২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`


দেশের দ্বিতীয় রিফাইনারি হবে পায়রা বন্দরে

- সংগৃহীত

তেল পরিশোধনের জন্য দেশে আরো একটি রিফাইনারি নির্মাণ করা হচ্ছে। এটি হবে কম্পোজিট পেট্রোলিয়াম রিফাইনারি। স্থান হিসেবে এ জন্য বেছে নেয়া হয়েছে পটুয়াখালীর পায়রা বন্দর এলাকাকে। অধিগ্রহণ করা হবে এক হাজার একর জমি। এ জন্য চারটি মৌজার নামও চূড়ান্ত করা হয়েছে। দেশের একমাত্র তেল পরিশোধনাগার ইস্টার্ন রিফাইনারির পর এটি হবে দ্বিতীয় তেল শোধনাগার। নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য একটি পরামর্শক ফার্ম নিয়োগের প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ২৪ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) কার্যবিবরণীতে এ সম্পর্কে আরো বলা হয়েছে, দেশে পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি, অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানিপূর্বক ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেডের মাধ্যমে প্রসেসিং করে পরিশোধন ও সরকার নির্ধারিত মূল্যে বাজারজাত করা হয়। দেশে উত্তরোত্তর জ্বালানি তেলের চাহিদা বৃদ্ধির সাথে সাথে পরিশোধিত তেলের আমদানি নির্ভরতা কমানো এবং সরকারের আর্থিক সাশ্রয় বিবেচনা করে পায়রা বন্দর এলাকায় একটি কম্পোজিট পেট্রোলিয়াম রিফাইনারি স্থাপনের জন্য সরকার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।

জানা গেছে, পরিকল্পনা অনুযায়ী পায়রা বন্দর এলাকায় কম্পোজিট পেট্রোলিয়াম রিফাইনারি স্থাপনের জন্য আনুমানিক এক হাজার একর জমি অধিগ্রহণের জন্য ইতোমধ্যে চারটি মৌজায় (ধুলাসার, চরচাপালী, বোলতলী ও কাওয়ার চর) প্রায় এক হাজার একর জমি চিহ্নিত করা হয়েছে। সে অনুযায়ী দাগসূচি, মৌজা, ম্যাপ ও খতিয়ান নম্বরসহ প্রস্তাবিত জায়গায় রিফাইনারি স্থাপনের জন্য মাটি ভরাট প্রাক্কলন কাজটি সম্পূর্ণ করা হয়েছে।

সে পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক রিফাইনারি স্থাপনের ফিজিবিলিটি স্টাডি সম্পাদনের জন্য পরামর্শক নিয়োগের জন্য পিপিআর (সরকারি ক্রয় আইন) প্রতিপালন করে বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকাসহ অন্যান্য মাধ্যমে ইওআই (আগ্রহপত্র) বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। পায়রা বন্দর এলাকায় রিফাইনারি ও পেট্রোলিয়াম রিফাইনারি স্থাপনের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের লক্ষ্যে ফিজিবিলিটি কাজের জন্য ইওআইতে ১৭টি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করে। ইওআই মূল্যায়নপূর্বক গঠিত মূল্যায়ন কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে সর্বোচ্চ সাতটি প্রতিষ্ঠানকে ‘এলওআই’ প্রদান করা হয়।

কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী সর্বোচ্চ স্কোরকারী এলওআই প্রদানকৃত সাতটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে চারটি প্রতিষ্ঠানের দাখিলকৃত ‘আরইপি’ মূল্যায়নপূর্বক মূল্যায়ন কমিটি ও আরইপি ফরম্যাটের সিলেকশন ক্রাইটেরিয়া বিবেচনায় নিয়ে চূড়ান্ত কারিগরি প্রতিবেদন তৈরি করে কমিটি সুপারিশ প্রদান করে।

কারিগরি ও আর্থিক মূল্যায়ন অনুযায়ী মূল্যায়ন কমিটি দু’টি প্রতিষ্ঠানকে সর্বোচ্চ স্কোর প্রদান করে। ইতালির ‘কে টি নাইটিস টেকনোলজি কারিগরি ও আর্থিক স্কোর করে সর্বমোট ৯১ দশমিক ৩৯ নম্বর। স্পেনের ‘টেকনিকাস রুনিডাস’ কারিগরি ও আর্থিক স্কোর করে ৯২ দশমিক ২৩ নম্বর। ফলে মূল্যায়ন কমিটি সার্বিক বিবেচনায় স্পেনের প্রতিষ্ঠানকে আলোচ্য কাজটি করার জন্য পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণের সুপারিশ করে।

বিপিসির একটি সূত্র জানিয়েছে, সর্বোচ্চ স্কোর অর্জনকারী স্পেনের টেকনিকাসকে এই রিফাইনারি নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পরামর্শক ফার্ম হিসেবে নিয়োগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১৮ কোটি ১৮ লাখ টাকা। এর সাথে ১৫% ভ্যাট ও ২০% অগ্রীম আয়কর ছয় কোটি ৩৬ লাখ টাকা যোগ করে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২৪ কোটি ৫৪ লাখ ৩০ হাজার টাকা। শিগগিরই বিষয়টি অনুমোদনের জন্য সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে পাঠানো হবে।


আরো সংবাদ



premium cement