লিবিয়া হতে ইতালি যাওয়ার পথে ভূমধ্যসাগরের তিউনিসিয়া উপকূলে নৌকাডুবিতে বিয়ানীবাজারের সাহেদ আহমদ খান (৩২) নামের এক যুবক নিখোঁজ হয়েছেন। তিনি উপজেলার চারখাই ইউনিয়নের কচকট খা গ্রামের সাব্বির আহমদের পুত্র। রবিবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন নিখোঁজ সাহেদ আহমদ খানের ছোটভাই জাহেদ আহমদ খান।
জাহেদ আহমদ খান জানান, আমার বড়ভাই সাহেদ আহমদ খান লিবিয়া হয়ে ইতালি যাওয়ার উদ্দেশ্যে সম্ভবত ওই ট্রলারে ছিলেন। সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার পারভেজ আহমদ নামের এক দালালের সাথে ইতালি যাবার জন্য চুক্তি হয়েছিল। ভাইয়ের খোঁজ নেয়ার জন্য পরে ভূমধ্যসাগরের তিউনিসিয়া উপকূলে নৌকাডুবি ঘটনার খোঁজ নিতে দালালের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
তিনি আরো জানান- আমার ভাই এখনো বাড়ির কারো সাথে ফোনে যোগাযোগ করেননি। নৌকাডুবির ঘটনা জানার পর থেকে আমাদের মা, তার স্ত্রী ও এক সন্তানসহ পরিবার-পরিজনদের মধ্যে দুঃসংবাদের শঙ্কা কাজ করছে।
স্বপ্নের ইউরোপে পাড়ি জমাতে ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবির ঘটনায় ফেঞ্চুগঞ্জের চার ও গোলাপগঞ্জের দুই তরুণের প্রাণহানি ঘটেছে। শুক্রবার (১০ এপ্রিল) সকালে ভূমধ্যসাগরের তিউনিসিয়া সমুদ্র উপকূলে শতাধিক অভিবাসী বহন করা নৌকাটি ডুবে গেলে প্রায় ৬০ জন নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
এ ঘটনার সিলেটের ৬ যুবক নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। তারা হলেন- উপজেলার সেনেরবাজার কটালপুর এলাকার মুহিদপুর গ্রামের মন্টু মিয়ার ছেলে আহমদ হোসেন (২৪), একই গ্রামের হারুন মিয়ার ছেলে আব্দুল আজিজ (২৫), সিরাজ মিয়ার ছেলে লিটন মিয়া (২৪), দিনপুর গ্রামের আফজাল (২৫), সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শাহরিয়ার আলম সামাদের ছোট ভাই, কুলাউড়ার ভুকশিমাইলের আহসান হাবিব শামীম (২৬) এবং গোলাপগঞ্জের শরীফগঞ্জ ইউনিয়নের কদুপুর গ্রামের ইয়াকুব আলীর ছোট ছেলে কামরান আহমদ মারুফ।
বেঁচে যাওয়া লোকজন তিউনিসিয়ার রেড ক্রিসেন্টকে জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে লিবিয়ার উপকূল থেকে ৭৫ জন অভিবাসী একটি বড় নৌকায় করে ইতালির উদ্দেশে রওয়ানা হন। তিউনিসিয়ার রেড ক্রিসেন্ট কর্মকর্তা মঙ্গি স্মিমকে উদ্ধৃত করে বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, রাবারের তৈরি ‘ইনফ্লেটেবেল’ নৌকাটি ১০ মিনিটের মধ্যে ডুবে যায়। তিউনিসিয়ার জেলেরা ১৬ জনকে উদ্ধার করে শনিবার সকালে জারযিজ শহরের তীরে নিয়ে যায়। উদ্ধার হওয়ায় ১৬ জনের ১৪ জনই বাংলাদেশি। উদ্ধার হওয়া অভিবাসীরা জানান, ঠান্ডা সাগরের পানিতে তারা প্রায় আট ঘণ্টা ভেসে ছিলেন।