৯/১১ হামলায় দুই সৌদি নাগরিকের সংশ্লিষ্টতা : এফবিআই
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ১২ সেপ্টেম্বর ২০২১, ২০:৩৫
যুক্তরাষ্ট্রের নাইন-ইলেভেন (৯/১১) সন্ত্রাসী হামলার সংশ্লিষ্ট নতুন কিছু দলিল প্রকাশ করেছে দেশটির অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থা ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই)। শনিবার প্রকাশিত এই দলিলে দুই হামলাকারীর সাথে কিছু সৌদি নাগরিকের যোগাযোগের তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
তবে ১৬ পৃষ্ঠার এই দলিলে হামলার সাথে সৌদি সরকারের সংশ্লিষ্টতার কোনো প্রমাণ দেয়া হয়নি।
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর বাণিজ্যিক বিমান ছিনতাই করে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের টুইন টাওয়ার খ্যাত ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার ও ভার্জিনিয়ায় মার্কিন প্রতিরক্ষা সদর দফতর পেন্টাগনে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় মোট দুই হাজার নয় শ' ৭৭ জন লোক প্রাণ হারান।
নিহতদের স্বজনদের অনেকেই দীর্ঘদিন ধরেই দাবি করে আসছিলেন, হামলার সাথে সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা তদন্তের গোপন থাকা দলিল প্রকাশ করার।
তাদের যুক্তি ছিল, সৌদি কর্মকর্তারা হামলা সম্পর্কে আগেই অবহিত থাকলেও তারা তা ঠেকানোর কোনো চেষ্টা করেননি।
১১ সেপ্টেম্বর হামলার সাথে যে ১৯ জন জড়িত ছিলেন, তাদের মধ্যে ১৫ জনই সৌদি নাগরিক।
ওয়াশিংটনের সৌদি দূতাবাস এসব গোপনীয় দলিল প্রকাশকে অভিনন্দন জানিয়েছে। তবে ওই বিমান ছিনতাইকারী ও সৌদি প্রশাসনের মধ্যে কোন সম্পর্কের কথা অস্বীকার করে তারা এসব দাবিকে 'মিথ্যা ও বিদ্বেষপূর্ণ' বলে আখ্যায়িত করেছে।
এফবিআইয়ের প্রকাশিত ১৬ পৃষ্ঠার দলিলটির বহু অংশই কালি দিয়ে ঢেকে দেয়া হয়েছে।
এটির ভিত্তি হচ্ছে একজন সূত্রের সাক্ষাৎকার - যার পরিচয় গোপন রাখা হয়েছে, এবং তাকে শুধু পিআইআই নামে উল্লেখ করা হয়েছে ।
এতে ৯/১১-র দু'জন বিমান ছিনতাইকারী নওয়াফ আল-হাজমি এবং খালিদ আল-মিহদারের সাথে বেশ কয়েকজন সৌদি নাগরিকের যোগাযোগের কথা বলা হয়েছে।
এই ছিনতাইকারীরা ২০০০ সালে শিক্ষার্থী পরিচয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ঢোকেন। এফবিআইয়ের দলিলের তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করা অপর এক শিক্ষার্থী ওমর আল-বাইউমির কাছ থেকে হামলাকারীরা বড় ধরনের 'লজিস্টিক' সহায়তা পান।
শিক্ষার্থী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করলেও লস অ্যাঞ্জেলসের সৌদি কনস্যুলেটে ওমর আল-বাইউমির নিয়মিত যাতায়াত ছিলো।
এফবিআইয়ের দলিলের সূত্রটি জানায়, ওই সময় সৌদি কনস্যুলেটে আল-বাইউমির মর্যাদা ছিলো অত্যন্ত উঁচু।
দলিলে বলা হয়, আল-হাজমি ও আল-মিহদারকে 'অনুবাদ, ভ্রমণ, থাকার জায়গা ও অর্থায়নের' সহায়তা দেন আল-বাইউমি।
এফবিআইয়ের দলিলে আরো বলা হয়, লস এঞ্জেলেসের কিং ফাহাদ মসজিদের একজন ইমাম ফাহাদ আল-ছুমাইরির সাথেও এই দুইজনের যোগাযোগ ছিল। সূত্রটি বর্ণনায়, এই ইমাম 'উগ্রপন্থী মতাদর্শে' বিশ্বাসী ছিলেন।
আল-বাইউমি ও আল-ছুমাইরি, দুইজনেই নাইন-ইলেভেনের হামলার কয়েক সপ্তাহ আগে যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করেন।
এর আগে 'জাতীয় নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগের' কারণ দেখিয়ে সাবেক তিন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ, বারাক ওবামা ও ডোনাল্ড ট্রাম্প এই দলিলপত্র প্রকাশে অস্বীকার করেছিলেন।
তবে জো বাইডেন গত সপ্তাহে এক আদেশে আগামী ছয় মাসের মধ্যে এগুলো পুনর্বিবেচনা ও প্রকাশ করতে বলেন।
দীর্ঘদিন ধরেই নাইন-ইলেভেনের হামলায় সৌদি কর্মকর্তাদের সংযোগের বিষয়ে জল্পনা ছিল। হামলাকারীদের মধ্যে বেশিরভাগই সৌদি নাগরিক হওয়ায় এবং হামলার জন্য দায়ী করা উগ্রবাদী সংগঠন আল-কায়েদার প্রধান ওসামা বিন লাদেন নিজে সৌদি নাগরিক হওয়ায় ধারণা করা হচ্ছিল, সৌদি প্রশাসনের ছত্রছায়াতেই এই হামলা করা হয়।
তবে ৯/১১ কমিশনের রিপোর্টে ওই ঘটনার সাথে কোনো ঊধর্বতন সৌদি কর্মকর্তা বা সৌদি সরকারের সম্পর্কের প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
সূত্র : বিবিসি
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা