২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

শিগগিরই ডুবে যাবে মালদ্বীপ!

- ছবি : সংগৃহীত

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় দ্রুত সহজলভ্য অর্থায়নের ব্যবস্থা করতে না পারলে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় মালদ্বীপ তার পুরো দ্বীপপুঞ্জ হারাতে পারে। এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

ডুবতে থাকা দ্বীপপুঞ্জ এবং বৈশ্বিক উষ্ণায়নের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য মালদ্বীপের সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাশিদ এক দশক আগে পানির নিচে ডুবুরির পোশাক পরে মন্ত্রিসভা নিয়ে বৈঠক করেন। সে সময় বিষয়টি বেশ আলোচিত হয়েছিল। মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাশিদ ও তার ডেপুটি মোহাম্মদ ওয়াহিদসহ মন্ত্রী পরিষদের ডজন খানেক সদস্য সমুদ্রের ২০ ফুট নিচে সভা করেন।

মনোরম পরিবেশ, আদিম সমুদ্রসৈকত ও ক্রান্তীয় প্রবাল প্রাচীর ও সাদা বালুর দেশ হিসেবে পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় এক ভ্রমণের জায়গা মালদ্বীপ। তথাপি সমুদ্র দেয়ালের মতো জটিল অবকাঠামো নির্মাণ করতে দেশটি অর্থের জোগান দিতে হিমশিম খাচ্ছে।

মালদ্বীপ বিশ্বের সবচেয়ে নিচু দেশ। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে দেশটির উচ্চতা মাত্র ২ দশমির ৩ মিটার এবং গড় উচ্চতা ১ দশমিক ৫ মিটার। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে যাওয়ায় দেশটি তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় রয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল্লাহ শহীদ দিল্লিতে রয়টার্সকে বলেন, ‘ছোট দেশের পক্ষে অর্থের জোগান দেয়া সহজ নয়।’ ‘হয়তো অর্থ পেতে পেতে আমরা পানির নিচে তলিয়ে যাব।’

গত ডিসেম্বরে মাদ্রিদে জাতিসঙ্ঘের জলবায়ু সম্মেলনে মালদ্বীপ এবং অন্যান্য অরক্ষিত দেশ জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে জড়িত দুর্যোগ এবং দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি মোকাবেলায় সহায়তা করার জন্য নতুন অর্থায়নে বাস্তবসম্মত অগ্রগতির প্রতি জোর দিয়েছিল, তবে তা ব্যর্থ হয়। শহীদ আশাবাদী যে, আগামী নভেম্বরে গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া পরের দফা আলোচনায় আরো ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে।

২০০৪ সালে ভারত মহাসাগরে সৃষ্ট সুনামির আঘাতে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাষ্ট্রটি বিধ্বস্ত হয়। ক্ষতির পরিমাণ ছিল প্রায় ৪৭০ মিলিয়ন ডলার। যার ফলে মোট জিডিপির ৬২ শতাংশ আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ে দেশটি। সুনামির আঘাতে মালদ্বীপের একমাত্র আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ বহু স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

গোটা বিশ্বের জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে আজ জনমত গড়ে উঠেছে। মালদ্বীপও এর ব্যতিক্রম নয়, বিশেষ করে দেশটি এই ইস্যুতে সবচেয়ে জোরালো কণ্ঠস্বর বলে পরিচিত। কারণ জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে যে দেশগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে মালদ্বীপ তার মধ্যে সবার আগে।

পরিবেশবিদদের আশঙ্কা সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে এই শতাব্দীর শেষ নাগাদ দ্বীপরাষ্ট্রটি সমুদ্রে বিলীন হয়ে যেতে পারে। তাই নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার্থেই গোটা বিশ্ববাসীর নজর কাড়তে সচেষ্ট মালদ্বীপ। রয়টার্স।


আরো সংবাদ



premium cement