১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

শীতে শ্বাসতন্ত্রের রোগে প্রতি ৪ দিনে মারা গেছে ১ জন : বেশির ভাগই শিশু

-

শ্বাসতন্ত্রের রোগে দেশে গত ৬৬ দিনে মারা গেছে ১৭ জন। অর্থাৎ প্রতি চার দিনে মারা গেছে একজন। এদের বেশির ভাগই শিশু। গত বছরের ১ নভেম্বর থেকে গত ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত স্বাস্থ্য অধিদফতরের হিসাবে শ্বাসতন্ত্রের রোগে আক্রান্ত হয়েছে ৫২ হাজার ১৬৭ জন এবং এ সময়ের মধ্যে মোট মারা গেছে ১৭ জন। এ হিসাবটা রাজধানী ছাড়া দেশের ৬৪ জেলার ২৯৬টি উপজেলা হাসপাতাল থেকে প্রাপ্ত। এই শীতে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত রোগটির নাম নিউমোনিয়া বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশনস সেন্টার অ্যান্ড কনট্রোল রুমের সহকারী পরিচালক ডা: আয়শা আক্তার। এর বাইরে রয়েছে হাঁপানি (অ্যাজমা), ক্রনিক অবস্ট্রাক্টিভ পালমোনারি ডিজিজ (সিওপিডি), ঠাণ্ডা, সর্দি ও কাশি। শ্বাসতন্ত্রজনিত এসব রোগে দৈনিক আক্রান্ত হচ্ছে ৬০০ থেকে সাড়ে সাত শ’ জন। এই ৬৬ দিনে এ রোগগুলোতে দৈনিক গড়ে আক্রান্ত হয়েছে ৭৯০ জন।
ডা: আয়শা আক্তার আরো জানান, গত বছরের ১ নভেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত শীতজনিত কারণে শুধুমাত্র ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে এক লাখ ২৯ হাজার ১৮৩ জন। ডায়রিয়ায় দৈনিক গড়ে আক্রান্ত হয়েছে এক হাজার ৯৫৭ জন।
আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, এবারের শীতটা ব্যতিক্রমধর্মী। অন্যান্য বছরের চেয়ে এবারের শীতের বেশ পার্থক্য রয়েছে। অন্যান্য বছর শীতের একটি ধারাবাহিকতা ছিল। কিন্তু এবার ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত ঠাণ্ডা বেশ সহনীয় পর্যায়েই ছিল। কিন্তু ১৮ ডিসেম্বর থেকে হঠাৎ করেই ঠাণ্ডা হাওয়া বইতে শুরু করে। ভারী কাপড়-চোপড় পরে বাইরে বেরুতে হয়। হঠাৎ বেশি মাত্রার শীতের জন্য মানুষের প্রস্তুতি তেমন ছিল না। এর আগের বছরগুলোতে তেমন ঠাণ্ডা পড়েনি। মানুষ ধরে নিয়েছিল এবারো তেমন শীত পড়বে না। মানসিকভাবে প্রস্তুতি ছিল না বলে রোগ প্রতিরোধেও এর একটি প্রভাব পড়েছে।
এই ৬৬ দিনে জন্ডিস, আমাশয়, জ্বর, চর্মরোগ ও চোখের প্রদাহে আক্রান্ত হয়েছে এক লাখ ৪৫ হাজার ৬৬০ জন এবং এ রোগগুলোতে সারা দেশে মারা গেছে ৩০ জন অর্থাৎ প্রতি দুই দিনে প্রায় দুইজন।
শ্বাসতন্ত্রের রোগে যে ১৭ জন মারা গেছে, এর মধ্যে বেশি মারা গেছে চট্টগ্রাম বিভাগে। আবার চট্টগ্রাম বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১০ জন মারা গেছে খাগড়াছড়ি জেলায়। অবশিষ্ট একটি মৃত্যু হয়েছে বান্দরবান বেলায়। এ ব্যাপারে খাগড়াছড়ি জেলার সিভিল সার্জন ডা: মো: ইদ্রিস মিয়া গত রাতে নয়া দিগন্তকে জানিয়েছেন, খাগড়াছড়িতে মানুষের মধ্যে সচেতনতা একেবারেই কম। তারা রোগ হলে হাসপাতালে আসার আগে ঝাড়-ফুঁক ও তাবিজ-কবজ ব্যবহার করে। আবার হাসপাতালে আসে অনেক দেরি করে। তখন করার কিছু থাকে না। আবার অনেক রোগীর উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রামে যাওয়ার প্রয়োজন হয়। কিন্তু খাগড়াছড়ি থেকে চট্টগ্রাম যেতে ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা সময় লেগে যায়। ততক্ষণে রোগী বাঁচানো সম্ভব হয় না। আমরা এখানে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির কাজ করছি। ডা: ইদ্রিস মিয়া আরো জানান, শিশুদের গলায় অনেক বাবা-মা তাবিজ ঝুলিয়ে থাকে। এ তাবিজ থেকে অনেক ময়লা শিশুদের মুখে চলে যায়। এখান থেকেই জীবাণু প্রবেশ করে থাকে। তিনি রোগ প্রসঙ্গে বলেন, এখানকার মানুষ রোগব্যাধি সম্পর্কে একেবারেই সচেতন নয়। পাহাড়ি এলাকার মানুষ বেশি পরিশ্রমী হিসেবেই অনেকে জানেন। কিন্তু এখানকার মানুষের মধ্যে ডায়াবেটিস বেশি। কারণ এখানকার মানুষের লিভার চর্বিযুক্ত। তারা অ্যালকোহল ও ধূমপান করে বলে এদের লিভারে চর্বি বেশি। তিনি জানান, এসব থেকে দূরে থাকার জন্য সচেতনতা সৃষ্টি করা হচ্ছে।
অন্যান্য বিভাগের মধ্যে ঢাকা বিভাগের মাদারীপুর জেলায় দু’জন মারা গেছে। রাজশাহী বিভাগে একজন (পাবনা জেলায়), রংপুর বিভাগের নীলফামারী জেলায় শ্বাসতন্ত্রের রোগে মারা গেছে দু’জন, খুলনা বিভাগে শ্বাসতন্ত্রের রোগে কেউ মারা যায়নি। বরিশাল বিভাগের ভোলায় একজন মারা গেছে এবং সিলেট বিভাগে কেউ মারা যায়নি এ রোগে। ডা: আয়শা আক্তার জানিয়েছেন, শ্বাসতন্ত্রের রোগে বেশির ভাগই শিশুরা মারা যাচ্ছে।


আরো সংবাদ



premium cement
চাটমোহরে ঐতিহ্যবাহী ঘোড়া দৌড় প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত বিএনপি সাম্প্রদায়িক শক্তি, এদের রুখতে হবে : ওবায়দুল কাদের সাদিক এগ্রোর ব্রাহামা জাতের গরু দেখলেন প্রধানমন্ত্রী ভারতে লোকসভা নির্বাচনে প্রথম ধাপে ভোট পড়েছে ৬০ শতাংশ সারা বিশ্ব আজ জুলুমবাজদের নির্যাতনের শিকার : ডা. শফিকুর রহমান মিয়ানমারের ২৮৫ জন সেনা ফেরত যাবে, ফিরবে ১৫০ জন বাংলাদেশী : পররাষ্ট্রমন্ত্রী চন্দনাইশ, বাঁশখালী ও বোয়ালখালীতে ৩ জনের মৃত্যু গাজায় ইসরাইলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়াল শ্যালকের অপকর্মে দুঃখ প্রকাশ করলেন প্রতিমন্ত্রী পলক রাজশাহীতে ট্রাকচাপায় ৩ মোটরসাইকেল আরোহী নিহত পাবনায় দুই গ্রুপের সংঘর্ষে হতাহত ২২

সকল