২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

এক বছরে বিদেশী অনুদান কমেছে ২৮ শতাংশ  

বিদেশী ঋণের সুদ ব্যয় বেড়েছে ৩৯.৩৪%
-

এক বছরের ব্যবধানে দেশে বিদেশী অনুদানের পরিমাণ কমেছে ২৮ ভাগ। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে যেখানে অনুদানের পরিমাণ ছিল টাকার অঙ্কে ১৫২০ কোটি টাকা। সেখানে গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এই অনুদান কমে হয়েছে এক হাজার ৯৪ কোটি টাকা। শতকরা হিসাবে অনুদান কমার পরিমাণ ২৮ ভাগ। অর্থ মন্ত্রণালয়ের সামষ্টিক অর্থনীতি বিভাগ থেকে সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থ বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, ফিসক্যাল-ম্যাক্রো পজিশন’ নিয়ে মাসিক প্রতিবেদনে ‘অ্যাকচুয়াল’ বা আক্ষরিক তথ্য সন্নিবেশ করা হয়ে থাকে। তথ্য প্রাপ্তি সাপেক্ষে এই রিপোর্ট প্রকাশ করতে ৬-৭ মাস দেরি হয়ে যায়। কিন্তু এই প্রতিবেদনে অর্থনীতির বিভিন্ন খাতের চূড়ান্ত উপাত্তই প্রকাশ করা হয়ে থাকে।
এ দিকে গত বছর বিদেশীদের কাছ থেকে অনুদান কমলেও বিদেশে ঋণের সুদ পরিশোধ প্রায় দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। যেমন-২০১৭-১৮ অর্থবছরে বিদেশী ঋণের সুদ পরিশোধে ব্যয় হয়েছিল যেখানে দুই হাজার ৪৭৩ কোটি টাকা। সেখানে গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বিদেশী সুদ ব্যয় ৩৯ দশমিক ২৪ ভাগ বেড়ে হয়েছে তিন হাজার ৪৪৬ কোটি টাকা। একই সময়ে অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ ব্যয় বেড়েছে ১৪ দশমিক ২৬ ভাগ। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে অভ্যন্তরীণ খাতে সুদ খাতে ব্যয় করা হয়েছিল ৩৯ হাজার ৩৩১ কোটি টাকা। সেখানে গত অর্থবছরে এই খাতে ব্যয় হয় ৪৪ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা।
জানা গেছে, সরকার বড় বড় কয়েকটি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য বাইরে থেকে বিপুল অঙ্কের ঋণ করেছে। এই ঋণের সুদ ব্যয়ও এ জন্য অনেক বেড়ে গেছে। আর অভ্যন্তরীণ খাতে সুদ ব্যয় বেড়ে যাওয়ার মূল কারণ হচ্ছে সঞ্চয়পত্রের জন্য সুদ বেশি দিতে হয়েছে।
তবে মজার ব্যাপার হচ্ছে, সব কিছু বাড়লেও এক বছরের ব্যবধানে সরকারের ভর্তুকি খাতে ব্যয় অর্ধেকেরও বেশি কমে গেছে। যেমন, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বিভিন্ন খাতে ভর্তুকি বাবদ সরকারের ব্যয় হয়েছে ৬৩ হাজার ১০১ কোটি টাকা। সেখানে গত অর্থবছরে এই ব্যয় ৫৯ ভাগ কমে হয়েছে ২৫ হাজার ৭২৭ কোটি টাকা। এ বিষয়ে অর্থ বিভাগের এক সূত্র জানায়, মূলত জ্বালানি খাতে বিপুল পরিমাণ ভর্তুকি দেয়ার কারণে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে এ খাতে ব্যয় এত বৃদ্ধি পেয়েছিল। বিশেষ করে সে সময় বেশি দামে জ্বালানি তেল কিনে দেশের বাজারে কম দামে তা বিক্রি করার কারণে এ খাতে ভর্তুকি ব্যয় অনেক বেড়ে গিয়েছিল। সে সময় জ্বালানি খাতে ভর্তুকি দেয়া লাগত প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। একই সাথে সে সময় বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকির পরিমাণ বেড়ে গিয়েছিল। কিন্তু পরবর্তী অর্থবছরে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কমে যাওয়ার কারণে গত বছর এ খাতে কোনো ভর্তুকি দিতে হয়নি সরকারকে। তবে চলতি অর্থবছরে ভর্তুকি খাতে ব্যয় বেড়ে যাওয়ার কারণে এ খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৪২ হাজার ১০০ কোটি টাকা। এ বছর শুধু ‘এলএনজি’ খাতে ভর্তুকি দিতে হবে ১০ হাজার কোটি টাকা।


আরো সংবাদ



premium cement