২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

পুঁজিবাজারে দর হারাচ্ছে ভালো কোম্পানিগুলো

-

পুঁজিবাজারে সূচক বাড়লেও ভালো কোম্পানিগুলোর দরপতন অব্যাহত থাকছে। সূচকের পতন ঘটলে যেখানে ভালো-মন্দ সবগুলো কোম্পানি দরপতনের শিকার হচ্ছে সেখানে সূচকের উন্নতির দিনেও দর হারাচ্ছে ভালো কোম্পানিগুলো। অপর দিকে অপেক্ষাকৃত দুর্বল কোম্পানিগুলোর যথারীতি দর বেড়ে চলেছে। গতকাল দেশের দুই পুঁজিবাজারেই সূচকের উন্নতি ঘটে; কিন্তু দিনশেষে উভয় বাজারেই মূল্যবৃদ্ধির তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে বেশির ভাগ মৌলভিত্তিহীন কোম্পানি।
বছরশেষে শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে লভ্যাংশ বিতরণের ওপর শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর ভালো-মন্দ অনেকাংশে নির্ভর করলেও পুঁজিবাজারের সাম্প্রতিক আচরণে এ প্রবণতা নেই। বিগত অর্থবছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের ভালো লভ্যাংশ দেয়া কোম্পানিগুলোই এখন ধুঁকছে। অথচ ১ থেকে ৫ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করা কোম্পানিগুলোর শুধু স্বল্প মূলধনী হওয়ার কারণে মন্দা বাজারেও প্রতিদিন দর বাড়ছে। আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে লভ্যাংশ ঘোষণা করতে ব্যর্থ কোম্পানিগুলো উঠে আসছে মূল্যবৃদ্ধির শীর্ষ তালিকায়। গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে মূল্যবৃদ্ধির শীর্ষ দশে ছিল এ ধরনের কমপক্ষে ছয়টি কোম্পানি।
গতকাল ডিএসইতে মূল্যবৃদ্ধির শীর্ষে ছিল ইয়াকিন পলিমার। কোম্পানিটি ৫ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড ঘোষণা করে। এ দিন কোম্পানিটির শেয়ারের দর বেড়েছে ১০ শতাংশ। এ ছাড়া ১০ শতাংশ মূল্যবৃদ্ধি পাওয়া বিডি ওয়েল্ডিং গত তিন প্রান্তিকেই লোকসানের শিকার। ৯ দশমিক ৯৬ শতাংশ মূল্যবৃদ্ধি পাওয়া আলহাজ টেক্সটাইলে দীর্ঘ দিন থেকে উৎপাদন বন্ধ। ৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ মূল্যবৃদ্ধি পাওয়া বিচ হ্যাচারি তিন প্রান্তিকে শেয়ার-প্রতি দশমিক ২৬ টাকা লোকসান দেখিয়েছে। এ ছাড়া জিল বাংলা সুগার মিলস শুধু চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) শেয়ার-প্রতি লোকসান দিয়েছে ১৯ দশমিক ৭০ টাকা। এটিও গতকাল মূল্যবৃদ্ধির শীর্ষ তালিকায় ছিল।
পক্ষান্তরে স্কয়ার ফার্মা ৪৯ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করেও শেয়ারদরে তার কোনো প্রতিফলন ঘটেনি। গতকালও কোম্পানিটির শেয়ারদর কমেছে। অনুরূপভাবে ভালো লভ্যাংশ ঘোষণা করা মোবিল যমুনা, খুলনা পাওয়ার, পদ্মা অয়েল, সামিট পাওয়ার ও একমি ফার্মার মতো কোম্পানি বিনিয়োগকারীদের সাড়া পায়নি। বরং লভ্যাংশ ঘোষণার পরবর্তে শিকার হয়েছে দরপতনের।
পুঁজিবাজারসংশ্লিষ্টরা মনে করেন, বাজারে যখন মন্দা চলে তখন ভালো লভ্যাংশও কোনো কাজ দেয় না। তখন বিনিয়োগকারীরা বাজারের ওপর আস্থা রাখতে পারেন না। ফলে নতুন বিনিয়োগের কে নে সুযোগ থাকে না। বরং যারা বাজারে থাকেন তারও নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েন। ফলে কোম্পানিগুলোর যথার্থ মূল্যায়ন হয় না। অপর দিকে, যারা বাজার খেলোয়াড় তারা সর্বক্ষণই তৎপর থাকে। মন্দার সুযোগ নিয়ে তারা মৌলভিত্তিহীন কোম্পানির শেয়ারের অযৌক্তিক মূল্য বাড়ায়।
এ দিকে গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২৫ দশমিক ৩৪ পয়েন্ট বৃদ্ধি পায়। ৪ হাজার ৬৭৮ দশমিক ৩৬ পয়েন্ট থেকে দিন শুরু করা সূচকটি দিনশেষে ৪ হাজার ৭০৩ দশমিক ৭১ পয়েন্টে পৌঁছে যায়। একই সময় ডিএসই-৩০ ও ডিএসই শরিয়াহ সূচকের উন্নতি ঘটে যথাক্রমে ১০ দশমিক ৫৩ ও ৬ দশমিক ৮৪ পয়েন্ট। দ্বিতীয় পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক ও সিএসসিএক্স সূচকের উন্নতি ঘটে যথাক্রমে ৫৫ দশমিক ১৭ ও ৩২ দশমিক ৮৬ পয়েন্ট। সিএসই-৫০ ও সিএসই শরিয়াহ সূচকে যোগ হয় যথাক্রমে ৪ দশমিক ৫৬ ও ৩ দশমিক ৬১ পয়েন্ট।

 


আরো সংবাদ



premium cement