২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

ধর্ষণ ও নির্যাতনের অপরাধ স্বীকার লন্ডন পুলিশ কর্মকর্তার

ধর্ষণ ও নির্যাতনের অপরাধ স্বীকার লন্ডন পুলিশ কর্মকর্তার। - ডয়চে ভেলে

দুই দশক ধরে চলা নারী নির্যাতন বিরোধী আন্দোলনের মধ্যেই লন্ডন পুলিশের এক কর্মকর্তা নিজের অপরাধ স্বীকার করলেন। ৪৮ বছর বয়সি এই পুলিশ অফিসার ৪৯টি অপরাধের দায় স্বীকার করেন। তার স্বীকার করা অপরাধের মধ্যে ২০টি ধর্ষণের ঘটনা ছাড়াও নির্যাতন ও মিথ্যা কারণ দেখিয়ে গ্রেফতারের ঘটনাও রয়েছে।

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক ঘটনাটিকে ‘ভয়াবহ’ বলে উল্লেখ করেন। লন্ডনের পুলিশ বাহিনীকে অসদাচরণের মূলোৎপাটন ও জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধার করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

দীর্ঘ দিন ধরে লন্ডন পুলিশের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে।

তদন্তকারীরা জানিয়েছে, অফিসার ডেভিড ক্যারিক তার ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে ভুক্তভোগীদের ভয় দেখিয়েছেন। তিনি পুলিশ সদস্য হওয়ায়, কেউ তার বিরুদ্ধে বলা কথা বিশ্বাস করবে না, এমন কথাও বলেছেন তিনি।

মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মার্ক রাউলি এক বিবৃতিতে জানান, ডেভিড ক্যারিক নারীদের সাথে জঘন্য দুর্ব্যবহার করেছেন। এটা খুবই দুঃখজনক।

এই ঘটনায় ব্রিটেন জুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের একজন মুখপাত্র বলেন, এমন সব ঘটনায় পুলিশের ওপর জনগণের আস্থা চুরমার হয়ে গেছে। আস্থা পুনরুদ্ধারে পুলিশ বাহিনীকে অবশ্যই এমন কর্মকর্তাদের মূলোৎপাটন করতে হবে।

একের পর এক ঘটনা
ক্যারিক ২০০১ সালে লন্ডন পুলিশে যোগ দেন। যেসব ঘটনায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা ২০০৩ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে ঘটেছে।

ভুক্তভোগীদের সাথে তিনি অনলাইন ডেটিং অ্যাপ বা বিভিন্ন সামাজিক আয়োজনে পরিচিত হতেন। সেখানে নিজের পুলিশ পরিচয় ব্যবহার করে তিনি ভুক্তভোগীদের আস্থা অর্জনের চেষ্টা করতেন।

প্রধান তদন্তকারী কর্মকর্তা যসওয়ান্ত নারওয়াল জানান, ক্যারিক ওই নারীদের যৌন নিপীড়ণ ও ধর্ষণের সুযোগ খুঁজতেন।

ক্যারিক ওই সব নারীদের সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবেও ধ্বংস করতেন। অনেককে তিনি তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে আটক করে রাখতেন। ওই নারীদের ঘুমের সময়ও তার নিজের ইচ্ছামতো নিয়ন্ত্রণ করতেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

লন্ডন পুলিশ : আমরা ব্যর্থ
লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশের নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ লন্ডনের মেয়র সাদিক খান এক টুইটে এই ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। এত দীর্ঘ সময় ধরে একজন পুলিশ কর্মকর্তা এমন অপরাধ করতে পারায় দুঃখও প্রকাশ করেছেন তিনি।

সাদিক খান বলেন, ‘এই লোকটি এত দীর্ঘ সময় ধরে এমন কাজ করতে পেরেছিল কিভাবে, এ নিয়ে লন্ডনবাসীর হতবাক হওয়ারই কথা। এত ভয়ঙ্কর উপায়ে একজন কর্মকর্তা কিভাবে তার পদের অপব্যবহার করতে পেরেছিলেন এই গুরুতর প্রশ্নেরও উত্তর দিতে হবে আমাদের।’

ভুক্তভোগীদের কাছে লন্ডন পুলিশের কমিশনার রাউলি সোমবার ক্ষমা চেয়ে বলেন, ‘পদ্ধতিগত ব্যর্থতার কারণে এতদিন ক্যারিক শাস্তি পাননি। আমরা ব্যর্থ হয়েছি, আমি এ ঘটনার জন্য দুঃখিত। তার একজন পুলিশ কর্মকর্তা হওয়া উচিত ছিল না।’

সূত্র : ডয়চে ভেলে


আরো সংবাদ



premium cement