দুর্নীতির অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটরের বিচার প্রক্রিয়া শুরু
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ১৪ মে ২০২৪, ১০:২৪, আপডেট: ১৪ মে ২০২৪, ১১:৫২
দুর্নীতির অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটর রবার্ট মেনেনডেজ-এর বিচার প্রক্রিয়া সোমবার জুরি বাছাইয়ের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে।
এই মামলা ডেমক্র্যাট দলের সিনেটরের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ প্রভাবিত করতে পারে এবং আগামী বছর কোন দল যুক্তরাষ্ট্রের সংসদের উচ্চ কক্ষ সিনেট নিয়ন্ত্রণ করবে, সেটা নির্ধারণ করতেও ভূমিকা রাখতে পারে।
৭০ বছর বয়সী মেনেনডেজের বিরুদ্ধে ১৬টি ফৌজদারি অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। তার মধ্যে আছে, ঘুষ গ্রহণ, জালিয়াতি এবং বিদেশী অ্যাজেন্ট হিসেবে কাজ করা। নিউ ইয়র্কের ম্যানহাট্টান ফেডেরাল কোর্টে তার বিচার প্রক্রিয়ায় নিউ জার্সির দু’জন ব্যবসায়ীও জড়িত আছেন।
সিনেটরের স্ত্রী নাডিন মেনেনডেজের বিরুদ্ধেও চার্জ গঠন করা হয়েছে, তবে তার বিচার আলাদাভাবে হবে। অভিযুক্ত চারজনই নিজেদের নির্দোষ বলে দাবি করেছেন।
নিউ জার্সির সিনিয়র সিনেটর মেনেনডেজ টানা তিন মেয়াদ শেষে নভেম্বর মাসে নির্বাচনের মুখোমুখি হবার কথা। তিনি যদি অভিযোগ থেকে রেহাই পান তাহলে একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার আশা করছেন।
সাম্প্রতিক জনমত জরিপে দেখা গেছে, মেনেনডেজ নিউ জার্সি ভোটারদের মধ্যে মোটেই জনপ্রিয় নন। ডেমক্র্যাট দলের বেশ কয়েকজন সিনেটর, যেমন নিউ জার্সির করি বুকার, মেনেনডেজকে পদত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছেন। ১০০ আসনের সিনেটে ডেমক্র্যাট এবং তাদের সাথে মিত্র স্বতন্ত্র সদস্যরা ৫১ থেকে ৪৯ আসনে সংখ্যাগরিষ্ঠ।
র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞার দাবি
২০২০ সালের অক্টোবর মাসে সিনেটর রবার্ট মেনেনডেজের নামের সাথে বাংলাদেশের অনেকেই পরিচিত হন, যখন তিনি এবং নয়জন সিনেটর তৎকালীন ট্রাম্প প্রশাসনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পমপেও এবং ট্রেজারি সেক্রেটারি স্টিভেন মানুশিনকে একটি চিঠি লেখেন।
চিঠিতে মেনেনডেজ এবং অন্য নয়জন স্বাক্ষরকারী বাংলাদেশ পুলিশের বিশেষ বাহিনী র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ আনেন এবং র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞার দাবি জানান।
২০২০ সালের নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প পরাজিত হলে জো বাইডেন ক্ষমতায় আসেন এবং ২০২১ সালের ১০ ডিসেম্বর তার প্রশাসন র্যাব ও তার ছয় কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।
কাপড়ের ভেতর টাকা
নিউ ইয়র্কে বাদী পক্ষের আইনজীবীরা বলছেন, মেনেনডেজ নিউ জার্সিতে তার প্রভাব খাটানোর জন্য এবং মিশর আর কাতার সরকারকে সুবিধা এনে দেয়ার জন্য নগদ টাকা, সোনার বার এবং একটি দামি মার্সেডেজ বেঞ্জ গাড়ি গ্রহণ করেছিলেন।
বাদী পক্ষের আইনজীবীরা আরো বলেন, মেনেনডেজ যত নগদ ঘুষ গ্রহণ করেছিলেন, তার বেশিভাগ তার বাসায় কাপড়-চোপড়ের ভেতর পাওয়া গেছে।
মেনেনডেজের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি মিশরকে অস্ত্র কেনা এবং অন্যান্য সামরিক সাহায্য পাবার প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি একজন মিশরীয় ব্যবসায়ীকে মিশরে রফতানি করা গোশতের হালাল সার্টিফিকেট দেয়ার একচেটিয়া অধিকার অর্জনে সহায়তা করেন।
বাদী পক্ষের আইনজীবীরা আরো বলেন, মেনেনডেজ নিউ জার্সির এক নামকরা নির্মাণ ব্যবসায়ী, ফ্রেড ডাইবেসকে কাতারের বিনিয়োগ ফান্ড থেকে লাখ লাখ ডলার পেতে সহায়তা করেন।
উল্লেখ্য, ২০০৬ সালে মেনেনডেজ সিনেটর নির্বাচিত হন। তিনি প্রবল ক্ষমতাশালী সিনেট ফরেন রিলেশন্স কমিটির প্রধান ছিলেন। কিন্তু সেপ্টেম্বরে তার বিরুদ্ধে চার্জ গঠন হবার পর পদ থেকে সরে দাঁড়ান।
সূত্র : ভয়েস অব আমেরিকা
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা