ে উঠছে। এর আগে কোনও বিদেশি ক্রিকেটার ভারতে বর্ণবিদ্বেষ নিয়ে এই ভাবে সরাসরি মুখ খোলেননি। সে জন্যই এই অভিযোগ গুরুত্ব পাচ্ছে।

সূত্র : এই সময়


আরো সংবাদ



premium cement