২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

ব্রিটিশ আদালতে অ্যাসাঞ্জের জামিন আবেদন খারিজ

জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ - ছবি : সংগৃহীত

উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের জামিন আবেদন খারিজ করে দিয়েছে ব্রিটেনের একটি আদালত। বুধবার লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার ম্যাজিস্ট্রেটস কোর্টের বিচারক ভেনেসা বারাইটসার এই আদেশ দেন।

বিচারক বারাইটসার তার আদেশে বলেন, জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে জামিন দেয়া হলে পরে আদালতে আপিল শুনানির মুখোমুখি হওয়ার জন্য আত্মসমর্পণে তিনি ব্যর্থ হতে পারেন।

এদিকে জামিন শুনানির সময় অ্যাসাঞ্জের সমর্থকরা আদালতের বাইরে ভিড় জমান।

আদালতের এই আদেশের ফলে লন্ডনের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থার বেলমার্শ কারাগারেই আপাতত থাকতে হচ্ছে অ্যাসাঞ্জকে। ২০১৯ সালে লন্ডনের ইকুয়েডর দূতাবাস থেকে গ্রেফতারের পর থেকে এ কারাগারেই আছেন তিনি।

এর আগে, সোমবার লন্ডনের ওল্ড বেইলির সেন্ট্রাল ক্রিমিনাল কোর্ট অ্যাসাঞ্জকে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানোর জন্য মার্কিন সরকারের আইনজীবীদের এক আবেদন খারিজ করে দেয়।

আদালতের ওই আদেশে বলা হয়, জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে বিচারের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হলে তিনি আত্মহত্যা করতে পারেন।

২০১০ সালে উইকিলিকস ইরাক ও আফগানিস্তানে মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটের বিপুল গোপন তথ্য প্রকাশের পরিপ্রেক্ষিতে অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক ৪৯ বছর বয়সী এই সাংবাদিককে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে অভিযুক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন কৌসুলীরা অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে ১৭টি গুপ্তচরবৃত্তি ও সরকারি কম্পিউটার হ্যাকিং ষড়যন্ত্রের আরেকটি অভিযোগ এনেছেন।

সোমবারের আদালতের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে মার্কিন সরকার ব্রিটিশ আদালতের এই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করবে বলে আশা করা হচ্ছে। ব্রিটিশ সুপ্রিম কোর্টে চূড়ান্ত আদেশের আগ পর্যন্ত অ্যাসাঞ্জকে অপেক্ষা করতে হবে।

২০০৬ সালে উইকিলিকস প্রতিষ্ঠার পর বিভিন্ন দেশের সরকারের গোপন থাকা তথ্য প্রকাশের প্রচেষ্টা নেন জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। এর ধারাবাহিকতায় ২০১০ সালে উইকিলিকস ইরাক ও আফগানিস্তানে মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটের বিভিন্ন বিপুল গোপন তথ্য হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে হাতিয়ে নিয়ে তা প্রকাশ করেন। ওই সময় ইরাকে মার্কিন অ্যাপাচি হেলিকপ্টার থেকে রয়টার্সের দুই সাংবাদিকসহ ডজনখানেক নিরস্ত্র সাধারণ ইরাকিকে গুলি করে হত্যার ৩৯ মিনিটের এক ভিডিও প্রকাশের মাধ্যমে উইকিলিকস বিপুল পরিচিতি পায়।

২০১০ সালে সুইডেনের দুই নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতারের মধ্য দিয়ে অ্যাসাঞ্জ প্রথম আইনি লড়াইয়ের মুখোমুখি হন। ওই সময়ে সুইডেন ধর্ষণের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে অ্যাসাঞ্জকে পাঠানোর জন্য ব্রিটেনের কাছে আবেদন করে।

২০১২ সালে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সুইডেনে যাওয়া এড়াতে অ্যাসাঞ্জ লন্ডনস্থ ইকুয়েডরের দূতাবাসে আশ্রয় নেন। ২০১৯ সালের এপ্রিল পর্যন্ত প্রায় বন্দী অবস্থায় তিনি ওই দূতাবাসে কাটান।

২০১৯ সালে ইকুয়েডর সরকার অ্যাসাঞ্জকে দেয়া আশ্রয় প্রত্যাহার করে নিলে ব্রিটেনে দেশটির দূতাবাস থেকে তাকে গ্রেফতার করে ব্রিটিশ পুলিশ।

সূত্র : আলজাজিরা, ডয়েচ ভেলে, আনাদোলু এজেন্সি


আরো সংবাদ



premium cement