২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আর গর্ব করার সুযোগ নাই : কাদের সিদ্দিকী

মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আর গর্ব করার সুযোগ নাই : কাদের সিদ্দিকী - নয়া দিগন্ত

দুষ্কৃতকারীদের হাতে নির্মমভাবে খুন হওয়া টাঙ্গাইলের বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা, প্রবীণ আইনজীবী ও কৃষক শ্রমিক জনতা লীগনেতা মিয়া মোহাম্মদ হাসান আলী রেজাকে রোববার রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়েছে। ঘাটাইলের বাইচাইল দাখিল মাদরাসা মাঠে দ্বিতীয় জানাজা নামাজ শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

এর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় টাঙ্গাইল জেলা সদর মসজিদ মাঠে তার প্রথম জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে জানাজা পূর্ব সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর আব্দুল কাদের সিদ্দিকী বীরোত্তম ও টাঙ্গাইল জেলা অ্যাডভোকেট বার সমিতির সভাপতি রফিকুল ইসলাম খান আলো। জানাজা নামাজ শেষে হাসান আলীর লাশ তার গ্রামের বাড়ি ঘাটাইলের বাইচাইলে নিয়ে যাওয়া হয়।

বক্তৃতায় আব্দুল কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘এক সময় মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গর্ব হতো। কিন্তু একজন মুক্তিযোদ্ধাকে যদি এভাবে মরতে হয় তাহলে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আর গর্ব করার সুযোগ নাই। একজন সিনিয়র আইনজীবী যদি এভাবে মারা যান, আর তার যদি কোন সুরাহা না হয়, তাহলে মনে করব দেশ নাই দেশ নাই দেশ নাই।’

আইনজীবীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘আমিও একজন আইনজীবীর সন্তান। আপনারা এভাবে মরবেন, এটা কোনভাবেই মেনে নিতে পারি না।’ দ্রুত এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি। অ্যাডভোকেট হাসান আলী রেজা কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের প্রতিষ্ঠাকালিন কেন্দ্রীয় কমিটির একজন অন্যতম সদস্য ছিলেন।

এদিকে, রোববার বেলা ১১টার দিকে বার সমিতির সামনে হাসান আলী রেজার হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবিতে প্রতিবাদ সভা করেন আইনজীবীরা। পরে বার ভবনের হল রুমে এক শোক সভার আয়োজন করা হয়। দুটি কর্মসূচিতেই সভাপত্বি করেন জেলা বার সমিতির সভাপতি রফিকুল ইসলাম খান আলো। আইনজীবীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মীর শামসুল আলম শাহজাদা, মো. আব্দুল গফুর মিয়া, মো. নূরুল ইসলাম, মো. আব্দুল বাকী মিয়া, খান মোহাম্মদ খালেদ, মো. ফাইজুর রহমান, আব্দুস সালাম চাকলাদার, আরফান আলী মোল্লা, আনন্দ মোহন আর্য্য এবং এস আকবর খান। সভা পরিচালনা করেন বার সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মঈদুল ইসলাম শিশির। বক্তারা বলেন, আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে হত্যাকারীদের গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। অন্যথায় কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

দুপুরে টাঙ্গাইল জেলা ও দায়রা জজের এজলাসে ফুলকোর্ট রেফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা ও দায়রা জজ মো. শওকত আলী চৌধুরী। একই সাথে এদিনের জন্য সকল আদালতের কার্যক্রম মূলতবী রাখা হয়।

এদিকে মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) রেজাউর রহমান বলেন, অল্প সময়ের মধ্যে আমরা এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হবো। আমরা খুব কাছাকাছি অবস্থানে আছি। তদন্তের স্বার্থে এখনই সবকিছু বলতে পারছি না।

হাসান আলী রেজা গত ৮ জুলাই সন্ধ্যার পর টাঙ্গাইল শহরের সাবালিয়া পাঞ্জাপাড়াস্থ নিজ বাসা থেকে চা খেতে বাইরে বের হয়ে নিখোঁজ হন। নিখোঁজ হওয়ার পাঁচদিন পর গত শনিবার দুপুরে লৌহজং নদী থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিখোঁজ হওয়ার পর টাঙ্গাইল সদর থানায় মিয়া মোহাম্মদ হাসান আলীর রেজার ছেলে টিটু বাদি হয়ে একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন।


আরো সংবাদ



premium cement