২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

পাকিস্তানে হামলা ভারতের

মিরেজ ২০০০ যুদ্ধবিমান - ছবি : সংগৃহীত

কাশ্মিরে পুলওয়ামা হামলার প্রেক্ষিতে শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানে হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেছে ভারত। নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মিরে বিদ্রোহীদের একটি ঘাঁটি ধ্বংস করে ভারতীয় বিমানবাহিনী। অবশ্য পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ জানায়, তাদের বিমানবাহিনীর তাড়া খেয়ে কোনো কিছু করার আগেই নিজ আকাশসীমায় ফিরে যায় সেগুলো।

ভারতের সংবাদ সংস্থা এএনআইয়ের বরাত দিয়ে ভারতের গণমাধ্যমগুলো মঙ্গলবার জানায়, রাত সাড়ে ৩টায় ১২টি মিরেজ ২০০০ যুদ্ধবিমান পাকিস্তানে অবস্থিত বিদ্রোহীদের ঘাঁটি লক্ষ্য করে লেজার নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থার সাহায্যে ১০০০ কেজি বোমাবর্ষণ করে।

ভারত দাবি করছে, পূর্বপরিকল্পনা অনুসারেই এ অভিযান চালানো হয়। বালাকোট সেক্টর থেকে আজাদ কাশ্মিরের প্রায় ৮০ কিলোমিটার ভিতরে ঢুকে ভারতীয় যুদ্ধবিমানগুলো। এর পর তারা বোমা ফেলে বালাকোট, চাকোটি এবং মুজাফরাবাদে জয়েশ-ই-মোহম্মদের তিনটি লঞ্চপ্যাড ধ্বংস করে। গুঁড়িয়ে দেয়য় জয়েশের কন্ট্রোল রুম আলফা-৩।

ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল প্রধানমন্ত্রীকে নরেন্দ্র মোদীকে এই সেনা অভিযান নিয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট দিয়েছেন।

এদিকে এ অভিযান প্রসঙ্গে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মুখপাত্র মেজর জেনারেল আসিফ গফুর জানিয়েছেন, নিয়ন্ত্রণরেখা লঙ্ঘন করেছে ভারতীয় যুদ্ধবিমান। কিন্তু তিনি দাবি করেন, পাকিস্তানের পাল্টা প্রতিরোধের মুখে পড়ে ভারতীয় যুদ্ধবিমানগুলো ফিরে যায়। তিনি জানিয়েছেন, মুজাফরাবাদ থেকে ভারতীয় বিমানগুলো প্রবেশ করেছিল। তবে সেগুলো বিশেষ কোনো ক্ষয়ক্ষতি করতে পারেনি।

আরো পড়ুন : ভারতের জবাব দিতে প্রস্তুত পাকিস্তান সেনাবাহিনী, সীমান্তে সফরে সেনাপ্রধান
নয়া দিগন্ত অনলাইন ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০৬:৪০
পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রীর সুরেই এ বার সুর চড়াল পাকিস্তানের সেনাবাহিনী। শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ইন্টার সার্ভিসেস পাবলিক রিলেশনস (আইএসপিআর)–এর ডিজি জেনারেল আসিফ গফুর জানান, আগ বাড়িয়ে যুদ্ধে যাবে না পাকিস্তান। কিন্তু ভারত আক্রমণ করলে তারাও ছেড়ে কথা বলবেন না। তার স্পষ্ট কথা, ‘‘ভারত আমাদের চমক দিতে গিয়ে নিজেরাই চমকে যাবে।’’

কাশ্মীরের পুলওয়ামায় সিআরপি বাহিনীর উপর হামলার পরে দু’দেশের মধ্যে ফের তিক্ততা বেড়েছে। গোটা ঘটনায় পাকিস্তান সেনাবাহিনী আর সরকারকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে ভারত। সেই সঙ্গে তাদের অভিযোগের তীর পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের দিকে। হামলার কয়েক দিন পরে সংবাদ সম্মেলনে প্রথম মুখ খোলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। হামলায় ইসলামাবাদের ভূমিকার কথা অস্বীকার করে ইমরান জানিয়েছিলেন ভারত যদি প্রতিশোধ নিতে পাকিস্তানে হামলা করে তা হলে ফল ভালো হবে না। পাল্টা আঘাত করবেন তারাও।

এ বারও পাকিস্তান সেনাবাহিনীও একই কথা বলেছে। তাদের দাবি, কোনো প্রমাণ ছাড়াই হামলার দায় পাকিস্তানের উপরে চাপাচ্ছে ভারত। উল্টে জেনারেল আসিফ এর জন্য ভারতের কাশ্মীর নীতিকেই দায়ী করেছেন। তার কথায়, ‘‘৭২ বছরের ইতিহাস আমাদের। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পরে তৈরি হয় স্বাধীন পাকিস্তান। ভারত এখনো তা মানতে পারেনি।’’ তিনি বলেছেন, ‘‘আমরা যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছি না। কিন্তু ভারত আমাদের চমকাতে চাইলে আমরাই চমকে দেব।’’ একই সঙ্গে শুক্রবারভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে নিশানা করে আসিফ বলেছেন, যুদ্ধ বাধলে তাতে ভারতীয় সাংবাদিকদেরও বড় উস্কানি থাকবে।

তবে মুখে পাল্টা হামলার কথা বললেও পাক অধিকৃত কাশ্মীরে বসবাসকারীদের জন্য গত কাল আলাদা সতর্কতা জারি করেছে পাকিস্তান সরকার। ভারতীয় বাহিনী যদি হামলা করে তার প্রস্তুতি হিসেবে ভিমবের, নীলম, রাওয়ালকোট, হাভেলী, কোটলি, ঝিলম এলাকার বাসিন্দাদের জন্য বিশেষ নির্দেশিকা জারি হয়েছে। বলা হয়েছে, রাতে অযথা আলো জ্বেলে না রাখতে, দল করে না ঘুরতে এবং বাঙ্কারের ব্যবহার বাড়াতে।


আরো সংবাদ



premium cement