২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

অসম্পূর্ণ মলত্যাগ বা বাধাগ্রস্ত মলত্যাগ

অসম্পূর্ণ মলত্যাগ বা বাধাগ্রস্ত মলত্যাগ - ছবি : সংগৃহীত

আমরা সাধারণ খাবার যেমন- সবজি, ফল-মূল, মাছ, গোশত সব ধরনের খাবার খেলে একজন সুস্থ লোক সাধারণ দিনে এক-দুইবার থেকে সপ্তাহে দুই-তিনবার মলত্যাগ করে থাকেন। আমাদের দৈনন্দিন খাবার তালিকায় মাছ-গোশত ছাড়াও আঁশজাতীয় খাবার যথা- শবজি, ফল-মূল ও পানীয় থাকা অত্যাবশ্যক।
মলত্যাগের বেগ হলে আমরা সাধারণত টয়লেটে যাই এবং মলত্যাগ করি। পায়খানা করার পর আমাদের সবারই একটা স্বস্তিদায়ক অনুভূতি হয় (ংবহংব ড়ভ ংধঃরংভধপঃরড়হ ড়ভ পড়সঢ়ষবঃব বাধপঁধঃরড়হ)। কিন্তু যখন পায়খানা শক্ত হয়, বেশি কোঁত দিয়ে পায়খানা বের করতে হয় অথবা মলদ্বারে ব্যথা হয় তখন সবারই কষ্ট লাগে।

কিছু লোক আছেন যাদের পায়খানা ক্লিয়ার হয় না, অনেকক্ষণ ধরে বাথরুমে বসে থেকেও পায়খানা সম্পূর্ণ হয় না। ছেঁড়া ছেঁড়া পায়খানা (ঋৎধমসবহঃবফ ংঃড়ড়ষ) হয়, অর্থাৎ একটু পায়খানা হয় তারপর অনেকক্ষণ চেষ্টা করার পর আবার একটু হয়। এরপরও মনে হয় পায়খানা ভেতরে রয়ে গেছে। বাধ্য হয়ে অনেকেই মলদ্বারের পাশে চাপ দিয়ে, মলদ্বারের দুই পাশে টান দিয়ে পায়খানা করেন। এভাবেও পায়খানা ক্লিয়ার হয়নি বলে অনেকে পায়খানার রাস্তার ভেতর আঙুল দিয়ে পায়খানা বের করেন। অনেকের সন্তান হওয়ার রাস্তায় (ঠধমরহধ) আঙুল দিয়ে চাপ দিলে পায়খানা ক্লিয়ার হয়।

এ জাতীয় রোগীদের অনেকে জুলাপের ওষুধ অর্থাৎ মল নরম করার ওষুধ যেমন জবমঁষড়ংব, আড়ষধপ, ঢুষড়ংব, উঁৎধষধী ইত্যাদি খেয়ে অভ্যস্ত হয়ে গেছেন। বহু রোগী পায়খানা ক্লিয়ার না হওয়ায় অফিসে যেতে দেরি করেন। অনেকে দৈনিক পত্রিকা বা গল্পের বই বাথরুমে রেখে দেন। কারণ তাদের দীর্ঘসময় টয়লেটে বসে থাকতে হয়। অনেক রোগী টয়লেট করার কিছুক্ষণ পর অনুভব করেন, টয়লেট ক্লিয়ার হয়নি। তাই কিছুক্ষণ পরপর আবার বাথরুমে যান। এসব রোগীর মাঝে মধ্যে পায়খানার সাথে রক্ত যায় এবং পায়খানার রাস্তায় ব্যথা অথবা অস্বস্তি (উরংপড়সভড়ৎঃ) হয়। এ রোগে মহিলা ও পুরুষ উভয়েই ভোগেন। তবে মহিলা রোগীর সংখ্যা বেশি। বিশেষ করে যাদের সন্তান সংখ্যা বেশি, যে মহিলাদের কোনো সন্তান নেই তাদেরও এ রোগ হয়। এদের মূল উপসর্গ হলো তারা পায়খানার বেগ স্বাভাবিকভাবেই অনুভব করেন, কিন্তু পায়খানা ক্লিয়ারভাবে করতে পারেন না।

এ রোগ হলে ঈড়ষড়হড়ংপড়ঢ়ু পরীক্ষা এবং গধমহবঃরপ ৎবংড়ঁৎপব ফবভবপড়মৎধস করতে হয়।
এ রোগের প্রধান কারণ পায়ুপথের (জবপঃঁস) গঠনগত অস্বাভাবিকত্ব বা ঝঃৎঁপঃঁৎধষ ধনহড়ৎসধষরঃু. এ ক্ষেত্রে পায়ুপথের ওয়াল ঝুলে পায়খানা চলাচলের পথে বাধা সৃষ্টি করে, মহিলাদের ক্ষেত্রে পায়খানার রাস্তার (জবপঃঁস) সাথেই সন্তান হওয়ার রাস্তা াধমরহধ থাকে। এ ক্ষেত্রে পায়খানার রাস্তার একটি অংশের (াধমরহধ) ভেতর ঢুকে যায়। তখন যৌনপথের ভেতর আঙুল দিয়ে চাপ দিলে মলত্যাগ সহজ হয়।

চিকিৎসার জন্য রোগীদের মল নরম করার ওষুধ খাওয়ার উপদেশ দেয়া হয়। এতে যদি কাজ না হয়, তাহলে অপারেশন করা প্রয়োজন হয়। এ অপারেশনের নাম ঝঞঅজজ (ঝঃধঢ়ষবফ ঞৎধহং ধহধষ ৎবপঃধষ ৎবংবপঃরড়হ)। অপারেশনটি কয়েক বছর আগে ইটালিয়ান সার্জন প্রফেসর এন্টনিও লংগ আবিষ্কার করেন। যিনি পাইলসের জন্য (খড়হমড়) অপারেশন আবিষ্কার করে বিশ্বব্যাপী পরিচিতি পেয়েছেন।

ঝঞঅজজ অপারেশনে পেট কাটার প্রয়োজন হয় না। অপারেশনটি মলদ্বারের ভেতর দিয়ে করতে হয়। এ জন্য দু’টি (ঝঃধঢ়ষরহম রহংঃৎঁসবহঃ) ব্যবহার করতে হয় এ অপারেশনে পায়ুপথের ভেতরে যেখানে মল আটকে থাকে সেই মাংসটুকু কেটে ফেলতে হয়।

এ অপারেশন কার জন্য প্রযোজ্য এটি খুব সতর্কতার সাথে বিবেচনা করতে হবে। অপারেশন প্রক্রিয়াটি জটিল। অভিজ্ঞদের (ঈড়ষড়ৎবপঃধষ ঝঁৎমবড়হ) করা উচিত। তলপেটে সংক্রমণ (ওহভবপঃরড়হ), প্রচুর রক্তক্ষরণ জাতীয় জটিলতা হতে পারে।

লেখক : বৃহদন্ত্র ও পায়ুপথ বিশেষজ্ঞ, প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, (অব:) কলোরেকটাল সার্জারি বিভাগ, বিএসএমএমইউ, ঢাকা।

চেম্বার : ইডেন মাল্টি-কেয়ার হসপিটাল, ৭৫৩, সাতমসজিদ রোড, (স্টার কাবাব সংলগ্ন) ধানমন্ডি, ঢাকা। ফোন : ০১৭৫৫৬৯৭১৭৩-৬,

 


আরো সংবাদ



premium cement