ইবি প্রতিনিধি
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) অর্থনীতি বিভাগের আন্তঃসেশন ফুটবল টুর্নামেন্টে সিনিয়র-জুনিয়রদের মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ভিডিও করতে গেলে ফোন কেড়ে নিয়ে সাংবাকিদের মারধর করেন শিক্ষার্থীরা।
শনিবার (১২ জুলাই) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ফুটবল মাঠে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, শনিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ফুটবল মাঠে অর্থনীতি বিভাগের আন্তঃসেশন খেলাকে কেন্দ্র করে হাতাহাতিতে জড়ান বিভাগটির সিনিয়র ও জুনিয়ররা। এ সময় ভিডিও করতে গেলে দৈনিক আমাদের বার্তার ইবি প্রতিনিধি সাংবাদিক আরিফ বিল্লাহর মোবাইল কেড়ে নেন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের আফসানা পারভীন তিনা। পরে তার উস্কানিতে আরিফকে এলোপাথাড়ি মারধর শুরু করেন ১৫-২০ শিক্ষার্থী। ভুক্তভোগী সাংবাদিকদের অভিযোগপত্র ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে বিষয়টি জানা গেছে।
একইভাবে বার্তা ২৪-এর ইবি প্রতিনিধি নূর ই আলম মারধরের ভিডিও করতে গেলে তাকেও মারধর করেন তারা। পরবর্তীকালে একইভাবে আজকালের খবরের ইবি প্রতিনিধি রবিউল আলম আসলে তাকেও মারধর করেন তারা।
এ সময় অর্থনীতি বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের সাব্বির, নাহিদ হাসান, মিনহাজ, সৌরভ দত্ত, পান্না, ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের অজিল, সাইফুল, রাকিব, মশিউর রহমান রিয়ন ও হৃদয় মারধর করেন সাংবাদিকদের।
ঘটনার পরে সেখানে অন্য সাংবাদিকরা সমাধানের জন্য গেলে তাদের সাথেও বাকবিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে কয়েকজন সাংবাদিক উত্তেজিত হয়ে তাদের দিকে তেড়ে গেলে তাদেরকেও মারধর করেন তারা।
এ বিষয়টি নিয়ে ছাত্রীকে (তিনা) মারার অভিযোগ তুলে ইস্যু তৈরি করে বিষয়টিকে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রের দায়িত্বরত ডাক্তার জানান, তার শরীরে কোনো আঘাতের আলামত পাওয়া যায়নি, তার প্যানিক অ্যাটাক হয়েছিলো। এ ছাড়া প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তিনাকে কোনো মারধর করার ঘটনা ঘটেনি।
প্রত্যক্ষদর্শী ইশতিয়াক ফেরদৌস ইমন বলেন, ‘আমি হট্টগোলের আওয়াজ শুনে মাঠের দিকে এগিয়ে যাই। গিয়ে দেখি কয়েকজন মিলে একজন সাংবাদিককে মারধর করছে। তার পাশে আরেক সাংবাদিক ভিডিও করতে গেলে তাকেও ভিডিও বন্ধ করতে বলা হয়। ভিডিও বন্ধ না করায় তাকে এসে লাথি মারে।’
ভুক্তোভোগী সাংবাদিক আরিফ বিল্লাহ বলেন, ‘ফুটবল মাঠে মারামারির ঘটনা দেখে আমি সংবাদ সংগ্রহের জন্য মোবাইল নিয়ে ভিডিও করা শুরু করি। তৎক্ষণাৎ অর্থনীতি বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তিনা আমার মোবাইল কেড়ে নেয়। আমি মোবাইল কেড়ে নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে সাথে সাথে ৮-১০টা ছেলে এসে আমাকে ঘিরে ধরে চড়, থাপ্পড়, ঘুষি মারা শুরু করে। পরবর্তীকালে আরো দুজন সাংবাদিক আসলে তাদেরকেও মারধর করেন অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত অর্থনীতি বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের নাহিদ হাসানকে কল দেয়া হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তবে আরেক সাংবাদিককে তিনি বলেন, ‘আমার গলা ধরেছে তখন আমি কী করবো?’ এ কথা বলেই তিনি উত্তেজিত হয়ে সেই সাংবাদিকের কল কেটে দেন।
এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহিনুজ্জামান বলেন, আমি ঘটনাটি শোনার পরই ঘটনাস্থলের গিয়ে সবাইকে নিবৃত করেছি। পরবর্তীকালে অভিযোগ অনুযায়ী পদক্ষেপ নেয়া হবে।