২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

দুর্গত এলাকায় তীব্র খাদ্য সঙ্কট

বাঁধ ভেঙে প্লাবিত নতুন নতুন এলাকা ; বাড়ছে পানিবাহিত রোগ
কুড়িগ্রামের চিলমারীতে পানিবন্দী মানুষের দুর্ভোগ : নয়া দিগন্ত -

দেশের চলমান বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটেছে। বৃষ্টি ও উজানের পানিতে প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। বেশ কয়েকদিন ধরে এ পরিস্থিতি বিদ্যমান থাকায় পানিবন্দী লোকজন তীব্র খাবার-পানি ও ওষুধ সঙ্কটে ভুগছে। সরকারি-বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ত্রাণের কিছু ব্যবস্থা করা হলেও প্রয়োজনের তুলনায় তা একেবারেই অপ্রতুল বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
এদিকে যমুনা, ব্রহ্মপুত্র, ধরলাসহ বিভিন্ন নদীর পানি আগে থেকেই বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। গতকাল এ নদীগুলোতে পানি আরো বেড়েছে। এতে শত শত গ্রাম পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। বগুড়ায় চরাঞ্চলে শতাধিক বাড়িঘর নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। দুই তিনটি বাঁধ ভেঙে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আরো বেশ কয়েকটি বাঁধ ভাঙনের ঝুঁকিতে আছে। ফলে আতঙ্কে দিন কাটছে বাঁধের কাছাকাছি থাকা পরিবারগুলোর। বন্যার কারণে গতকাল কুড়িগ্রাম, নেত্রকোনা ও জামালপুরে আরো আটজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। সর্বশেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী কুড়িগ্রাম, জামালপুর, বগুড়ার পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ বলে জানা গেছে।
বগুড়া অফিস জানায়, পানি বৃদ্ধির ফলে বগুড়ায় বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটেছে। যমুনা নদীর পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে সাড়ে পাঁচ শ’রও বেশি গ্রাম। তলিয়ে গেছে সাড়ে আট হাজার হেক্টরের বেশি জমির ফসল। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, আরো অন্তত তিন দিন পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে। এ ছাড়া বন্যাকবলিত এলাকায় পানিবাহিত নানা রোগ ছড়িয়ে পড়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার যমুনা নদীর মথুরাপাড়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৯৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়। এর ফলে বগুড়ার সারিয়াকান্দি, সোনাতলা ও ধুনট উপজেলার মোট ২৯ ইউনিয়নের মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। এ ছাড়া পাট, আউশ ধান, মরিচ, আমন বীজতলা ও বিভিন্ন ধরনের সবজির আট হাজার ৬০৩ হেক্টর জমির ফসল পানিতে নিমজ্জিত হয়ে আছে। এ ছাড়া এবারের বন্যায় সারিয়াকান্দি উপজেলায় বিভিন্ন মৎস্য খামারের প্রায় দুই কোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে।
সোনাতলা (বগুড়া) সংবাদদাতা জানান, অবিরাম বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে যমুনা নদীসহ সব নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। সেই সাথে বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার তেকানীচুকাইনগর ইউনিয়নের চারটি চরে নদীভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। গত দুই দিনে উপজেলার তেকানীচুকাইনগর ইউনিয়নের খাবুলিয়া, জন্তিয়ারপাড়া, মহব্বতেরপাড়া ও ভিকনেরপাড়া চরের প্রায় ১০০ ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এ ছাড়াও আরো দেড় শতাধিক ঘরবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়েছে। অপর দিকে উপজেলার পাকুল্লা ইউনিয়নের মির্জাপুর, রাধাকান্তুপুর, বালুয়াপাড়া, পূর্ব সুজাইতপুর ও খাটিয়ামারী এলাকার প্রায় ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
বগুড়ার সিভিল সার্জন গওসুল আজিম চৌধুরী জানান, বন্যাকবলিত তিন উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে ২৯টি মেডিক্যাল টিম স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছে। তারা খাবার স্যালাইন, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণ করছেন।
বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রায়হানা ইসলাম জানান, পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলেও বড় দুর্যোগের শঙ্কা নেই। এই তিন উপজেলাকে রক্ষায় নির্মাণ করা ৪৫ কিলোমিটার নদীতীর রক্ষাবাঁধ সুরক্ষায় সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। বানভাসিদের জন্য দুই হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার এবং ১৪২ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সংবাদদাতা জানান, ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও অব্যাহত ভারী বর্ষণের কারণে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার সীমান্তবর্তী কয়েকটি এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলে পানিবন্দী হয়ে পড়ছেন উপজেলার চারটি ইউনিয়নের অন্তত ৩০ গ্রামের মানুষ। পাহাড়ি ঢলে তলিয়ে গেছে কৃষকদের সবজি ক্ষেত, ফসলি জমি, পুকুরসহ এলাকার রাস্তাঘাট ও বাড়িঘর। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক শাহীদুল ইসলাম ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাহমিনা আক্তার রেইনা জানান, গত রোববার ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে হাওড়া নদীর বাঁধ ভেঙে উপজেলার কয়েকটি এলাকা প্লাাবিত হয়েছে। ভেঙে যাওয়া বাঁধ মেরামতের জন্য কাজ চলছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক শাহীদুল ইসলাম জানান, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছি। পানিবন্দী লোকজনের জন্য ১০ টন চাল ও শুকনা খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
কুড়িগ্রাম সংবাদদাতা জানান, ব্রহ্মপুত্র ও ধরলা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলায় জলমগ্ন মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। রৌমারীতে বাঁধ ভেঙে নতুন করে ১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে রৌমারীর কর্ত্তিমারীতে বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে পানিতে পড়ে সাইফুল ইসলাম (২৫) নামে এক যুবক নিখোঁজ হয়ে যায়। এ নিয়ে দু’দিনে জেলায় এক প্রতিবন্ধীসহ পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। বন্যার ফলে পানিবন্দী মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছে। খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি ও আশ্রয়ের সঙ্কটে ভুগছেন তারা। চরাঞ্চলে গো-খাদ্যের তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে। সারা দিন পানিতে চলাফেরা করায় বানভাসিরা পানিবাহিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। মঙ্গলবার পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে বেড়ে গিয়ে ১২৪ সে.মি, নুনখাওয়া পয়েন্টে ৯৪ সে.মি এবং ধরলা নদীর পানি ব্রিজ পয়েন্টে ১১৭ সে.মির উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
কুড়িগ্রামের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মো: হাফিজুর রহমান জানান, বন্যার্তদের সহায়তায় নতুন করে তিন মে. টন চাল ও দুই লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এ ছাড়া বন্যার্তদের ৫০০ তাঁবু দেয়া হয়েছে।
চিলমারী (কুড়িগ্রাম) সংবাদদাতা জানান, থেকে থেকে বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে চিলমারীর ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় আরো নতুন করে ৩৫ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত পানিবন্দী হয়ে পড়েছে প্রায় ৬৫ হাজার মানুষ। সেই সাথে ব্রহ্মপুত্রের তোড়ের মুখে চিলমারী রক্ষাবাঁধটিও হুমকির মুখে পড়েছে। তা রক্ষায় এলাকার মানুষের সহায়তায় চেষ্টাও চালিয়ে যাচ্ছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। বাঁধটি ভেঙে গেলে দুই শতাধিক পরিবার ভেসে যাওয়াসহ ৪০ হাজার মানুষ নতুন করে পানিবন্দী হওয়ায় আশঙ্কায় রয়েছে। এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, অবস্থা পরিদর্শনে সরেজমিন গিয়েছিলাম। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এ দিকে পাউবো সূত্রে জানা গেছে, চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্র নদে পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ১২৩ সে.মি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে (এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত)। এ দিকে বন্যার্ত মানুষের মধ্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে চিলমারী ও রমনা ইউনিয়নের আট শতাধিক পরিবারের মধ্যে ১৫ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়েছে।
লালমনিরহাট সংবাদদাতা জানান, লালমনিরহাটের পাঁচ উপজেলার দুর্গত এলাকাগুলো থেকে বন্যার পানি নামতে শুরু করায় সার্বিক বন্যাপরিস্থিতির সামান্য উন্নতি হয়েছে। তবে তাতে বানভাসি মানুষজনের দুর্ভোগ কমেনি।
গতকাল মঙ্গলবার বন্যাদুর্গত এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বেশির ভাগ বাড়িতে হাঁটু পানি জমে আছে। দেড় থেকে দুই ফুট পানির নিচে তলিয়ে আছে বিভিন্ন ফসলিক্ষেত। তলিয়ে আছে রাস্তাঘাটও। তিস্তার বাম তীর রক্ষা বাঁধসহ বিভিন্ন স্থানে আশ্রয় নেয়া মানুষের মধ্যে খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে। এখন পর্যন্ত সরকারি কিংবা বেসরকারিভাবে বন্যাদুর্গত এলাকার মানুষের মধ্যে যে ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে তা খুবই সামান্য বলে জানিয়েছেন বন্যাকবলিত মানুষ। ফলে তারা চরম দুঃখ-কষ্টের মধ্যে দিয়ে অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছেন।
লালমোহন (ভোলা) সংবাদদাতা জানান, লালমোহন উপজেলার ধলীগৌরনগর ইউনিয়নের কামারের খাল এলাকার সøুইস গেটটি দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকায় এক সপ্তাহের মুষলধারে হওয়া বৃষ্টিতে এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। এতে এলাকার পথঘাট, বীজতলা, পুকুরসহ সব কিছু পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এলাকার ভুক্তভোগী সালাউদ্দিন, মোতালেব, আবু বকর ও আব্দুর রহমানসহ কয়েকজন জানান, এ এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য প্রায় ২০ বছর আগে সøুইস গেটটি স্থাপন করা হয়। বিগত ১৮ বছর ধরে এ সøুইস গেটটি দিয়ে নিয়মিত পানি নিষ্কাশন হতো। তবে দুই বছর ধরে সøুইস গেটটি অকেজো অবস্থায় রয়েছে। যার ফলে এলাকার পানি নিষ্কাশন হতে না পারায় পানিবন্দী হয়ে আছেন হাজার হাজার মানুষ।
এ ব্যাপারে উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, সøুইসটি গেট অকেজো হয়ে পড়ায় কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তা বন্ধ করে দেয়া হয়। এটির নতুন ডিজাইন ঢাকাতে পাঠানো হয়েছে। আশা করছি ডিজাইনটি পাস হলেই দ্রুত নতুন একটি সøুইস গেট নির্মাণ করা হবে। এরপর আর এ ধরনের জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হবে না।
জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) সংবাদদাতা জানান, জগন্নাথপুরে বন্যার পানি বৃদ্ধি পেয়ে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। সোমবার থেকে বৃষ্টিপাত না হলেও বন্যা পরিস্থিতির অবনতি দেখা দিয়েছে। যার ফলে বন্যায় কবলিত শত শত পরিবার চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। এ দিকে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বন্যাকবলিত এলাকায় ত্রাণসামগ্রী বিতরণ অব্যাহত রাখা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার উপজেলার আশারকান্দি ইউনিয়নের শেওড়া, পাঠকুড়া, কালাম্ভরপুর, শুক্লাম্ভরপুর গ্রামসহ ৮-১০টি গ্রামের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ভারপ্রাপ্ত ইয়াসির আরাফাত। ইতোমধ্যে উপজেলার চিলাউড়া হলদিপুর, পাইলগাঁও, রানীগঞ্জ ও আশারকান্দি ইউনিয়নে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে সরকারিভাবে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।
ইসলামপুর (জামালপুর) সংবাদদাতা জানান, জামালপুরে ইসলামপুরে বন্যা পরিস্থিতির সব রেকর্ড অতিক্রম করে যমুনার পানি বিপৎসীমার ১৪৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গতকাল মঙ্গলবার পানিতে ডুবে ইসলামপুরের গোয়ালেরচর ইউনিয়নের মালমারা গ্রামের ফারুকের ছেলে আব্দুল্লাহ (৫) মারা গেছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। পানিবন্দীর সংখ্যা লক্ষাধিক ছাড়িয়ে গেছে। বানভাসিরা ঘরবাড়ি ছেড়ে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটে চলেছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিয়মিত রান্না করা খাবার, শুকনো খাবার ও ত্রাণসামগ্রী বিতরণ বৃদ্ধি করা হয়েছে।
সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) সংবাদদাতা জানান, সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি আরো অবনতি হয়েছে। পানির স্রোতে ভেঙে গেছে উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের মাদারী পাড়ায় তিস্তার বামতীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। এ ছাড়া হুমকির মুখে রয়েছে সুন্দরগঞ্জ-কামারজানি বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। বন্যা শিবিরগুলোতে দেখা দিয়েছে খাদ্য সঙ্কট। গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে বন্যার পানি আরো বেড়ে গিয়ে বন্যাপরিস্থিতি অবনতি হয়েছে। বিভিন্ন চরাঞ্চল ঘুরে দেখা গেছে, ঘরবাড়ি ছেড়ে গৃহপালিত পশুপাখি নিয়ে চরবাসী ছুটছে আশ্রয়কেন্দ্র, উঁচু স্থান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও স্বজনদের বাড়িতে। উপজেলার তারাপুর, বেলকা, হরিপুর, চণ্ডিপুর, শ্রীপুর ও কপাসিয়া ইউনিয়নের সব ওয়ার্ড এখন পানির নিচে। বন্ধ হয়ে গেছে চরাঞ্চলের ২১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাঠদান কার্যক্রম। ডুবে গেছে তরিতরকারিসহ সব ফসলের ক্ষেত। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে ছয়টি ইউনিয়নের কমপক্ষে ৩০ হাজার পরিবার। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত পারিবারের মাঝে এ পর্যন্ত ১০০ মেট্রিক টন চাল ও ১ হাজার কাটুন শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে চরাঞ্চলের যোগাযোগব্যবস্থা। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: সোলেমান আলী জানান, পানিবন্দী পরিবারদের মাঝে শুকনো খাবার, ত্রাণসামগ্রী ও গোখাদ্য বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। ইতোমধ্যে ১০০ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হয়েছে।
নাগেশ্বরী (কুড়িগ্রাম) সংবাদদাতা জানান, বন্যার পানিতে ডুবে মাদাইখেল এলাকায় মামুন নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি আর উজানের পাহাড়ি ঢলে বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকে তলিয়ে গেছে নাগেশ্বরীতে হাজার হাজার বাড়িঘর। উপজেলার গঙ্গাধর, শংকোষ, দুধকুমর, ব্রহ্মপুত্রসহ সব নদ-নদীর পানি প্লাবিত করছে আরো নতুন নতুন এলাকা। উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের তেলিয়ানীরপাড় পাকারমাথা এলাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকে পুকুরগুলো ডুবে গিয়ে মাছ বের হয়ে গেছে। ডুবে গেছে বসতভিটা এবং ভেঙে গেছে রাস্তাঘাট, ফসলি জমি ও বীজতলা। বন্যার পানিতে ভেসে যাচ্ছে গরু ছাগল, হাঁস, মুরগিসহ আরো অনেক কিছু। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হচ্ছে নি¤œ আয়ের মানুষগুলো। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে প্রায় ৭০ হাজার মানুষ।
এ দিকে কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার বন্যাকবলিত এলাকায় স্বজনদের দেখতে গিয়ে নৌকা ডুবে চার শিশুসহ পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় গুরুতর আহত হয়েছেন আরো তিনজন। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের নতুন অনন্তপুর গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনার পর থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চেষ্টা চালিয়ে স্থানীয়রা ও ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল নিহতদের লাশ উদ্ধার করে। নিহতরা হলোÑ রূপামণি (৮), হাসিবুর (৭), সুমন (৮), রুকুমণি (৭) ও রুনা বেগম (৩২)।
বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়া স্বজনদের বাড়ি দেখতে ২০ থেকে ২৫ জন নারী-পুরুষ ও শিশু নৌকায় করে যাচ্ছিল। এ সময় তীব্র স্রোতে তাদের নৌকাটি ডুবে গেলে কয়েকজন সাঁতার কেটে বেঁচে ফিরলেও পাঁচজন মারা যায়।
জামালপুর সংবাদদাতা জানান, জামালপুরে যমুনার পানি অতীতের রেকর্ড অতিক্রম করে বিপদসীমার ১৪৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলার ৫০ ইউনিয়ন ও এক পৌরসভা প্লাবিত হয়ে তিন লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। যমুনার তীরবর্তী দেওয়ানগঞ্জ ও ইসলামপুরে বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটেছে। রেল লাইন এবং দেওয়ানগঞ্জ স্টেশন ডুবে যাওয়ায় ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ রেলরুটে ইসলামপুর-দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা রেল যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ হওয়া মেলান্দহ উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়নের খসিমারা গ্রামের শাহ আলমের ছেলে জুনায়েদ (১৫) লাশ মঙ্গলবার উদ্ধার হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় পানিতে ডুবে মৃতের সংখ্যা পাঁচজনে দাঁড়াল। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। বানভাসিরা ঘরবাড়ি ছেড়ে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটে চলেছে।
বরিশাল ব্যুরো জানায়, বরিশাল নগরীর রূপাতলী হাউজিং এস্টেটে জলাবদ্ধতার কারণে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন ওই এলাকার শত শত মানুষ। তা ছাড়া ওই এলাকায় বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থাকায় দুর্ভোগে পড়েছেন এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা।
সরেজমিন রূপাতলী হাউজিং এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বরিশালের সবচেয়ে বড় এই হাউজিংয়ের প্রধান সড়কসহ অলিগলির প্রায় সব ক’টি সড়ক বর্ষার পানিতে ডুবে আছে। সচল ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টির পানি কোথাও সরতে পারছে না। বেশি বৃষ্টি হলে সড়কগুলোতে হাঁটু পরিমাণ পানি জমে যায়, যা এখন স্থায়ী জলাবদ্ধতায় রূপ নিয়েছে। ফলে দীর্ঘ দিন জমে থাকা পানি আর ড্রেনের ময়লা আবর্জনা পচে সড়কগুলোতে শ্যাওলা জমে গেছে। এসব পচা পানি মাড়িয়ে অনেকেই চর্মরোগসহ নানা ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছেন। তা ছাড়া দীর্ঘ দিন পানির নিচে তলিয়ে থাকায় বিটুমিন নষ্ট হয়ে সড়কের অবস্থাও এখন বেহাল।
রূপাতলী হাউজিং স্টেট সোসাইটির সভাপতি মো: আবুল হোসেন বলেন, জলাবদ্ধতার কারণে আমরা এক রকম গৃহবন্দী হয়ে আছি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্রছাত্রী ও মসজিদে মুসল্লির উপস্থিতি কমে গেছে। বিষয়টি আমরা এই এলাকার জনপ্রতিনিধি ও সিটি করপোরেশনকে অবহিত করেছি; কিন্তু কার্যকর কোনো ফল পাইনি।
বরিশাল সিটি করপোরেশনের ২৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শরীফ মো: আনিছুর রহমান বলেন, এখানকার ড্রেনগুলোর কোনো সংযোগস্থল না থাকায় বৃষ্টির পানি জমে পুরো এলাকা পানিতে তলিয়ে আছে। আমরা এই সঙ্কট নিরসনের লক্ষ্যে নিয়মিত কাজ করছি। ইতোমধ্যে সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের দিয়ে ড্রেনগুলোতে জমে থাকা বালু অপসারণ করা হচ্ছে। নদী বা খালের সাথে ড্রেনের সংযোগস্থল তৈরি করতে পারলে এই সঙ্কট আর থাকবে না।
সরিষাবাড়ী (জামালপুর) সংবাদদাতা জানান, জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে সর্বকালের রেকর্ড ভেঙে যমুনার পানি বিপদসীমার ১৪৫ সেন্টিমিটার উপরে অবস্থান করছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক আব্দুল মান্নান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এ উপজেলায় প্রায় ৬৯০ হেক্টর জমির ফসলসহ বীজতলা নষ্ট হয়েছে। বন্যায় প্রতিদিন নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়ে রাস্তাঘাট, ব্রিজ, কালভার্ট আক্রান্ত হচ্ছে। এ ছাড়া সরিষাবাড়ী-কাজিপুর উপজেলার প্রধান সড়কে ব্রাহ্মণজানী এলাকার ব্রিজ ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সরিষাবাড়ীতে বন্যায় অর্ধশতাধিক গ্রাম প্লাবিত ও ১৫টি বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ হয়ে পড়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার শিহাব উদ্দিন আহমদ জানান, বন্যাকবলিত মানুষের জন্য জেলা প্রশাসন থেকে ১০ মে. টন চাল ও ২০ হাজার টাকা বরাদ্দ এসেছে এবং ২৮৪ প্যাকেট শুকনো খাবার মজুদ আছে। তবে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, দুর্যোগ পরিস্থিতির তুলনায় এ ত্রাণ খুবই সামান্য।
নেত্রকোনা সংবাদদাতা জানান, নেত্রকোনায় সার্বিক বন্যাপরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটেছে। এতে জেলার বিভিন্ন উপজেলার নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়েছে। জেলার খালিয়াজুরী, মদন, আটপাড়া, বারহাট্রা, পূর্বধলা, সীমান্তবর্তী দুর্গাপুর ও কলমাকান্দা উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। জেলার কংশ নদ ও উব্দাখালীসহ বিভিন্ন নদীর পানি এখন বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
জেলা প্রশাসন থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, নেত্রকোনা জেলার বিভিন্ন উপজেলার ২১টি ইউনিয়নের ২১৭টি গ্রামের ১৭ হাজার ৬০০ পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়ায় অন্তত লক্ষাধিক নারী-পুরুষকে এখন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। নেত্রকোনার ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম বলেন, বন্যাকবলিত এলাকায় সাতটি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। সেখানে প্রায় ২০০ পরিবার ইতোমধ্যে আশ্রয় নিয়েছে। এ দিকে নেত্রকোনার সীমান্তবর্তী কলমাকান্দা উপজেলার বিশরপাশা নানীয়া গ্রামে নিখোঁজের সাত ঘণ্টা পর বন্যার পানি থেকে উজ্জ্বল মিয়া (৫) নামে এক শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
বকশীগঞ্জ (জামালপুর) সংবাদদাতা জানান, বকশীগঞ্জে বন্যার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এতে লণ্ডভণ্ড হয়ে পড়ছে গ্রামীণ জনপদ। পুরনো ব্রহ্মপুত্র নদ এবং দশানী নদীর পানি অব্যাহতভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলার চারটি ইউনিয়নের প্রায় ৪০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে প্রায় ২৫ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। বন্যার পানি বৃদ্ধির ফলে সাধুরপাড়া ইউনিয়নের গাজীর পাড়া-আলীরপাড়া গ্রামের বাঁধ সোমবার রাতে ভেঙে গেছে। উপজেলার ২০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। অনেক রাস্তাঘাট পানিতে ডুবে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।
এ দিকে ৪০টি গ্রামে বন্যায় প্লাবিত ও ২৫ হাজার মানুষ পানিবন্দী হলেও এখন পর্যন্ত ত্রাণ বিতরণ করা হয়নি। জেলা প্রশাসন থেকে বকশীগঞ্জের বন্যার্তদের জন্য ১০ মেট্রিক টন চাল গত চার দিন আগে বরাদ্দ করা হলেও এখন পর্যন্ত সেই চাল বিতরণ করা হয়নি। সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবু বলেন, তার ইউনিয়নের ১৮টি গ্রামের ১৪টিই প্লাবিত হয়েছে। অথচ মাত্র দুই মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে, যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল।
দেওয়ানগঞ্জ (জামালপুর) সংবাদদাতা জানান, দেওয়ানগঞ্জে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে বন্যা। পৌরসভাসহ আট ইউনিয়ন পানিতে নিমজ্জিত হয়ে আছে। ট্রেন ও সড়ক যোগাযোগ বন্ধ। বাউবো সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত যমুনার বাহাদুরাবাদ পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৪৫ সেমি. ওপরে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যায় প্রতিদিন নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। বন্যাদুর্গত এলাকায় শুকনা খাবার, গোখাদ্য, শিশুখাদ্য, বিশুদ্ধ পানির সঙ্কট দেখা দিয়েছে। বন্যার্তরা জানান, সরকারি ত্রাণসাহায্য খুবই অপ্রতুল বলে।
তাহিরপুর (সুনামগঞ্জ) সংবাদদাতা জানান, সুনামগঞ্জে টানা বৃষ্টিপাত আর পাহাড়ি ঢলে জেলার তাহিরপুর, জামালগঞ্জ, ধর্মপাশা, বিশ্বম্ভরপুর, ছাতক, দোয়ারা বাজারসহ বিভিন্ন উপজেলার বন্যাপ্লাবিত এলাকায় বিশুদ্ধ পানির সঙ্কট দেখা দিয়েছে। টিউবওয়েলসহ বিশুদ্ধ পানির উৎস বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ার কারণে এ সঙ্কট দেখা দিয়েছে। বন্যাকবলিত এলাকার মানুষ বাধ্য হয়ে পান করছেন হাওরের দূষিত পানি। এতে পানিবাহিত নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, জেলার ১২ হাজার নলকূপ পানির নিচে থাকায় পানি বিশুদ্ধ করার জন্য বন্যাকবলিত এলাকায় পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণের পাশাপাশি যেসব টিউবওয়েল নষ্ট হয়েছে তা দ্রুত মেরামতেরও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) সংবাদদাতা জানান, মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার রূপসপুর গ্রামে তিন দিন ধরে বন্যার পানি থাকায় হনুফা চৌধুরী (৬০) নামে এক বৃদ্ধার লাশ জানাজা নামাজ ও দাফনে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে গ্রামবাসীর। গত সোমবার সকালে বার্ধক্যজনিত কারণে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। বন্যার কারণে গতকাল মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় মৃত ব্যক্তির বাড়ির উঠানে জানাজা নামাজ শেষে লাশ চারটি নৌকায় আধা কিলোমিটার দূরের কবরস্থানে গিয়ে দাফন করা হয়।
পটিয়া-চন্দনাইশ (চট্টগ্রাম) সংবাদদাতা জানান, ৬ জুলাই থেকে এক টানা ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলায় পানিবন্দী হয়ে পড়েছিল উপজেলার দুই লাখ মানুষ। ১৫ জুলাই রাত থেকে ঢলের পানি নেমে যেতে শুরু করে। কিন্তু পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে দোহাজারি ও চন্দনাইশ পৌরসভা এবং উপজেলার আটটি ইউনিয়নের প্রায় ১১০০ কাঁচাঘর ধসে যায়।
গতকাল চন্দনাইশ উপজেলাজুড়ে ঘুরে দেখা গেছে, বন্যায় ও ঢলের পানিয়ে বাড়িঘর ধসে যাওয়া পানিতে বন্দী পরিবারগুলো মানবেতর জীবনযাপন করছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার আ ন ম বদরুদ্দোজা দুই পৌরসভা ও আট ইউনিয়নের প্রায় ১১ শ’ কাঁচাঘর ধসে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।


আরো সংবাদ



premium cement
দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষ দিশেহারা : আমিনুল লিবিয়ায় নিয়ে সালথার যুবককে নির্যাতনের ঘটনায় মামলা, গ্রেফতার ১ মনুষ্য চামড়ায় তৈরি বইয়ের মলাট সরানো হলো হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আওয়ামী লীগকে বর্জন করতে হবে : ডা: ইরান আমরা একটা পরাধীন জাতিতে পরিণত হয়েছি : মেজর হাফিজ তরুণীর লাশ উদ্ধারের পর প্রেমিকসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা ভিয়েনায় মুসলিম বিশ্বের রাষ্ট্রদূতদের ইফতারে ইসলামিক রিলিজিয়াস অথোরিটি আমন্ত্রিত এবার বাজারে এলো শাওমির তৈরি বৈদ্যুতিক গাড়ি সকল কাজের জন্য আল্লাহর কাছে জবাবদিহিতার অনুভূতি থাকতে হবে : মাওলানা হালিম বিএনপি জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য রাজনীতি করে : ড. মঈন খান সাজেকে পাহাড়ি খাদে পড়ে মাহিন্দ্রচালক নিহত

সকল