২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

নিরাপদ খাদ্য আইন প্রয়োগ করা হোক

নিরাপদ খাদ্য আইন প্রয়োগ করা হোক -

দেশের প্রতিটি মানুষের জীবনধারণের জন্য খাদ্যের সংস্থান করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। এটি নাগরিকদের একটি মৌলিক অধিকার। রাষ্ট্রকে নাগরিকদের জন্য খাদ্যের সংস্থানের পাশাপাশি সে খাদ্য যেন নিরাপদ হয় তা নিশ্চিত করতে হয়। অতীতে নিরাপদ খাদ্য নিয়ে দেশের জনমানুষকে খুব একটা ভাবনায় পড়তে হয়নি। এর পেছনে যে কারণ তা হলো, অতীতে ব্যবসায়ীরা নৈতিকতা, নীতিজ্ঞান ও মূল্যবোধে তাড়িত হয়ে অধিক মুনাফা লাভের আশায় কোনো ধরনের বেআইনি পন্থার আশ্রয় গ্রহণ হতে নিজেদের নিবৃত রাখতেন। বিগত দু’দশকের কিছুকাল আগে থেকে আমাদের দেশের একশ্রেণীর ব্যবসায়ীদের মধ্যে অধিক মুনাফা লাভের প্রবণতা এমনভাবে বিরাজমান যে, যেকোনো ধরনের অনৈতিক ও বেআইনি ছাড়াও মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর এমন খাদ্যের উৎপাদন, প্রস্তুত ও বিপণন হতে তারা বিরত নন। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, কাপড়ের রঙে যে রাসায়নিক ব্যবহার করা হয় তা তারা খাদ্যে বা পানীয়ের মধ্যে ব্যবহারে এতটুকুও বিচলিত নয়।
বর্তমানে পৃথিবীর প্রতিটি দেশেই নিরাপদ খাদ্যকে ভোক্তার অধিকার হিসেবে গণ্য করা হয় এবং এর ব্যত্যয় দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এ ক্ষেত্রে আমাদের দেশও ব্যতিক্রম নয়। আমাদের দেশে ২০০৯ সালে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন প্রণীত হয় এবং ২০১৩ সালে নিরাপদ খাদ্য আইন প্রণীত হয়।

নিরাপদ খাদ্য আইনে নিরাপদ খাদ্য বলতে প্রত্যাশিত ব্যবহার ও উপযোগিতা অনুযায়ী মানুষের জন্য বিশুদ্ধ ও স্বাস্থ্যসম্মত আহার্যকে বুঝানো হয়েছে। একই আইনে বলা হয়েছে, খাদ্য অর্থ চর্ব্য, চুষ্য, লেহ্য বা পেয়সহ সব ধরনের প্রক্রিয়াজাত, আংশিক প্রক্রিয়াজাত বা অপ্রক্রিয়াজাত আহার্য উৎপাদন এবং খাদ্য, প্রক্রিয়াকরণ বা প্রস্তুতকরণে ব্যবহৃত উপকরণ বা কাঁচামালও, যা মানবদেহের জন্য উপকারী আহার্য হিসেবে জীবনধারণ, পুষ্টিসাধন ও স্বাস্থ্য রক্ষা করতে ব্যবহার হয়ে থাকে।

খাদ্যের সংজ্ঞার ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, আহার্য প্রস্তুতকরণে ব্যবহৃত রঞ্জক, সুগন্ধি, মসলা, সংযোজন-দ্রব্য, সংরক্ষণ-দ্রব্য, এন্টি-অক্সিডেন্ট যা মূল আহার্য নয় কিন্তু খাদ্য উৎপাদন, সংরক্ষণ বা প্রস্তুতকরণে ব্যবহার হয়ে থাকে এগুলো খাদ্যের অন্তর্ভুক্ত হবে।

ভোক্তা বলতে সাধারণ অর্থে আমরা যেকোনো পণ্যের ক্রেতা বা গ্রহিতাকে বুঝি। কিন্তু ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ এ ভোক্তাকে সুনির্দিষ্টভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। আইনটিতে বলা হয়েছে, ভোক্তা অর্থ এমন কোনো ব্যক্তি যিনি (ক) পুনঃবিক্রয় ও বাণিজ্যিক উদ্দেশ্য ব্যতীত- (অ) মূল্য পরিশোধে বা মূল্য পরিশোধের প্রতিশ্রুতিতে কোনো পণ্য ক্রয় করেন : (আ) আংশিক পরিশোধিত ও আংশিক প্রতিশ্রুত মূল্যের বিনিময়ে কোনো পণ্য ক্রয় করেন; বা (ই) প্রলম্বিত মেয়াদ বা কিস্তির ব্যবস্থায় মূল্য পরিশোধের প্রতিশ্রুতিতে কোনো পণ্য ক্রয় করেন: (খ) যিনি ক্রেতার সম্মতিতে (ক)এ উল্লিখিত কৃত পণ্য ব্যবহার করেন; (গ) যিনি পণ্য ক্রয় করে তা আত্মকর্ম সংস্থানের মাধ্যমে স্বীয় জীবিকা অর্জনের উদ্দেশ্যে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করেন; (ঘ) যিনি - (অ) মূল্য পরিশোধে বা মূল্য পরিশোধের প্রতিশ্রুতিতে কোনো সেবা, ভাড়া বা অন্যভাবে গ্রহণ করেন; বা (আ) আংশিক পরিশোধিত ও আংশিক প্রতিশ্রুত মূল্যের বিনিময়ে কোনো সেবা, ভাড়া বা অন্যভাবে গ্রহণ করেন; বা (ই) প্রলম্বিত মেয়াদ বা কিস্তির ব্যবস্থায় মূল্য পরিশোধের বিনিময়ে কোনো সেবা, ভাড়া বা অন্যভাবে গ্রহণ করেন; বা (ঙ) যিনি সেবা গ্রহণকারীর সম্মতিতে উপরোল্লিখিত (ঘ) এর অধীন গৃহীত কোনো সেবার সুবিধা ভোগ করেন।
ব্যবসায়ীদের যেসব কাজ ভোক্তা অধিকার বিরোধী কাজ হিসেবে গণ্য হবে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ সে সব কাজের বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে। আইনটিতে বলা হয়েছে, ভোক্তা অধিকারবিরোধী কার্য অর্থ (ক) কোনো আইন বা বিধির অধীন নির্ধারিত মূল্য অপেক্ষা অধিক মূল্যে কোনো পণ্য, ঔষধ বা সেবা বিক্রি করা বা করতে প্রস্তাব করা; (খ) জ্ঞাতসারে ভেজাল মিশ্রিত পণ্য বা ঔষধ বিক্রি করা বা করতে প্রস্তাব করা; (গ) মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিকারক কোনো দ্রব্য, কোনো খাদ্যপণ্যের সাথে যার মিশ্রণ কোনো আইন বা বিধির অধীন নিষিদ্ধ করা হয়েছে, উক্তরূপ দ্রব্য মিশ্রিত কোনো পণ্য বিক্রি করা বা করতে প্রস্তাব করা; (ঘ) কোনো পণ্য বা সেবা বিক্রির উদ্দেশ্যে অসত্য বা মিথ্য বিজ্ঞাপনে ক্রেতা সাধারণকে প্রতারিত করা; (ঙ) প্রদত্ত মূল্যের বিনিময়ে প্রতিশ্রুত পণ্য বা সেবা যথাযথভাবে বিক্রি বা সরবরাহ না করা; (চ) কোনো পণ্য সরবরাহ বা বিক্রির সময় ভোক্তাকে প্রতিশ্রুত ওজন অপেক্ষা কম ওজনের পণ্য বিক্রয় বা সরবরাহ করা; (ছ) কোনো বিক্রি বা সরবরাহের উদ্দেশ্যে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ওজন পরিমাপের কার্যে ব্যবহৃত বাটখারা বা ওজন পরিমাপক যন্ত্র প্রকৃত ওজন অপেক্ষা অতিরিক্ত ওজন প্রদর্শনকারী হওয়া; (জ) কোনো পণ্য বিক্রি বা সরবরাহের ক্ষেত্রে প্রতিশ্রুত পরিমাপ অপেক্ষা কম পরিমাপের পণ্য বিক্রয় বা সরবরাহ করা; (ঝ) কোনো পণ্য বিক্রি বা সরবরাহের উদ্দেশ্যে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে দৈর্ঘ্য পরিমাপের কার্যে ব্যবহৃত পরিমাপক ফিতা বা অন্য কিছু প্রকৃত দৈর্ঘ্য অপেক্ষা অধিক দৈর্ঘ্য প্রদর্শনকারী হওয়া; (ঞ) কোনো নকল পণ্য বা ঔষধ প্রস্তুত বা উৎপাদন করা; (ট) মেয়াদ উত্তীর্ণ বা ঔষধ বিক্রি করা বা করতে প্রস্তাব করা; বা (ঠ) সেবা গ্রহীতার জীবন বা নিরাপত্তা বিপন্ন হতে পারে এমন কোনো কার্য করা, যা কোনো আইন বা বিধির অধীন নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ বা নিরাপদ খাদ্য আইন, ২০১৩ এ ‘ভেজাল’ শব্দটিকে সংজ্ঞায়িত না করে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ এ বলা হয়েছে ‘ভেজাল’ অর্থ পিউর ফুড অর্ডিন্যান্স, ১৯৫৯ এর ধারা ৩(১) এ সংজ্ঞায়িত অফঁষঃবৎধঃরড়হ এবং স্পেশাল পাওয়ারস অ্যাক্ট, ১৯৭৪ এর ধারা ২৫সি বা অন্য কোনো আইনে উল্লিখিত অফঁষঃবৎধঃরড়হ বা ভেজাল।

ভোক্তাদের নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতের জন্য নিরাপদ খাদ্য আইন, ২০১৩ এ যেসব বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে তা হলো- (ক) খাদ্যে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মানব স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর যেকোনো বিষাক্ত দ্রব্যের ব্যবহার না করা; (খ) খাদ্যে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে আইনে নির্ধারিত মাত্রার অতিরিক্ত তেজষ্ক্রিয় বা ভারী ধাতু ব্যবহার না করা; (গ) প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ভেজাল খাদ্য বা খাদ্য উপকরণ উৎপাদন, আমদানি, বিপণন ইত্যাদি না করা; (ঘ) প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে নিম্নমানের খাদ্য উৎপাদন না করা; (ঙ) খাদ্যে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে নির্ধারিত মাত্রার অতিরিক্ত সংযোজন দ্রব্য বা প্রক্রিয়াকরণ সহায়ক দ্রব্যের ব্যবহার না করা; (চ) শিল্প কারখানায় ব্যবহৃত তেল, বর্জ্য, ভেজাল বা দূষণকারী দ্রব্য ইত্যাদি খাদ্য স্থাপনায় না রাখা; (ছ) প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মেয়াদ উত্তীর্ণ খাদ্যদ্রব্য বা খাদ্য উপকরণ আমদানি, প্রক্রিয়াকরণ, মজুদ, সরবরাহ বা বিক্রি না করা; (জ) প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে নির্ধারিত মাত্রার অতিরিক্ত কীটনাশক বা বালাইনাশকের ব্যবহার না করা; (ঝ) প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে অনুমোদন গ্রহণ ব্যতিরেকে বংশগত বৈশিষ্ট্য পরিবর্তনকৃত খাদ্য, জৈব খাদ্য, ব্যবহারিক খাদ্য, স্বত্বাধিকারী খাদ্য উৎপাদন না করা; (ঞ) প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে আইনের অধীন নির্ধারিত পদ্ধতিতে মোড়কীকরণ ও লেবেলিং না করা; (ট) মানব স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর বিবেচিত প্রক্রিয়ায় খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন না করা; (ঠ) রোগাক্রান্ত বা পচা মৎস্য, মাংস, দুগ্ধ বিক্রি না করা; (ড) হোটেল রোস্তরাঁ বা ভোজনস্থলে নির্ধারিত মানদণ্ডের ব্যত্যয়ে পরিবেশন সেবা প্রদান না করা; (ঢ) ছোঁয়াচে ব্যাধিতে আক্রান্ত ব্যক্তি দিয়ে খাদ্যদ্রব্য প্রস্তুত, পরিবেশন বা বিক্রি না করা; (ণ) প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে নকল খাদ্য উৎপাদন বা বিক্রি না করা; (ত) খাদ্য ব্যবসায়ী কর্তৃক আমদানি, উৎপাদন ও বিক্রির রসিদ সংরক্ষণ করা; (থ) নিবন্ধন ব্যতিরেকে খাদ্যের আমদানি, উৎপাদন ও বিক্রি না করা; (দ) খাদ্য ব্যবসায়ী কর্তৃক খাদ্যসংশ্লিষ্ট যেকোনো বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে সহায়তা দান; (ধ) খাদ্যদ্রব্য বিপণন বা বিক্রির উদ্দেশ্যে বিজ্ঞাপনে অসত্য বা বিভ্রান্তিকর তথ্য না দেয়া; (ন) খাদ্যদ্রব্যের গুণগত মানবিষয়ক যেকোনো ধরনের মিথ্যা বিজ্ঞাপন প্রস্তুত, মুদ্রণ বা প্রচার থেকে বিরত থাকা।

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ এ যেসব কার্যকলাপকে অপরাধ গণ্য করা হয়েছে তা হলো- (ক) আইন ও বিধি দ্বারা নির্ধারিত হওয়া সত্ত্বেও পণ্যে মোড়ক ব্যবহার না করা; (খ) মূল্যের তালিকা প্রদর্শন না করা; (গ) সেবার মূল্যের তালিকা সংরক্ষণ ও প্রদর্শন না করা; ধার্যকৃত মূল্যের অধিক মূল্যে পণ্য, ঔষধ বা সেবা বিক্রি করা; (ঘ) ভেজাল পণ্য বা ঔষধ বিক্রি করা; (ঙ) খাদ্যপণ্যে নিষিদ্ধ দ্রব্য মিশ্রণ করা; (ঙ) অবৈধ প্রক্রিয়ায় পণ্য উৎপাদন বা প্রক্রিয়াকরণ করা; (চ) মিথ্যা বিজ্ঞাপন দিয়ে ক্রেতাসাধারণকে প্রতারিত করা; (ছ) প্রতিশ্রুত পণ্য বা সেবা যথাযথভাবে বিক্রি বা সরবরাহ না করা; (জ) ওজনে কারচুপি করা; (ঝ) বাটখারা বা ওজন পরিমাপক যন্ত্রে প্রকৃত ওজন অপেক্ষা অতিরিক্ত ওজন প্রদর্শন করা; (ঞ) পরিমাপে কারচুপি করা; (ট) দৈর্ঘ্য পরিমাপক কার্যে ব্যবহৃত পরিমাপক ফিতা বা অন্য কিছুতে কারচুপি করা; (ঠ) পণ্যের নব প্রস্তুত বা উৎপাদন করা; (ড) মেয়াদ উত্তীর্ণ কোনো পণ্য বা ঔষধ বিক্রি করা; (ঢ) সেবাগ্রহীতার জীবন বা নিরাপত্তা বিপন্নকারী কার্য করা এবং (ণ) অবহেলা, দায়িত্বহীনতা বা অসতর্কতা দিয়ে সেবাগ্রহীতার অর্থ, স্বাস্থ্য বা জীবনহানি ঘটানো;

নিরাপদ খাদ্য আইন, ২০১৩ এ খাদ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে ২৯ সদস্যবিশিষ্ট জাতীয় নিরাপদ খাদ্য, ব্যবস্থাপনা, উপদেষ্টা পরিষদ গঠনের কথা বলা হয়েছে। আইনটিতে বলা আছে উপদেষ্টা পরিষদ বছরে কমপক্ষে দুটি সভা অনুষ্ঠান করবে। নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ একজন চেয়ারম্যান ও চারজন সদস্য সমন্বয়ে গঠিত হবে। চেয়ারম্যান ও সদস্যরা সরকার কর্তৃক নিয়োগ লাভের তারিখ থেকে চার বছর পর্যন্ত স্বীয় পদে বহাল থাকবেন।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ এ বাণিজ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে ২৪ সদস্যবিশিষ্ট জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ গঠনের কথা বলা হয়েছে। আইনটিতে উল্লেখ আছে প্রতি দুই মাসে কমপক্ষে পরিষদের একটি সভা অনুষ্ঠিত হবে। তাছাড়া প্রতি জেলায় জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ কমিটি থাকবে। আইনটিতে উপজেলা কমিটি ও ইউনিয়ন কমিটি বিষয়ে উল্লেখ থাকলেও এর গঠন প্রক্রিয়া বিষয়ে কিছু বলা হয়নি। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে সরকার কর্তৃপক নিযুক্ত একজন মহাপরিচালক থাকবেন এবং তাকে সহায়তা করার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মকর্তা ও কর্মচারী থাকবে।

নিরাপদ খাদ্য আইন, ২০১৩ ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ এ যেসব কাজ করার বিষয়ে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে অথবা যেসব কাজকে অপরাধ গণ্য করা হয়েছে উভয়ের যেকোনো ধরনের ব্যত্যয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বা অধিদফতরকে ভেজাল পণ্য বাজেয়াপ্ত ও আটকের ক্ষমতা প্রদানসহ ভেজাল কার্যক্রমের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের আটক এবং মোবাইল কোর্ট অথবা উপযুক্ত আদালতে বিচার কার্য সম্পন্নের ক্ষমতা অর্পণ করেছে।

মানুষের জীবন ও স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য নিরাপদ খাদ্যপ্রাপ্তির অধিকার নিশ্চিতের লক্ষ্যে এবং ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ ও ভোক্তা অধিকার বিরোধী কার্য প্রতিরোধের লক্ষ্যে নিরাপদ খাদ্য আইন, ২০১৩ ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ প্রণয়ন করা হলেও উভয় আইন কার্যকর হওয়া পরবর্তী যে হারে ভেজাল পণ্যের উৎপাদন ও বিপণন চলছে তাতে আইন দুটির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য যে এখনো সফলতার পথে ইতিবাচক অবদান রাখতে সমর্থ হয়নি তা দেশের নাগরিক ও ভোক্তাদের কাছে স্পষ্ট।

লেখক : সাবেক জজ, সংবিধান, রাজনীতি ও অর্থনীতি বিশ্লেষক
E-mail: iktederahmed@yahoo.com


আরো সংবাদ



premium cement