১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`
করোনায় লাশ নেয়নি পরিবার

না’গঞ্জে নাম বিভ্রাটে বাবুল চন্দ্র দাসের জানাজা ও দাফন

-

বাবুল চন্দ্র দাস। বয়স ৫০ বছর। পেশায় দর্জি শ্রমিক। নারায়ণগঞ্জ শহরতলির সৈয়দপুর এলাকায় গত ছয় বছর ধরে দর্জি দোকানে কাজ করেন। পরিবারের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় দোকানে তার খাওয়া দাওয়া, দোকানে তার রাত কাটে। সম্প্রতি করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় স্থানীয়রা তাকে প্রথমে মহাখালীর একটা হাসপাতালে চিকিৎসা করান। পরে তাকে স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বারের সহায়তায় ভর্তি করা হয় নারায়ণগঞ্জ ৩ শ’ শয্যা হাসপাতালে। ভর্তি করার সময় হাসপাতালের রেকর্ড খাতায় বাবুল চন্দ্র দাসের নাম সংক্ষিপ্ত করে শুধু বাবুল লেখা হয়।
গত শনিবার দুপুরে হাসপাতালে মারা যান বাবুল চন্দ্র দাস। করোনায় মারা যাওয়ার খবরে বাবুল চন্দ্র দাসের লাশ নিতে আসেনি কেউ। পরিবারে মুঠোফোনে খবর পাঠানোর পরও কেউ আসেনি লাশ নিতে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বাবুলের লাশ নিয়ে পড়ে বিপাকে। পরবর্তীতে স্থানীয় কাউন্সিলর শওকত হাশেম শকুকে জানানো হলে তিনি ও আরেক কাউন্সিলর আফরোজা হাসান বিভা মিলে বাবুলের লাশ গ্রহণ করেন। হাসপাতালে রেকর্ড অনুযায়ী মৃতের নাম বাবুল লেখা থাকায় তাকে মুসলিম মনে করে সিটি করপোরেশনে দাফন-টিম বাবুলের সৎকার না করে তার নামাজে জানাজা এবং দাফন করে ফেলে। এ দিকে হিন্দু ধর্মাবলম্বী বাবুল চন্দ্র দাসের নামাজে জানাজা ও দাফন করার খবরে তার পরিবার ও কর্মস্থল সৈয়দপুর এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়। এ নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে দোষারোপ করে তারা।
বাবুল চন্দ্র দাসকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন নারায়ণগঞ্জের গোগনগর ইউপি সদস্য সৈকত হোসেন । তিনি রোববার রাতে ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, বাবুলের মৃত্যুর পরপর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের জানালে আমরাই তার সৎকারের ব্যবস্থা করতাম। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব জ্ঞানহীন চরম অবহেলার পরিচয় দিয়েছে। হাসপাতালের সুপারিনটেনডেন্ট ডা: এম এ বাশার জানান, শনিবার সকালে হাসপাতালে আইসোলেশনে থাকা করোনা রোগী বাবুল মারা যান। শনিবার দুপুরে হাসপাতালের এন্ট্রি খাতার তথ্যানুযায়ী মৃত রোগীর নাম বাবুল। বয়স পঞ্চাশ। সৈকত নামের একজন তাকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছেন। সৈয়দপুর এলাকায় তার বাড়ি। সে সময় তিনি জানান, হাসপাতালে ভর্তির পর থেকে তার আত্মীয়রা কেউ খোঁজ নেয়নি। মৃত্যুর পর তার পরিবারকে জানানো হলেও করোনা রোগী হওয়ায় তারা লাশ নিতে চাচ্ছে না।
এ ব্যাপারে কাউন্সিলর শওকত হাশেম শকু জানান, যেহেতু হাসপাতালের নামের রেকর্ড মৃতের নাম বাবুল উল্লেখ করা হয়। মুসলমান হিসেবে আমরা লাশ দাফনের ব্যবস্থা করি। এ ছাড়া গোসলের সময় মৃতকে খতনা করা দেখতে পাই।
তবে খতনার বিষয়ে হিন্দু ধর্মাবলম্বী গৌতম সাহা রোববার রাতে নয়া দিগন্তকে জানান, বাবুল চন্দ্র দাস হিন্দু ধর্মাবলম্বী। এলাকার লোকজনের সাথে কথা বলে জেনেছি। আর অনেক সময় ছোটকালে অসুস্থতার কারণে অনেক হিন্দু ধর্মাবলম্বীর খতনা করা হয়। বাবুল ধর্মান্তরিত হয়েছে এমন কোনো তথ্য এলাকার লোকজন জানেন না। এ দিকে বাবুল দাসের মেয়ে কৃষ্ণা রানী দাস জানান, তার বাবার সাথে ১০-১৫ বছর ধরে সম্পর্ক নেই তাদের। চাঁদপুরের মতলব উপজেলার লবারকান্দিতে থাকেন কৃষ্ণা রানী দাস। টেলিফোনে তিনি জানান, অন্তর নামের তার এক ভাই রয়েছে। তার বাবা যার দোকানে কাজ করতেন সেই খোকন মণ্ডলের কাছ থেকেই তিনি তার বাবার মৃত্যুর খবর পান। তবে রোববার বিকেলে হাসপাতাল সুপার ডা: বাশার বলেন, বাবুল করোনা পজিটিভ এটি জানার পর থেকেই তার পরিবার যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। যেদিন বাবুল মারা যান সেদিন বারবার তার পরিবারকে ফোন দেয়া হয়। কিন্তু তাদের সাথে যোগাযোগ করা যায়নি। তারা লাশ গ্রহণ না করায় পরে সিটি করপোরেশনে তার দাফনের ব্যবস্থা করা হয়। হাসপাতাল থেকে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়নি- এমন অভিযোগের ব্যাপারে তিনি বলেন, আমাদের নার্স ডাক্তাররা বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেছে।


আরো সংবাদ



premium cement
নেতানিয়াহুসহ ইসরাইলি মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করবে আইসিসি! ঢাকায় কাতারের আমিরের নামে সড়ক ও পার্ক তেহরানের প্রধান বিমানবন্দরে পুনরায় ফ্লাইট চালু হামলায় কোনো ক্ষতি হয়নি : ইরানি কমান্ডার ইরানের পরমাণু কর্মসূচির ‘কেন্দ্র’ ইস্ফাহান : সাবেক মার্কিন কর্মকর্তা মিয়ানমারের বিজিপির আরো ১৩ সদস্য বাংলাদেশে রুমায় অপহৃত সোনালী ব্যাংকের সেই ম্যানেজারকে চট্টগ্রামে বদলি দুবাইয়ে বন্যা অব্য়াহত, বিমানবন্দর আংশিক খোলা ভারতে লোকসভা নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু শুক্রবার সকালে ঢাকার বাতাস ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ শুক্রবার সকালে ঢাকার বাতাস ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’

সকল