১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ধ্বংসস্তূপের ভেতরে 'অলৌকিক' ঘটনার আশায় তুরস্ক-সিরিয়ার মানুষ

ধ্বংসস্তূপ থেকে এখনো জীবিত মানুষ উদ্ধার করছে উদ্ধারকর্মীরা - ছবি : সংগৃহীত

বুধবার তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলের ইস্কেন্দেরুন শহরের একটি ভবনের ধ্বংসস্তূপে উদ্ধারকাজ চালানোর সময় একপর্যায়ে উপস্থিতদের নীরব থাকার অনুরোধ করেন উদ্ধারকারীরা। সেসময় ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে আসা শব্দ থেকে তারা ধারণা করেন যে সেখানে জীবিত মানুষ থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।

ওই ভবনে বসবাসকারী পরিবারের সদস্য, বন্ধু-বান্ধব ও প্রতিবেশীরা উদ্ধারকাজ দেখতে আশেপাশে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষও কিছুক্ষণের জন্য কথা বলা বন্ধ করে দেন। আশেপাশের ক্রেন ও উদ্ধারকাজে ব্যবহৃত অন্যান্য যন্ত্রপাতি বন্ধ করে দেয়া হয়।

কয়েক মুহূর্তের নীরবতার পর উদ্ধারকারী দলের কয়েকজন অ্যাম্বুলেন্স ডাকার আহ্বান জানান। তারা জানান যে ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে এক নারীকে জীবিত অবস্থায় পাওয়া গেছে।

উদ্ধারকারীদের কাছ থেকে এই ঘোষণা আসার সাথে সাথে উপস্থিত জনতা আনন্দে হর্ষধ্বনি করে ওঠে। অনেকেই চোখের পানি আটকে রাখতে পারেননি।

ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে থাকা কয়েকজন বিবিসিকে জানান, সোমবার ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত হওয়ার পর ওই ভবনের ধ্বংসস্তূপ থেকে প্রথম কোনো জীবিত ব্যক্তিকে উদ্ধার করা হল।

এই ঘটনার পর স্বজনের খোঁজ না পাওয়া অনেকের মধ্যেই নতুন করে আশার সঞ্চার হয়েছে। অনেকেই বলছেন যে তাদের পরিচিতদের জীবিত উদ্ধার করা যাবে- এমন আশা ফিরে পেয়েছেন তারা।

এক নারীর ভাষ্যে, তিনি ‘অলৌকিক’ কিছুর জন্য অপেক্ষা করছেন।

এই বিচ্ছিন্ন ঘটনাটি সেখানকার উদ্ধার কর্মীদের মধ্যে কিছুক্ষণের জন্য প্রাণসঞ্চার করে।

স্থানীয় চিকিৎসক মেহমেত রিয়াত বিবিসিকে বলেন যে সোমবার থেকে বিপুলসংখ্যক চিকিৎসক ও সেবা দানকারী উদ্ধার হওয়া মানুষের চিকিৎসায় কাজ করে যাচ্ছে।

‘আমরা এমন রোগী পেয়েছি যারা প্রায় পিষে গেছে। আমরা এই কয়দিন শুধু ভাঙা হাড়, ভাঙা ঘাড়, মাথায় আঘাত দেখেছি। আর দেখেছি অনেক অনেক মৃত্যু।’

ইস্কেন্দেরুন শহরের যেখানেই তাকান, আপনি শুধু ধ্বংসস্তূপই দেখতে পাবেন। এখানে একটি ব্যস্ত হাসপাতালসহ অনেক ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে।

সমালোচকদের অভিযোগ, উদ্ধারকাজের সহায়তার উদ্দেশে নেয়া জরুরি সেবা কার্যক্রম ধীরগতিতে চলছে এবং ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়নি রজব তৈয়ব এরদোগানের সরকার।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগান বুধবার এক বক্তব্যে বলেন, শুরুর দিকে উদ্ধার তৎপরতা কিছুটা ধীরগতির হলেও এখন পরিস্থিতি ‘নিয়ন্ত্রণে’ রয়েছে।

তবে এরদোগান এমনো বলেছেন, ‘এত বড় বড় দুর্যোগের জন্য পূর্বপ্রস্তুতি নেয়া সম্ভব নয়।’

সোমবার ভোরে তুরস্কের দক্ষিণের শহর গাজিয়ানটেপ শহরের কাছে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার এই ভূমিকম্প আঘাত হানে, যাতে এখন পর্যন্ত প্রায় ১৬ হাজার মানুষ মারা গেছে বলে জানা যাচ্ছে।

সূত্র : বিবিসি


আরো সংবাদ



premium cement