১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

তুর্কি ড্রোন যেভাবে বিধ্বস্ত ইরানি হেলিকপ্টারটি খুঁজে পেল

তুর্কি ড্রোন যেভাবে বিধ্বস্ত ইরানি হেলিকপ্টারটি খুঁজে পেল - ছবি : সংগৃহীত

ইরানি প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রইসি হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় রোববার নিহত হয়েছেন। ওই দুর্ঘটনায় ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং আরো কয়েকজন কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। পার্বত্য এলাকায় খারাপ আবহাওয়ার মধ্যে হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয়েছিল। ফলে ইরানি কর্মকর্তারা সেটি খুঁজে পাচ্ছিলেন না। এমন প্রেক্ষাপটে ইরানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে একটি তুর্কি ড্রোন এগিয়ে আসে। ওই ড্রোনের সহযোগিতাতেই দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছে ইরানি কর্মকর্তারা।

তুরস্ক আকিনসি ড্রোনের সাহায্যে ওই অসাধ্য সাধন করে। এই ড্রোন খুবই উঁচু দিয়ে উড়তে পারে, দীর্ঘ সময় আকাশে থাকতে পারে। ফলে ইরানি অনুরোধ আসার সাথে সাথেই কাজে নেমে পড়ে তুর্কি ড্রোন।

তুরস্কের পরিবহনমন্ত্রী আবদুলকাদির উরালুগ্লু দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ধারণা করেছিলেন যে ইরানি প্রেসিডেন্টকে বহনকারী হেলিকপ্টারটিতে খুব সম্ভবত ট্রান্সপোন্ডার ছিল না। ফলে হেলিক্প্টারটি থেকে কোনো সিগন্যাল আসছিল না।

উদ্ধারকাজ জটিল এবং কঠিন হতে থাকায় তুরস্কের সহায়তা কামনা করে ইরান।

তুরস্কের এক কূটনীতিক মিডল ইস্ট আইকে বলেন, 'তেহরান নাইট ভিশন সার্চ-অ্যান্ড-রেসকিউ হেলিকপ্টার এবং কারিগরি সহায়তা কামনা করে।'

সাথে সাথেই তুর্কি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ঘোষণা করে যে তারা এই কাজের জন্য আকিনসি ড্রোন বরাদ্দ করেছেন। এই ড্রোন দীর্ঘ সময় আকাশে থাকতে পারে, উঁচু দিয়ে উড়তে পারে।

তুর্কি নিরাপত্তা সূত্রগুলো জানায়, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ইরানি কর্তৃপক্ষের অনুরোধ আসার আগেই প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ওই এলাকায় আকিনসি ড্রোন মোতায়েনের প্রস্তাব দিয়েছিল।

তুর্কি ড্রোন প্রস্তুতকারক বায়কার ২০১৯ সাল থেকে আকিনসি ড্রোন নির্মাণ করছে। এই ড্রোন ৪০ হাজার ফুট ওপর দিয়ে উড়তে পারে এবং আকাশে ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় থাকতে পারে। সেইসাথে বিশাল এলাকায় নজরদারি চালাতে পারে।

তুর্কি প্রতিরক্ষা শিল্পের এক কর্মকর্তা মিডল ইস্ট আইকে বলেন, 'আকিনসি দুর্গম এলাকাতেও কাজ করতে পারে, ঘন কুয়াশেও এটি মিশন সম্পন্ন করতে পারে। এর তাপ পরিমাপ প্রযুক্তি বিশেষভাবে সক্ষম। খারাপ আবহাওয়ায় যখন অন্য সকল আকাশযান অকার্যকর হয়, তখনো এই ড্রোন উড়তে পারে।

ইরানি অনুরোধ পাওয়ার পর ড্রোনটি তুরস্কের ভ্যান নগরী থেকে রোববার দিবাগত মধ্য রাতের পর (সোমবার ভোর ০.৪৫) ইরানে পৌঁছে।

আকিনসি যখন কাজ শুরু করে, তখন তুর্কি সংবাদ সংস্থা আনাদুলু এক্সে লাইভ স্ট্রিম চাল করে দেয়। তারা ড্রোন থেকে পাওয়া ফুটেজ প্রচার করে। একপর্যায়ে ৩১ লাখ লোক তা দেখে।

রাত ২.২২-এ আসিনসি প্রথম উত্তাপ শনাক্ত করতে পারে। খরবটি সাথে সাথে ইরানি কর্মকর্তাদের জানিয়ে দেয়া হয়। উদ্ধার কর্মীদের সেখানে পৌছে সকাল ৫.৪৬-এ।

আসিনসি অপারেশনের সাথে জড়িত একটি সূত্র মিডল ইস্ট আইকে বলেন, সারা রাত ড্রোনটি দুর্ঘটনাস্থলের কাছাকাছি অবস্থান করে।

ড্রোনটির দেয়া তথ্যানুযায়ী উদ্ধারকাজ শুরু হলে সেটি ফেরার প্রস্তুতি নেয়। ভোর ৬টার দিকে সেটি তুরস্কে পৌঁছে। তার আগে ড্রোনটি তুর্কি সক্ষমতা প্রতীকীভাবে প্রকাশ করতে ভ্যান লেকের ওপর চাঁদ-তারা এঁকে দেয়।

সোমবার কয়েকজন এক্সে জানিয়েছেন যে আকিনসি ইরানে প্রবেশ করার প্রাথমিক রুটি ছিল তাবরিজ হয়ে। দৃশ্যত আমান্ড রকেট সাইট, খোই বিমানবন্দর, তাবরিজ বিমানবন্দর, ইরানি রেপিড রেসপন্স বেসসহ বিভিন্ন স্পর্শকাতর সামরিক স্থাপনার ওপর দিয়ে ড্রোনটি উড়ে যায়।

সূত্র : মিডল ইস্ট আই


আরো সংবাদ



premium cement