২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

মির্জাগঞ্জে প্রথমবার ব্রকলি চাষে কৃষকের মুখে হাসি

মির্জাগঞ্জে প্রথমবার ব্রকলি চাষে কৃষকের মুখে হাসি - ছবি : নয়া দিগন্ত

পটুাখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলায় এই প্রথমবারের মতো মাঠে চাষ হলো ক্যান্সার প্রতিরোধক সবজি ব্রকলি। এই সবজি চাষে মির্জাগঞ্জের কৃষকদের মাঝে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। ফুলকপির মতো দেখতে গাঢ় সবুজ রঙের এই সবজিতে রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ।

জানা যায়, প্রথমবারের মতো উপজেলার দেউলী সুবিদখালী ইউনিয়নের রানীপুর গ্রামের রমনী ধুপী ৫০ শতক জমিতে উচ্চ মূল্যের ফসল (সবজি) উৎপাদন প্রদর্শনী ‘ব্রকলি’ শীতকালীন এই সবজি চাষ করেছেন। গত ডিসেম্বর মাসের শেষের দিকে ব্রকলির বীজ রোপন করা হলেও বৃষ্টির অভাবে ফলন আসতে একটু সময় লেগেছে। তবে কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী চাষ করে ভালো ফলন পাবেন বলে আশা করছেন। পুষ্টি সমৃদ্ধ হওয়া সত্বেও এই সবজিতে এখনো অভ্যস্ত নয় এলাকার মানুষ।

কৃষক রমনী ধুপী ও আলো রানী বলেন, ব্রকলির পুষ্টিগুণ প্রচুর। গবেষকরা ব্রকলিকে বলছেন আল্টিমেট ক্যান্সার ফুড। প্রতিদিন ব্রকলি খেলে ক্যান্সার প্রতিরোধ হয়। ভিটামিন ‘কে’, ভিটামিন ‘সি’, ফলিক অ্যাসিড, পটাশিয়াম ও ফাইবারে পরিপূর্ণ। ব্রকলি স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। ব্রকলির মধ্যে রয়েছে সালফোরাফেন। যা ক্যান্সার রুখতে সাহায্য করে। লো ক্যালরির এই সবজি হার্ট ভালো রাখতেও সাহায্য করে।

তিনি আরো বলেন, ‘আমি প্রথমবারের মতো ব্রকলি চাষ করেছি। এটা দেখতে ফুলকপির মতো হলেও ফুলগুলো সাদার পরিবর্তে পাতার রংয়ের মতো গাঢ় সবুজ।’

আলাপকালে রমনী ধুপীর পুত্রবধূ আলো রানী বলেন, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের সহায়তায় চারা সার, বীজ ও পরামর্শ পেয়ে আমি ব্রকলি চাষ করতে পেরেছি। ফুল কপির থেকে বেশি দামে প্রতি কেজি বিক্রি করতে পারবো। তাদের দেখাদেখি অনেকে ব্রকলি চাষ করতে আগ্রহী হয়ে উঠছে।’

তিনি জানান, ব্রকলি চাষে পরিমিত সার ও কীটনাশক ব্যবহার করলেই চলে। কীটনাশক ব্যবহারে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। কৃষি অফিসার মাঠে এসে খোঁজ-খবর নেন।

উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো: আরাফাত হোসেন বলেন, এই উপজেলায় প্রথমবারের মতো গ্রীণ ক্রাউন জাতের ব্রকলি উপযোগিতা যাচাইয়ের জন্য চাষ শুরু করেছি। শেষ সময়ে ব্রকলির বীজ রোপন করা হয়েছে। তবুও কৃষকের পরিশ্রমে একটি জাতের ব্রকলি চাষ করে ভালো ফলন আশা করছি। বৃষ্টির অভাবে চাষে কিছু পানির সমস্যা হয়েছে। তবে কৃষক সেচের মাধ্যমে পানির ব্যবস্থা করেছে।

তিনি আরো বলেন, তবে ব্রকলির চাষ অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি সময়ে বীজতলায় বীজ বপন করতে হয়। পরে নভেম্বরের মাঝামাঝি সময় মূল ক্ষেতে রোপন করা হয়। ৭৫ থেকে ৮৫ দিনের মধ্যে এতে ফুল আসে। এটি এ অঞ্চলের মানুষের মধ্যে এখনো তেমন জনপ্রিয়তা পায়নি। ব্রকলির অনেক পুষ্টি ও ওষুধিগুণ রয়েছে। এগুলো জানতে পারলে ভোক্তাদের মাঝে আগ্রহ সৃষ্টি হবে।’ কৃষিতথ্য সার্ভিসের মাধ্যমে এই সব সবজির পুষ্টিগুণ সম্পর্কে প্রচার-প্রচারণা চালানো সম্ভব। মেধা-বিকাশ, চোখের দৃষ্টি, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ, রক্তের সঞ্চালন বৃদ্ধিসহ মানবদেহের স্বাভাবিক পুষ্টি বজায় রাখার পাশাপাশি ব্রকলি অর্থনৈতিক লাভজনক ফসল। এটি চাষ করার জন্য স্থানীয় কৃষকদের সহযোগিতা করা হচ্ছে।


আরো সংবাদ



premium cement