২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির মূলে পেঁয়াজ

জিডিপি প্রবৃদ্ধি গত অর্থবছরে ৮.১৫ শতাংশ ;মাথাপিছু আয় ৩৮০ টাকা বেড়েছে
-

বাজারে অস্থিরতা বেড়েই চলেছে। প্রতিটি ভোগ্যপণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী। প্রতিটি পণ্যমূল্য অক্টোবরের তুলনায় নভেম্বরে বেড়েছে। গত দুই মাস ধরে মূল্যস্ফীতির হার বেড়েই চলছে। এই হার সার্বিকভাবে নভেম্বরে এক লাফে ৬ দশমিক ০৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। যা গত অক্টোবরে ছিল ৫ দশমিক ৪৭ ভাগ। অর্থাৎ এক মাসের ব্যবধানে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে শূন্য দশমিক ৫৮ ভাগ। তবে শহরে তিনটি সূচকেই মূল্যস্ফীতির হার অনেক বেশি। এই বৃদ্ধির জন্য পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, প্রধান নায়ক হলো পেঁয়াজ। আশা করছি ডিসেম্বরেই এই হার কমে যাবে। তিনি জানান, গত অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি চূড়ান্তভাবে ৮.১৫ শতাংশ। তবে কৃষিতে প্রবৃদ্ধি কমেছে। আর ডলারের হিসাবে মাথাপিছু আয় এক হাজার ৯০৯ হলেও স্থানীয় মুদ্রায় ৩৮০ টাকা বেড়েছে। শেরেবাংলা নগরস্থ এনইসি সম্মেলন গতকাল একনেক সভা শেষে মন্ত্রী এক ব্রিফিংয়ে পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য প্রকাশ করেন। পাঁচ-সাত বছর ধরে দেখে আসছি, যে মাসে খাদ্যে মূল্যস্ফীতি বাড়ে, ওই মাসে অটো খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি কমে। আবার যে মাসে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি বাড়ে, ওই মাসে খাদ্যে কমে। এটা ঘরে বসে সরেজমিন হয়ে গেছে কি না? সরকারের যে লক্ষ্য, সেটা যেন স্থির থাকে, সে অনুযায়ী বিবিএস কাজ করছে কি না? সাংবাদিকদের এসব প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, এটা আপনার ধারণা। এটাকে আমি সম্মান করি, তবে একমত নাও হতে পারি। তা ছাড়া আমরা সেক্টর অনুযায়ী মূল্যস্ফীতি দিচ্ছি না, এটা বাড়ছে, স্বীকার করি। ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) সাথে বিবিএসের দেয়া পণ্যমূল্য ও মূল্যস্ফীতির মিল নেই বলেও সাংবাদিকরা জানান। জবাবে মন্ত্রী বলেন, বিষয়টি নিয়ে তিনি টিসিবির সাথে বসবেন। বিবিএসের তথ্য অনুযায়ী, জাতীয় পর্যায়ে নভেম্বরে খাদ্য ও খাদ্যবহির্ভূত উপখাতে মূল্যস্ফীতি হয়েছে যথাক্রমে শতকরা ৬ দশমিক ৪১ শতাংশ ও ৫ দশমিক ৩৭ শতাংশ। যা গত অক্টোবরে ছিল যথাক্রমে শতকরা ৫ দশমিক ৪৯ শতাংশ ও ৫ দশমিক ৪৫ শতাংশ। গ্রামে পর্যায়ে নভেম্বরে মূল্যস্ফীতির হার ৬ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ, যা অক্টোবরে ছিল শতকরা ৫ দশমিক ৩৬ শতাংশ। আর খাদ্য উপখাতে মূল্যস্ফীতির হার ৬ দশমিক ৫৪ শতাংশ, যা অক্টোবরে ছিল ৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ। অন্য দিকে, খাদ্যবহির্ভূত উপখাতে মূল্যস্ফীতির হার ৪ দশমিক ৯৯ শতাংশ, যা অক্টোবরে ছিল ৪ দশমিক ৯৬ শতাংশ। শহর পর্যায়ে মূল্যস্ফীতি হার ৬ দশমিক ১২ শতাংশ, যা অক্টোবরে ছিল ৫ দশমিক ৬৭ শতাংশ। নভেম্বরে খাদ্য উপখাতে মূল্যস্ফীতির হার ৬ দশমিক ১১ শতাংশ, যা অক্টোবরে ছিল ৫ দশমিক ৩১ শতাংশ। অন্য দিকে খাদ্যবহির্ভূত উপখাতে মূল্যস্ফীতির হার ৬ দশমিক ১৩ শতাংশ, যা অক্টোবরে ছিল ৬ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ। জিডিপি ও মাথাপিছু আয় : দেশের মানুষের বার্ষিক মাথাপিছু আয় এখন (২০১৮-২০১৯ অর্থবছর) এক হাজার ৯০৯ ডলার। যা টাকায় এক লাখ ৬০ হাজার ৪৪০ টাকা। এই অর্থবছরের ৮ মাসে মাথাপিছু আয়ের প্রাক্কলন করা হয়েছিল এক হাজার ৯০৯ ডলার বা এক লাখ ৬০ হাজার টাকা। ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমায় মাথাপিছু আয় ৩৮০ টাকা বেড়েছে। মাথাপিছু আয় ডলারে সমপরিমাণ হলেও টাকার অঙ্কে বেড়েছে। আর মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি বেড়ে হয়েছে ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ। গত অর্থবছর প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৭ দশমিক ৮৬ শতাংশ। পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, খুশির সংবাদ হলো মাথাপিছু আয় ও প্রবৃদ্ধি দুটোই বেড়েছে। নানা প্রতিকূলতা থাকা সত্ত্বেও জিডিপি প্রবৃদ্ধি বেড়েছে ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ। মাথাপিছু আয় ও প্রবৃদ্ধি বাড়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। বিবিএসের তথ্যানুযায়ী, গত অর্থবছর কৃষিতে প্রবৃদ্ধি ছিল ৪ দশমিক ১৯ শতাংশ, বর্তমানে তা হয়েছে ৩ দশমিক ৫১ শতাংশ। তবে শিল্প খাতে প্রবৃদ্ধি বেড়ে হয়েছে ১৩ দশমিক ০২ শতাংশ, গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ১২ দশমিক ৬০ শতাংশ। সেবা খাতে প্রবৃদ্ধি বেড়ে হয়েছে ৬ দশমিক ৫০ শতাংশ। গত অর্থবছর একই সময়ে ছিল ৬ দশমিক ৩৯ শতাংশ।


আরো সংবাদ



premium cement