২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

স্ম র ণ : মুফতি ফজলুল হক আমিনী

-

আলেমসমাজের সাহসী কণ্ঠস্বর বলে পরিচিত ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান, ঐতিহ্যবাহী জামিয়া কুরআানিয়া মাদরাসার প্রিন্সিপাল হজরত মাওলানা মুফতি ফজলুল হক আমিনী (রহ:) ২০১২ সালের ১১ ডিসেম্বর ৬৭ বছর বয়সে অনেকটা আকস্মিকভাবে চিরবিদায় নেন।
১৯৪৫ সালের ১৫ নভেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আমিনপুর গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে তার জন্ম। ১৯৬১ সালে তিনি জামিয়া কুরআনিয়া আরাবিয়া লালবাগ মাদরাসায় আসেন। এখানে আট বছর পড়াশোনা করে দাওরায়ে হাদিস সমাপ্ত করেন। এরপর হাদিসশাস্ত্র বিশেষ করে ফিকাহ তথা ইসলামি আইনে উচ্চতর শিক্ষা অর্জনের জন্য ১৯৬৯ সালে পাকিস্তানের আল্লামা ইউসুফ বিন্নুরি (রহ:)-এর কাছে গমন করেন এবং করাচি নিউ টাউন মাদরাসা থেকে হাদিস ও ইসলামী আইনের ওপর বিশেষ ডিগ্রি অর্জন করেন।
১৯৭০ সালে হাফেজ্জী হুজুর (রহ:) প্রতিষ্ঠিত মাদরাসা-ই নূরীয়া, কামরাঙ্গীরচর মাদরাসায় শিক্ষক হিসেবে যোগদানের মধ্য দিয়ে তার কর্মজীবন শুরু হয়। একই বছর তিনি হাফেজ্জী হুজুরের কন্যার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। ১৯৭৫ সালে তিনি লালবাগ মাদরাসায় শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। পরবর্তীকালে এই মাদরাসার সহকারী মুফতি, প্রধান মুফতি, ভাইস প্রিন্সিপাল ইত্যাদি দায়িত্ব পালন শেষে ১৯৮৭ সালে হাফেজ্জী হুজুরের ইন্তেকালের পর মাদরাসার প্রিন্সিপালের দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন এবং ইন্তেকালের আগে পর্যন্ত এই মহান দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তিনি মাত্র ৯ মাসে হাফেজে কুরআন হন। ১৯৮৪ সালে তিনি ইরান-ইরাক ভ্রাতৃঘাতী যুদ্ধ বন্ধে হাফেজ্জী হুজুরের নেতৃত্বে আন্তর্জাতিক শান্তি মিশনের সদস্য ছিলেন। তিনি ১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ ভাঙার প্রতিবাদে আয়োজিত লংমার্চের অন্যতম আয়োজক।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দেশবিরোধী এনজিওদের বিরুদ্ধে তিনি তীব্র আন্দোলন সংগঠিত করেন।
২০০১ সালের প্রথম দিকে হাইকোর্ট থেকে ফতোয়া নিষিদ্ধের রায় ঘোষিত হলে তিনি তীব্র গণ-আন্দোলন সৃষ্টিতে সক্ষম হয়েছিলেন। অষ্টম সংসদ নির্বাচনে তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসন থেকে বিজয়ী হন।
জীবনের শেষ দিনও ইসলামের জন্য কাজ করে গিয়েছেন। জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে তার নামাজে জানাজায় যে লোক সমাগম হয়েছিল অভিজ্ঞ মহল তাকে স্মরণকালের বৃহত্তম নামাজে জানাজা বলে মনে করেছেন। সরকারের অব্যাহত মানসিক নিপীড়নের ফলেই তার মৃত্যু হয়। হ
মো: আমান উল্লাহ


আরো সংবাদ



premium cement