২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

আটশ’ কোটি টাকায় ২২ জলাধার উন্নয়ন

২ একর আয়তনের জলাশয়ে ব্যয় ৩৬ কোটি টাকা ; বিদেশ প্রশিক্ষণ খরচ ৪২ লাখ টাকা
-

দেশের বরেন্দ্র অঞ্চলের ৭১৫টি পুকুর ও ১০টি দীঘি পুনঃখননের ব্যয় ধরা হয়েছে ১২৮ কোটি টাকা। সেখানে রাজশাহী শহরে ব্যক্তিমালিকানাধীন ২২টি জলাধার সংরক্ষণ ও উন্নয়নে ব্যয় হবে ৭৯৬ কোটি টাকা। ভূমি অধিগ্রহণসহ প্রতিটি জলাধার উন্নয়নে গড়ে ব্যয় হবে ৩৬ কোটি টাকা। আর এই জলাধার উন্নয়নের জন্য বিদেশে প্রশিক্ষণ নিতে যাবেন কর্মকর্তারা। তাদের জন্য ৪০ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অযাচিত খরচের কারণে উন্নয়ন প্রকল্পের ব্যয়গুলো এখন প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে। রাষ্ট্রের অর্থের অপচয় ক্রমেই বেড়ে চলেছে।
রাসিকের প্রস্তাবনার তথ্যানুযায়ী, মহানগরীর বৃহৎ প্রাকৃতিক জলাশয় সংরক্ষণের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণহীন ভরাট বন্ধ করা, অবকাঠামো উন্নয়নে মাধ্যমে জলাশয়ের পাড়ে বিনোদনের স্পট তৈরি করা, পরিশ্রাবণের মাধ্যমে ভূ-গর্ভস্থ পানির আধার পুনঃভরণ করা ও জলজ ও প্রাণিকুলের জীবন ধারণের উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি করা হবে। তিন বছর মেয়াদে নির্বাচিত ২২টি জলাধার উন্নয়ন করা হবে। এসব পুকুর ব্যক্তি মালিকানাধীন দুই একরের বেশি আয়তনের। ব্যক্তি মালিকরা পুকুরের প্রকৃত মূল্য থেকে তিন গুণ প্রদানের জন্য প্রস্তাব দিয়েছে। আর ওই পরিমাণ অর্থ দেয়া হলে তারা জমি অধিগ্রহণে কোনো সমস্যা হবে না বলে রাসিক কর্মকর্তা জানান। রাজশাহী মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট প্লান, ২০০৪-২০২৪ এ চিহ্নিত ১৬৫টি সংরক্ষিত পুকুর সংরক্ষণ করে জলাবদ্ধতা নিরসন ও ফায়ার হাইড্রেন্টের উৎস হিসেবে ব্যবহার।
অন্য দিকে এক হাজার ৩৩৪ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। সারা দেশে প্রায় মোট ২৬ শ’ খাস খাল, প্রাতিষ্ঠানিক পুকুর, দীঘি পুনঃখননের একটি বড় প্রকল্প চলমান আছে। গত ২০১৭ সালে এই প্রকল্পটি একনেক থেকে অনুমোদন দেয়া হয়। পুকুর, দীঘি ও খাল খননের মাধ্যমে স্থানীয় যুবসমাজকে বিভিন্ন আয়বর্ধক কাজে যুক্ত করে বেকারত্ব দূরীকরণ কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিই প্রকল্পে উদ্দেশ্য। এখানে গড়ে একটি পুকুর খননে ব্যয় হচ্ছে ৫২ লাখ টা কা।
রাজশাহীর একজন সাংবাদিকের সাথে আলাপকালে তিনি জানান, শহরের মধ্যে হলেও এই ব্যয় অনেক বেশি। যেখানে সম্প্রতি বরেন্দ্র এলাকার জন্য অনুমোদিত পুকুর ও দীঘি মিলে ৭২৫টির উন্নয়ন ও খননের জন্য ব্যয় অনুমোদিত হয়েছে ১২৮ কোটি টাকা, সেখানে মাত্র ২২টি পুকুরের সৌন্দর্যবর্ধন, সংরক্ষণ ও উন্নয়নে ৭৯৬ কোটি টাকা অনেক বেশি। এটাও রাজশাহী বিভাগের পাঁচ জেলায় চলমান।
রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো: জামাত খানের সাথে আলাপকালে তিনি জানান, উদ্যোগটি ভালো। দীর্ঘ দিন ধরে এই নগরীর মানুষের দাবি ছিল। রাষ্ট্রের এই অর্থের যেন যথাযথ ব্যবহার হয় মেয়রকে সে ব্যাপারে দৃষ্টি রাখতে হবে। কোনো ধরনের অপচয় হলে তা রাজশাহীবাসী প্রতিবাদ জানাবে।
রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো: শাওগাতুল আলমের সাথে প্রকল্পের ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, এই প্রকল্পটি এখন একনেকে অনুমোদনের জন্য যাবে। প্রকল্প ব্যয়ের পুরোটাই যাবে জলাধার উন্নয়নে। ভূমি অধিগ্রহণসহ জলাধারের সৌন্দর্য বর্ধন করা হবে।
বিদেশ সফরের বিষয়টি নিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রকল্প হলেই তার সাথে বিদেশ সফর রাখার একটা প্রবণতা শুরু হয়েছে। এ ধরনের প্রকল্পের জন্য দেশীয় জ্ঞান কাজে না লাগিয়ে প্রথমে বিদেশে যাওয়াটা কোনোভাবেই সমর্থন যোগ্য নয়।

 


আরো সংবাদ



premium cement